|| সারাবেলা প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম ||
কুড়িগ্রামের উলিপুরে ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে এক ব্যবসায়ির দুই লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে উলিপুর উপজেলা ছাত্রলীগ এবং মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে, বৃহস্পতিবার ১১ই ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে পৌরসভার হাজীপাড়া এলাকায়। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে তিন জনকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই ব্যবসায়ী বাদী হয়ে ছয় জনের বিরুদ্ধে শুক্রবার ১২ই ফেব্রুয়ারি বিকালে থানায় মামলা করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, রংপুর কোতয়ালী থানার কামাল কাছনা গ্রামের সম্ভুনাথ বণিকের ছেলে পুরনো কাগজের ব্যবসায়ি প্রদীপ বণিক (৩৫) বৃহস্পতিবার রাতে তার একজন কর্মচারীসহ মোটরসাইকেল যোগে ব্যবসায়িক কাজে রংপুর থেকে উলিপুর উপজেলার বজরা বাজারে যাচ্ছিলেন।
পথিমধ্যে রাত ১১টার দিকে উলিপুর পৌরসভার রামধাস ধনিরাম হাজীপাড়া এলাকায় পৌঁছলে উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম নাঈম (২২) ও উপজেলা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক ওসমান গনি সরদার রতন (২৪)সহ ৬জন যুবক ওই ব্যবসায়ির মোটরসাইকেলের গতিরোধ করেন। এরপর তারা নিজেদেরকে প্রশাসন ও ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে অবৈধ মালামাল রাখার অভিযোগ তুলে ওই ব্যবসায়ি এবং কর্মচারীর শরীর তল্লাশি করেন। এ সময় ব্যবসায়িকে মারপিটের ভয় দেখিয়ে তার ব্যাগে থাকা দুই লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। ব্যবসায়ির আর্তচিৎকারে এলাকার লোকজন এগিয়ে আসলে তারা টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় স্থানীয় লোকজন তাদেরকে চিনে ফেলে।
এর কিছু সময় পর ছিনতাইকারীরা ঘটনাস্থলে ফেলে যাওয়া তাদের একটি মোটরসাইকেল নিতে আসলে এলাকাবাসী দুইজনকে আটক করে পুলিশে দেন। মটর সাইকেলটি স্থানীয় কোন এক নেতার হতে পারে বলে ধারনা করা হলেও তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে। পরে শুক্রবার বিকালে পুলিশ অভিযান চালিয়ে আরও একজনকে আটক করেন। আটকরা হলেন, পৌরসভার নারিকেলবাড়ি গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আহসান হাবিব বাবু (২৪), আব্দুল হামিদের ছেলে সাদেকুর রহমান দুলু (২৮) ও পশ্চিম কালুডাঙ্গা গ্রামের ছাবেদ আলীর ছেলে শাহিন মিয়া (২৫)।
এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত পালিয়ে যাওয়া আসামীরা হলেন, উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম নাঈম (২২) ও উপজেলা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক ওসমান গনি সরদার রতন (২৪) ও কর্মী তৌফিক আলম চৌধুরী (২২)। এ বিষয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রুবেল বলেন, ছিনতাইয়ের ঘটনা শুনেছি। অপরাধি যেই হোক তাদের শাস্তি হওয়া উচিত, ব্যক্তির দায় সংগঠন নেবে না। নাঈমের বিষয়টি তদন্ত করে সঠিক প্রমান হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ইমতিয়াজ কবীর জানান, ছিনতাইয়ের ঘটনায় ছয়জনের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা হয়েছে। গ্রেফতার তিনজনকে শুক্রবার বিকালে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।