জনসচেতনা বাড়াতে বিরামহীন ছুটে চলা একজন পুলিশ কর্মকর্তা

কমসংখ্যক খারাপ মানুষ সমাজটাকে অস্থিতিশীল করে তোলে। কারন একটাই! আমরা সমাজের মানুষগুলো প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারছিনা। এটা অপ্রিয় হলেও সত্যকথা যে, আমরা প্রতিবাদ না করায় দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছি।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁও ||

চুরি, ছিনতাই, ইভটিজিং ও মাদক নির্মুলসহ সবধরণের সামাজিক অপরাধ নির্মূলে জনগণকে সচেতন করতে বিরামহীন ছুটে চলছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) তানভিরুল ইসলাম। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার দিন ধরে সদর থানার বালিয়া, বড়গাঁ, ও দেবীপুরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চললের মসজিদ, খেলার মাঠ ও হাটবাজারে জনগণের সাথে সরাসরি কথা বলেছেন তিনি।

সমাজের নানা রকম সমস্যা সমাধানের জন্য একজন ওসি জনগণের দোরগরায় পৌঁছে যাওয়ার বিষয়টি হৃদয় দিয়ে বরণ করেছেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনিরাপদ মানুষগুলো।

ওসি তানভিরুল ইসলাম জনগণকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে, সমাজে যারা খারাপ কাজের সাথে জড়িত তাদের সংখ্যা খুবই কম। সমাজে ভালো মানুষের বাস এখনো অনেক বেশি। এই কমসংখ্যক খারাপ মানুষ সমাজটাকে অস্থিতিশীল করে তোলে। কারন একটাই! আমরা সমাজের মানুষগুলো প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারছিনা। এটা অপ্রিয় হলেও সত্যকথা যে, আমরা প্রতিবাদ না করায় দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছি। স্থানীয় জনগণ যদি পুলিশকে সহযোগিতা করে তাহলে সমাজ থেকে এসব অপরাধীদের নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া সম্ভব। ওসি তাদের বলেন, আপনাদের যেকোন সমস্যা সরাসরি পুলিশকে জানান তাহলে পুলিশ আপনাদের যথাসম্ভব সবিকিছু করতে পারবে।

ওসি আরও বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ে এখন তীব্র শীত ও ঘণকুয়াশা পড়ছে। ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে আগের তুলনায় গরু চুরির দৌরাত্ম বেড়েছে। সেই সাথে নতুন করে আরও একটি সমস্যা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, সেটি হলো খাবারের সাথে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে অচেতন করে ঘর থেকে টাকা ও সোনা গহনা লুট। এর জন্য আপনাদের সজাগ থাকতে হবে। বাড়ির ভেতরে কোন রকম অপরিচিত কাউকে প্রবেশ করতে দেবেন না। সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে পুলিশে খবর দিন। এসব অপরাধ চক্রের মানুষজন আপনাদের আশে পাশে বসবাস করছে। স্থানীয়দের সহযোগিতায় আপনাদের বাসার খাবারে এসব ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দিচ্ছে।

মা-বোনদের উদ্দেশ্যে ওসি তানভিরুল ইসলাম বলেন, আপনারা যারা রাস্তায় বিভিন্ন কাজে চলাফেরা করেন তারা অবশ্যই সদর থানার নম্বর ও স্থানীয় বিট পুলিশিংয়ের নম্বর সঙ্গে রাখবেন। বখাটে ছেলেরা আপনাদের উত্যক্ত করলে চুপ থাকবেন না বরং প্রতিবাদ করবেন। পুলিশ আপনাদের সাহস হয়ে সহায় হয়ে পাশে আছে। আমি কথা দিলাম আপনাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমি সদা প্রস্তুত আছি। আপনারা ইভটিজিংয়ের শিকার হলে স্থানীয় বিট পুলিশিংয়ের সহযোগিতা নেবেন অথবা সরাসরি আমার নম্বরে যোগাযোগ করবেন।

এছাড়াও যেসব মানুষ বিপদে পড়বেন বা সমস্যার সম্মুখীন হবেন সরাসরি সদর থানায় চলে আসবেন। কাউকে তদবির করতে হবেনা, কোন মানুষ সঙ্গে আনতে হবেনা। আমি ওসি তানভিরুল ইসলাম নিজ হাতে আপনার অভিযোগ লিখে দেবো। এক কথায় আপনারা যে কোন রকম সমস্যায় পড়লে পুলিশের শরনাপন্ন হবেন পুলিশ আপনার সমস্যাটা নিজের মনে করে আপনাদের সেবা দেবে। সেই সাথে যুবকদের দৃষ্টি আকর্ষন করে ওসি বলেন, আপনারা সকলে বাবা মায়ের সেবা করবেন। বাবা মা কোন সন্তানের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আমার কাছে আনলে চুল পরিমান ছাড় দেওয়া হবেনা। ওসি সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান ও পুলিশকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।

এ সময় বালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. নুরে আলম মুক্তি, দেবীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মোয়াজ্জিন হোসেন, জেলা পরিষদ সদস্য মো. তুষারসহ স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিবর্গ ওসি তানভিরুল ইসলামকে ধন্যবাদ জানান এবং ওসওি তাদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। সেই সাথে পুলিশকে সব রকম সাহায্য করার কথা জানান স্থানীয় জনগণ।

 

সংবাদ সারাদিন