চলে গেলেন ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান

|| সারাবেলা প্রতিবেদন, ঢাকা ||

ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান মারা গেছেন। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের চিওড়ায় নিজের বাংলো বাড়িতে তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। এ তথ্য জানিয়েছেন ট্রান্সকম গ্রুপের পরিচালক মো. ফখরুজ্জামান।

বার্ধক্যজনিত কারণেই তিনি মারা গেছেন জানিয়ে মো. ফখরুজ্জামান বলেন, কোভিড-১৯ এ সংক্রমিত ছিলেন না লতিফুর রহমান। করোনাভাইরাস মহামারী শুরুর পর থেকেই তিনি গ্রামের বাড়িতে ছিলেন বলেন জানান ফখরুজ্জামান।

পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, লতিফুর রহমানের মরদেহ বুধবার ঢাকায় আনা হবে। গুলশানের আজাদ মসজিদে বাদ এশা তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর রাতেই তাঁকে দাফন করা হবে বনানী কবরস্থানে।

লতিফুর রহমানের জন্ম ১৯৪৫ সালের ২৮শে আগস্ট জলপাইগুড়িতে। থাকতেন ঢাকার গেন্ডারিয়ায়। সেন্ট ফ্রান্সিস স্কুলে পড়াশুনার শুরু হলেও ১৯৫৬ সালে তাকে ভর্তি করা হয় শিলংয়ের সেন্ট এডমন্ডস স্কুলে। তারপর কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে। ১৯৬৫ সালে ঢাকায় ফিরে আসেন লতিফুর রহমান। ঢাকায় এসে ১৯৬৬ সালে ডব্লিউ রহমান জুট মিলে ট্রেইনি হিসেবে কাজ শুরু করেন। দেড় বছর কাজ শেখার পর নির্বাহী হিসেবে যোগ দেন। এভাবে কাজ করেন ১৯৭১ সাল পর্যন্ত।

১৯৭২ সালে তিনি সবকিছু নতুন করে শুরু করেছিলেন প্রায় শূন্য হাতে। নিজের হাতে তৈরি বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক গ্রুপ ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান হয়ে ওঠেন।

ট্রান্সকম গ্রুপে এখন কাজ করছেন ১০ হাজারের বেশি মানুষ। ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে নীতি-নৈতিকতা, সুনাম আর সততার স্বীকৃতি হিসেবে ২০১২ সালে তিনি পান বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ড, যা ব্যবসা-বাণিজ্যের জগতে নোবেল বলে খ্যাত।

লতিফুর রহমান দৈনিক প্রথম আলোর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান মিডিয়াস্টার লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন।

শোক জানিয়েছেন যারা

লতিফুর রহমানের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি মরহুমের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।

শোক জানিয়েছেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বলেছেন, লতিফুর রহমান কেবল একজন সৎ, নিষ্ঠাবান বিশিষ্ট ব্যবসায়ীই নন, অত্যন্ত উঁচু মাপের মানুষ ছিলেন। বাংলাদেশে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও তিনি অসামান্য অবদান রাখেন। তাঁর মৃত্যুতে দেশের বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে গেল। এই ক্ষতি পূরণ হওয়ার নয়। আমীর খসরু তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন