কিন্ডারগার্টেন শিক্ষকদের কাটছে মানবেতর জীবন

|| ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি ||

করোনা ভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন ধরে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। লকডাউনে কর্মহীণ হয়ে নীরব দূর্ভিক্ষের মধ্যে জীবনযাপন করছে বেসরকারি শিক্ষকরা। এই সকল শিক্ষকদের পরিবার চলে শিক্ষার্থীদের টাকায়। সমাজে আত্মসম্মানে আঘাত হানার ভয়ে কারও কাছে সহযোগীতা চাইতেও পারছেন না তারা।

জানাগেছে, ময়মনসিংহের ভালুকায় প্রায় ৩০০ কিন্ডারগার্টেন স্কুলের অন্তত ২ হাজার ৬ শত শিক্ষক মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। গত ১৪ই মার্চ হতে সরকারী নির্দেশ মোতাবেক বেসরকারী কিন্ডারগার্টেন স্কুল গুলো বন্ধ থাকায় তাঁরা কোন বেতন ভাতা পাচ্ছে না। পৌর শহরের শিক্ষকদের বাড়ীভাড়া সহ সংসারের সকল প্রকার খরচ তাঁরা স্কুলের বেতন দিয়ে পার করে দিত।  গ্রামে যারা শিক্ষকতা করে তাদেরও একমাত্র ভরসা ওই বেতন। ধার দেনা করে এই ক’দিন তাঁরা চললেও বর্তমানে তাঁদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে।  

একাধিক শিক্ষকদের দাবি তাদেরকেও যেন সরকারী প্রণোদনার আওতায় আনা হয়। সরকার তাঁদের দিকে ফিরে তাঁকালে অন্তত খেয়ে পরে তাঁরা জীনবটা চালাতে পারতো।

উপজেলা ভায়াবহ আইডিয়াল কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষক মো. রেজাউল করিম জানান, ‘আমরা প্রায় ৩মাস যাবৎ বেতনভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছি। আমরা তো আর লাইনে দাঁড়িয়ে ত্রাণ নিতে পারি না। তাই বর্তমানে অনেকটা খেয়ে না খেয়ে জীবন কাটাচ্ছি। সরকারকে আমাদের দিকে একটু নজর দিতে অনুরোধ করছি।’

ভালুকা উপজেলা কিন্ডারগার্টেন এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শওকত আলী জানান, ‘আমাদের ভালুকায় প্রায় ৩০০শত কিন্ডারগার্টেন স্কুল আছে। তাদের মধ্যে অন্তত ২হাজার ৬শত শিক্ষক আছে। স্কুল গুলো বন্ধ থাকায় বেতর ভাতা না পাওয়ায় আমাদের জীবন চলা দূর্বিসহ হয়ে পড়ছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী ভালুকাসহ সারা দেশের  শিক্ষকদের জন্য কিছু করবেন বলে আশারাখি। আমরা উনার মুখের দিকে চেয়ে আছি।’

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. জুয়েল আশরাফ জানান, ‘তাঁদেরকে আমাদের সরকারী ভাবে কোন কিছু দেওয়ার সুযোগ নাই। তবে ইউএনও স্যারের নির্দেশ মোতাবেক আমি প্রতিষ্ঠানের মালিক ও প্রধানদের অনুরোধ করছি সাধারণ শিক্ষকদের যাতে বেতন দেওয়া হয়।’

ভালুকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ কামাল জানান, সরকারী ভাবে কোন প্রণোদনা বা কোন প্যাকেজে এখনো তাঁদের  জন্য আছে কিনা আমার জানা নাই। তবে আমি ব্যক্তিগত ভাবে উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে বলছি তিনি মনিটরিং এর মাধ্যমে উপজেলার সকল কিন্ডারগার্টেন ও কোচিং সেন্টার মালিকরা যাতে তাদের বেতন দিয়া দেন এর ব্যবস্থা নিতে। ’

সসা/এসআই/এসএম

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন