|| সারাবেলা প্রতিনিধি, কুমিল্লা ||
রাস্তার ওপরে বাজার বসায় বেড়েছে জনদুর্ভোগ। সিটি কর্পোরেশনের অনুমোদন ছাড়াই দীর্ঘ বছর ধরে চলছে টমসন ব্রিজ কাঁচা বাজারটি। রাস্তা দখল করে গড়ে ওঠা বাজারটি কে চালায়? কারাই বা এই বাজারটি থেকে মাসোহারা তুলছে তা ওপেন সিক্রেট হলেও এর নেই কোন প্রতিকার।
সরেজমিনে নগরীর টমছমব্রীজ কাঁচা বাজারটি ঘুরে দেখা যায়, টমসনব্রিজ-কোটবাড়ি সড়ক দখল করে বাজারটি গড়ে উঠেছে। দু’পাশে কাঁচা তরকারীর ঝুড়ি নিয়ে বসে আছেন বিক্রেতারা। তারপাশেই মাছসহ-নিত্যপন্যের পসরা সাজিয়ে রেখেছেন দোকানিরা। অপরিকল্পিতভাবে বাজার বসার কারনে নিত্যদিন যানজট হচ্ছে। শহরে ঢুকতেই টমসন ব্রিজের মুখের অপরিকল্পিত এই বাজারের কারণে নিত্যদিনস হচ্ছে যানজট। ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা।
সিটি কর্পোরেশনের অনুমোদন নেই। তবুও বাজারটি বসিয়ে একটি চক্র প্রতিনিয়ত বাজারটি থেকে চাঁদাবাজি করছেন। নাম না প্রকাশ করার শর্তে বেশ কয়েকজন তরকারী বিক্রেতা জানান, প্রতিদিন এখানে প্রতিজন কাঁচা তরকারী বিক্রেতাকে ১৫০ টাকা করে দিতে হয়। এছাড়াও মাছের প্রতিটি ডালার জন্য ২৫০ টাকা দিতে হয়। এছাড়াও ফেরিওয়ালারা দেন ৫০ টাকা করে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কাঁচা বাজারটির সড়কের দুপাশে যে মুদি দোকানগুলি রয়েছে সবগুলোই সড়ক ও জনপথের জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে। তবে সড়ক ও জনপথের জায়গা দখল করে গড়ে উঠলেও নগরীর ঠাকুরপাড়া এলাকার একটি চক্র প্রতিদিন বাজারটি থেকে চাঁদাবাজি করে। সকালে-রাতে নিয়ম করে চাঁদা আদায় করা হয়। এতে করে বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
সিটি কর্পোরেশনের অনুমোদন ছাড়াই কিভাবে চলছে টমসনব্রিজ বাজারটি। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. মনিরুল হক সাক্কু বলেন, প্রতি বছরই বাজারটি ইজারা দেওয়া হয়। তবে গত ২০১৯ সালে শুধু কাঁচা বাজারটি ৭০ হাজার টাকা ইজারা দেয়া হয়েছিলো। ২০২০ সালে বাজারটি ইজারা দেয়া হয়নি। কাঁচা বাজারের পাশে বাকি দোকানপাটগুলি সড়ক জনপথের জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে। আমরা সড়ক ও জনপথ বিভাগের সমন্বয়ে অবৈধ বাজারটি উচ্ছেদ করবো।
কুমিল্লা সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. আহাদ উল্লাহ জানান, সড়কের উপরের যে কাঁচা বাজারটা বসে সেটা সড়ক ও জনপদের জায়গায়। আমরা দখলদারদের উচ্ছেদ করতে চাই।
এদিকে অবৈধ এ বাজারটি উচ্ছেদের জন্য গত নভেম্বর মাসের আইনশৃংখলা সভায় সিদ্ধান্ত হয়। চলতি ডিসেম্বর মাসে জেলা প্রশাসন ও সিটি কর্পোরেশনের যৌথ অভিযানে অবৈধ বাজারটি উচ্ছেদ করা হবে। তবে ২৬শে ডিসেম্বর পর্যন্ত শুধু কাঁচা বাজারটি উচ্ছেদ করা হয়েছে। কাঁচা উচ্ছেদ করলেও এসব ব্যবসায়ীরা পুনরায় সড়কের দু-পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসছে। এদিকে সড়ক জনপথের জায়গা দখল করে গড়ে উঠা মুদি দোকানগুলোও এখনো বহাল তবিয়তে আছে।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর বলেন, গত কয়েকদিন আগে সড়ক দখল করে বসা কাঁচা বাজারটি উচ্ছেদ করা হয়েছে। এখন যদি সড়ক ও জনপদ বিভাগের জায়গা দখলের অভিযোগ থাকে এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ যদি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা চায় তাহলে জেলা প্রশাসন সর্বাত্বক সহযোগিতা করবে।