॥ সারাবেলা প্রতিনিধি, ভোলা ॥
ভোলার মনপুরা উপজেলার ডাচ্ বাংলার মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট ও ফকিরহাট বাজারের ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন মোল্লা হত্যা মামলার মূল আসামীরা জামিনে এসে তার বাবা ও ভাইদের আসামী করে স্ত্রীকে দিয়ে নতুন করে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে বলে অভিযোগ নিহতের পিতা মজিবল হক মোল্লার। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে কয়েকজন আসামীকে বাদ দিয়ে মামলা নষ্ট করার জন্য নিহতের বাবা, মামলার বাদী ও স্বাক্ষীসহ পরিবারের সদস্যদের নামে এ মামলা করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে ভোলার শহরের বাংলাস্কুল মোড়ে একটি হোটেলের হল রুমে এ সংবাদ সম্মেলন করেন নিহতের বাবা মজিবল হক মোল্লাসহ পরিবারের সদস্যরা।
লিখিত বক্তব্যে নিহতের বাবা মজিবল হক মোল্লা জানান, তার ছেলে আলাউদ্দিন মোল্লা গত বছর ৬ অক্টোবর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বাড়ি ফেরার পথে রাত ১২ টার দিকে তার নিজের ঘরের সামনে খুনিরা তাকে গলা কেটে হত্যা করে। এ ঘটনার পরে তার অন্য ছেলে জাফর বাদী হয়ে মনপুরা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলার আলোকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই মামলার আসামী মো. জয়নাল, মো. আবু কালাম, দিবাকর সরমা, আবুল কালাম (এসএ), মাকসুদ, শামিম, শাহিন ও রনিকে গ্রেফতার করে। পরে পুলিশি রিমান্ডে আসামীরা হত্যার কথা স্বীকার করে।
বর্তমানের ওই আসামীরা জামিনে বেরিয়ে এসে নিহত আলাউদ্দিনের স্ত্রী শাহানাজ আক্তার রিতু ও তার পিতা আবু কাশেমের সাথে মোটা অংকের টাকার সমোজতা করে আবুল কালাম (এসএ), মাকসুদ, শামিম, শাহিন ও রনিকে বাদ দিয়ে ও মামলাকে নষ্ট করার জন্য গত ৩ সেপ্টেম্বর নতুন করে মনপুরা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে আগের মামলার অন্য আসামী জয়নাল, আবু কালাম ও দিবাকরের সাথে আমাকে এবং আমার ছেলে জামাল, জাফর, মহসিন, মাইনুদ্দিন, সামসুদ্দিন ও মামলার প্রধান স্বাক্ষী শামিম মাস্টারকে আসামী করে মামলা দায়ের করে।
আমার ছেলে হত্যার আসামী আমি হয়েছি এটা ভাবতেই আমার নিজের জীবন নিজে শেষ করে দিতে ইচ্ছে করছে। টাকার লোভে পড়ে আমার ছেলের বউ শাহনাজ আক্তার রিতু এখন আমাদের পরিবারসহ আলাউদ্দিনের রেখে যাওয়া ৪ সন্তানের জীবন নষ্ট করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
তিনি আরো জানায়, হত্যার তিন মাস পর আলাউদ্দিনের স্ত্রী শাহনাজ আক্তার রিতু আলাউদ্দিন হত্যা মামলা থেকে আবুল কালাম (এসএ), মাকসুদ, শামিম, শাহিন ও রনিকে বাদ দেওয়ার জন্য আমাদেরকে চাপ প্রয়োগ করেন। আমরা তার প্রস্তাবে রাজি না হলে সে আমাদের উপর মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বলে, আলাউদ্দিনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ৬০-৭০ লাখ টাকা ছিল। এবং কাগজের কাটুন ভর্তি এই সব টাকা আমার আরেক ছেলে জামাল হাতিয়ে নেন বলে মিথ্যা অভিযোগ করেন। যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।
প্রকৃতপক্ষে আমার ছেলে আলাউদ্দিনের এজেন্ট ব্যাংকের দোকানের টালি খাতার হিসাব নিকাশে পাওনা টাকার পরিমান প্রায় ৯১ লক্ষ টাকা এবং দেনার পরিমান ছিলো ৮১ লক্ষ টাকা। আমার ছেলে আলাউদ্দিন মৃত্যুর পর আমার ছেলের বউ শাহানাজ আক্তার রিতু ও আমার অন্যান্য ছেলেরা মিলে মৃত আলাউদ্দিনের পাওনাদারদের নিকট থেকে টাকা উত্তোলন করে দেনাদারদেরকে প্রায় ৫২ লক্ষ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। বর্তমানে বাকী টাকার হিসাবসহ সকল টালী খাতা ও দোকানের চাবি আমার ছেলে বউ শাহানাজ আকতার রিতুর নিকট জমা আছে। এঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের সঠিক বিচার সহ ছেলে হত্যার মিথ্যা মামলা থেকে বাঁচতে প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন নিহত আলাউদ্দিনের ভাই জামাল, জাফর, মহসিন, মাইনুদ্দিন ও সামসুদ্দিন।