কুড়িগ্রামে হিমবাতাস আর কম তাপমাত্রায় জনজীবন বিপর্যস্ত

কনকনে শীতের হিমেল ঠান্ডায় জনজীবন কাহিল হয়ে পড়েছে। প্রায় জুুবুথুবু অবস্থা এ অঞ্চলের মানুষের। হিমেল হাওয়ায় কাবু হয়ে পড়েছে চরাঞ্চল ও নদ-নদী তীরবর্তী এলাকায় হতদরিদ্র মানুষ।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম ||

কুড়িগ্রামে গত দুই দিন ধরে চলছে মাঝারি ধরনের শৈত্য প্রবাহ। শনিবার সকাল ৯টায় জেলার কৃষি আবহাওয়া অফিস জানায়, জেলার তাপমাত্রা সর্বনিম্ন ৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এতে গত ২৪ ঘণ্টায় তাপমাত্রা ৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমেছে। অফিসটির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শুক্রবার এ তাপমাত্রা সকাল ৯টায় রেকর্ড করা হয়েছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তিনি বলেন, এরকম তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। তাপমাত্রা আরো কমতে পারে বলেও জানান তিনি।

কনকনে শীতের হিমেল ঠান্ডায় জনজীবন কাহিল হয়ে পড়েছে। প্রায় জুুবুথুবু অবস্থা এ অঞ্চলের মানুষের। হিমেল হাওয়ায় কাবু হয়ে পড়েছে চরাঞ্চল ও নদ-নদী তীরবর্তী এলাকায় হতদরিদ্র মানুষ। শ্রমজীবীদের অনেকেই কাজে যেতে না পারায় পরিবার পরিজন নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন। প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের অভাবে চরের এসব হতদরিদ্র মানুষের কষ্ট হচ্ছে বেশি। সবচেয়ে বেশি কষ্টে পড়েছে শিশু, নারী, প্রতিবন্ধী ও বয়স্করা।

ছবি: সংবাদ সারাবেলা

অন্যদিকে, শীতের কারনে বেড়েছে শীতজনিত রোগের প্রকোপ। প্রতিদিন মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন নিউমোনিয়া, কাশি, সর্দ্দি, জ্বর ও ডায়রিয়াসহ নানা শীতজনিত রোগ-ব্যাধিতে। গত দুইদিন ধরে তাপমাত্রা কমতে থাকার মধ্যে এমন শীতের বাতাসে সবকিছু থমকে গেছে। সুর্যের মুখ দেখা যায়না দিনভর। উত্তরের হিমেল হাওয়া বয়ে আসায় সন্ধ্যার পর থেকে ভোর পর্যন্ত কনকনে ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। চরাঞ্চলে বসবাসকারী অধিকাংশ মানুষ অতি দরিদ্র হওয়ায় তাদের প্রয়োজন শীতবস্ত্র।

ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার ও গঙ্গাধর নদীর তীরঘেঁষা সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী সরকার জানান, তার ইউনিয়নের ৩২টি গ্রামের মধ্যে ২০টি হচ্ছে দ্বীপচর ও নদ-নদী তীরবর্তী চরগ্রাম। তার এসব গ্রামে ১৫ হাজারের মতো মানুষের অধিকাংশই অতিদরিদ্র ও দিনমজুর। তিনি বলেন, অনেকের শীত নিবারণের বস্ত্র কেনার সামর্থ্য না থাকায় কষ্ট পাচ্ছেন। এ পর্যন্ত সরকারিভাবে মাত্র ৪০০টি কম্বল পেয়েছেন যা প্রয়োজনের তুলনায় নগন্য।

সদরের হলোখানা ইউপি সদস্য বাকিনুর ইসলাম জানান, তার ওয়ার্ডে সরকারিভাবে মাত্র ১৫টি কম্বল দেয়া হয়েছে। কম হওয়ায় তিনি এগুলো গোপনে বিতরণ করেছেন। এ পর্যন্ত সরকারিভাবে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশ শীতবস্ত্র বিতরণ করলেও বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে বিতরণের উদ্যোগ তেমন নেই। ফলে প্রয়োজনের তুলনায় শীতবস্ত্র অপর্যাপ্ত।

এব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ইতোমধ্যেই জেলার ৯ উপজেলার ৭৩টি ইউনিয়ন এবং ৩টি পৌরসভায় ৩৫ হাজার কম্বল দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ৯ উপজেলার প্রত্যেকটিতে ৭ লাখ করে ৬৩ লাখ টাকা ও ৯হাজার শুকনো খাবার প্যাকেট দেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এ জেলায় চরাঞ্চলের সংখ্যা বেশি হওয়ায় মন্ত্রণালয়ে আরো ব্যাপক চাহিদা দিয়ে বরাদ্দ চেয়েছি। দ্রুতই এগুলো চলে আসবে।

সংবাদ সারাদিন