|| সারাবেলা প্রতিনিধি, রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) ||
প্রতিবছরের মতো এবারো হওয়ার কথা ছিলো ঠাকুরগাঁওয়ের সীমান্তবর্তী রাণীশংকৈল-হরিপুর উপজেলার সীমান্তগ্রাম টেংরিয়া গোবিন্দপুরে দুই দেশের সীমান্তমানুষদের মিলনমেলা। সেইমতো শুক্রবার ৪ঠা ডিসেম্বর সকালে জমুরকালী (পাথর কালী) জিউ পূজা উপলক্ষে প্রতি বছরের মত এবারও পূজার আয়োজন করেছিল পূজা উদযাপন কমিটি। তবে এবার পূজায় দুই বাংলার সীমান্তের লাখো মানুষের মিলনমেলা করা সম্ভব হয়নি। কাঁটাতারের বেড়ার ফাঁকে কথা বলা আর দেখা না করার আক্ষেপ অধরাই রয়ে গেল।
বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে এবার সীমান্তের কাঁটাতারের কাছে কোন মানুষজনকে ভীড় জমাতে দেয়নি ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী।
হরিপুর উপজেলা প্রশাসনের সূত্রে জানা যায়, পাথরকালী জিউ পূজা উপলক্ষে প্রতিবছর এইদিনে ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার গোবিন্দপুরে লাখো মানুষের সমাগমে ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশ-ভারত মিলনমেলা হয়ে থাকে । ভাতুরিয়া-তাজীগাঁও সীমান্তের নীভৃত পল্লীগ্রাম টেংরিয়া গোবিন্দপুর কুলিক নদীরপাড়ে পাথরকালী পূজা উপলক্ষে বাংলাদেশ-ভারত মিলনমেলা শুরু হয় প্রতি ইংরেজি বছরের মাস ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের শুক্রবার দিনে।এই পূজা উপলক্ষে ভারত-বাংলাদেশ মিলে কাঁটাতারের কাছে সারাদিন বসে দুই সীমান্তের লাখো মানুষের মিলনমেলা। এবার করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে মিলনমেলা’র আয়োজন করা হয়নি। এতে কাঁটাতারের ওপারে থাকা আত্মীয়স্বজনরা মিলিত হতে পারনেনি।
দিনাজপুরের বীরগঞ্জ থেকে আসা থিতিলী রাণী (৪৫), হরি চাঁদ রায় (৩০) আমল (৪৭) সহ বিভিন্ন এলাকার অনেকে বলেন, সকাল থেকে আমরা ভারতীয় আত্মীয়স্বজনদের সাথে দেখা করার জন্য অপেক্ষায় রয়েছি। দুপুর গড়িয়ে বেলা শেষের দিকে তারপরেও দেথা করতে পারছিনা। করোনা ভাইরাসের কারণে সব বন্ধ।আত্মীয়রা ওপারে অপেক্ষায় রয়েছে কাঁটাতারের কাছে আসতে পারছেনা। এবার পূজা সম্পন্ন করেই বাড়ি যাব। আগামী বছর দেখা করার অপেক্ষায় রইলাম ।
পূজা কমিটির সভাপতি কালিকান্ত রায় বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে মিলনমেলা করা সম্ভব হয়নি। শুধু পূজা পালন করা হয়েছে। হরিপুর গোবিন্দপুর ও চাপাসার কর্মরত সীমান্ত বাহিনীরা জানান, করোনা ভাইরাসের কারণে এবার মিলনমেলা বন্ধ করে দিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। কাঁটাতারের কাছে কোন বাংলাদেশীরা যেন না যায় সে বিষয়ে আমাদের অনুরোধ করেছেন তারা।