|| সারাবেলা প্রতিনিধি, বাগেরহাট ||
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবেলায় বাগেরহাটে প্রস্তুত করা হয়েছে ৩৪৪টি আশ্রয়কেন্দ্র। সমুদ্র থেকে মাছ ধরার সব নৌকা ও ট্রলারকে নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরে আসার নির্দেশও দেয়া হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আ.ন.ম ফয়জুল হকের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি সভায় সকল প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম সম্পন্নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সভার সিদ্ধান্তমতো ইয়াসের ক্ষতি কমাতে জেলার সকল নাগরিককে সচেতন এবং দূর্যোগ মোকাবেলায় নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবকদের নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়। সভায় জেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রধানসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। সভায় বক্তব্য দেন, বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক খোন্দকার মোহাম্মাদ রিজাউল করিম, সিভিল সার্জন ডা. কেএম হুমায়ুন কবির, মোরেলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট শাহ-ই-আলম বাচ্চু, মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন, মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলেশ মজুমদার, সাংবাদিক বাবুল সরদার, আলী আকবর টুটুল প্রমুখ।
ভার্চ্যুয়াল এই সভায় বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আ.ন.ম ফয়জুল হক বলেন, উপকূলীয় জেলা হওয়ায় ঝড়-জলচ্ছাসে বাগেরহাটের মানুষ একটু বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কবানী অনুযায়ী আমরা জেনেছি ঘূর্ণিঝড়টি ২৬শে মে নাগাদ ভারতের উড়িষ্যার উপকূল এবং বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলা অতিক্রম করতে পারে। তাই আমরা সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়েছি।
জেলার ৩‘শ ৪৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করতে সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে পর্যাপ্ত পানি ও আলোর ব্যবস্থা রাখা হবে। আসন্ন এই ঝড়ের মোকাবেলা করতে ওয়ার্ড পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করে সকলকে সচেতন থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, রেড ক্রিসেন্টসহ সকল সরকারি বেসরকারি সংস্থাকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরাও কাজ করবে ইয়াস মোকাবেলায়। জেলার জনগনকে ঘরে পর্যাপ্ত পরিমান শুকনো খাবার, দিয়াস লাইট ও ঝড়ের সময় প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি রাখার অনুরোধ জানান জেলা প্রশাসক।
গভীর সমুদ্র থেকে মাছ ধরার সব নৌকা ও ট্রলারকে রোববারের ২৩শে মে’র মধ্যে ফিরে আসার নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়টি ২৬শে মে নাগাদ ভারতের উড়িষ্যার উপকূল এবং বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলাগুলো অতিক্রম করতে পারে। মধ্যম মানের ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের উপকূলে প্রবেশের সময় বাতাসের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১২০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার। তবে গতিবেগ কম হলেও ২৬শে মে ভরা পূর্ণিমার কারণে উপকূলীয় এলাকায় ৮ থেকে ১২ ফুটেরও বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। আর তা হলে উপকূলীয় এলাকার মানুষের বড় ধরণের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।