|| অনলাইন প্রতিনিধি, নীলফামারী ||
“চিকিৎসকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে আমি বেঁচে গেছি। আমার জীবন বাঁচাতে যুদ্ধ করেছেন চিকিৎসকরা। তাদের কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ।”– এভাবেই জীবন ফিরিয়ে দেওয়া চিকিৎসকদের কৃতজ্ঞতায় জড়ালেন নীলফামারীর সৈয়দপুরের রেস্তোরাঁ শ্রমিক হাফিজুল হক বিটুল। টানা বিশ দিনের চিকিৎসা শেষে বুধবার বাড়ি ফিরেছেন বিটুল। নীলফামারীর সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছিল।
করোনা থেকে বেঁচে আসা বিটুল সৈয়দপুর উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের খালিশা বকশীপাড়ার মানুষ। বাবা সাবেক ইউপি মেম্বার এছাহাক আলী। কাজ করতেন নারায়ণগঞ্জের একটি রেস্তোরাঁয়। করোনাদুর্যোগে রেস্তোরাঁ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেখানেই আটকা পড়েন বিটুল। এ অবস্থায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তিনি কখনও অ্যাম্বুলেন্স, কখনও পণ্যবাহী পিকআপে চড়ে গত ৪ঠা এপ্রিল বাড়ি ফেরেন।
বিটুল বলেন, বাড়ি ফেরার পরেই আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। ৭ই এপ্রিল আমার নমুনা সংগ্রহ করেন স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন। ৯ই এপ্রিল রংপুর মেডিক্যাল কলেজে পরীক্ষার পর আমার করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। ওইদিন রাতেই উপজেলা প্রশাসন আমাদের এলাকার ২০টি বাড়ি লকডাউন করে দেয় । আর আমাকে নেওয়া হয় সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে।
তিনি বলেন, আইসোলেশন ওয়ার্ডে চলে পরিচর্যা। হাসপাতালের ডাক্তার-নার্সরা নিজের ভাইয়ের মত সেবা দিয়েছেন। সময় মত ওষুধ দিয়েছেন। যুদ্ধ করেছেন ডাক্তাররা। আমাকে নতুন জীবন দিয়েছেন তারা। কিন্তু তারপরও হাসপাতালের জীবনটা ছিল দুর্বিষহ। সারাক্ষণ মৃত্যুকে কাছ থেকে দেখেছি। এখন আল্লাহর কাছে তাদের জন্য খাস দিলে দোয়া করছি আমি। এ সময় তিনি ইউপি চেয়ারম্যান জুয়েল চৌধুরীর প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান।
খাতামধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান জুয়েল চৌধুরী জানান, করোনা আক্রান্ত তরুণ সুস্থ হয়ে ফিরেছেন এটা আমাদের কাছে পরম পাওয়া। তার পরিবারসহ এলাকার ২০ বাড়ি এখনও লকডাউনে রয়েছে। এ সময় উপজেলা প্রশাসন থেকে তাদের খাদ্যসহায়তা দেওয়া হয়েছে। আমরা নিয়মিত তাদের খোঁজ রাখছি।
সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক আরিফুল হক সোহেল বলেন, আমরা ওই তরুণকে সেবা দিয়ে সুস্থ করার চেষ্টা করেছি। মহান আল্লাহ আমাদের সহায় ছিলেন। আমরা চিকিৎসায় থাকা অবস্থায় দুইবার তার নমুনা টেস্ট করেছি। দুইবারই নেগেটিভ এসেছে। বুধবার সকালে আমরা একজন সুস্থ মানুষ হিসেবে তাকে বাড়ি ফেরার অনুমতি দিয়েছি। এ সময় হাসপাতালের স্টাফরা তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছাও জানান। খুব ভালো লাগছে সুস্থ অবস্থায় তাকে পরিবারের হাতে তুলে দিতে পেরেছি। করোনা থেকে মুক্ত হওয়া ওই তরুণের স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তান তাকে নিতে এসেছিলো।#