|| সারাবেলা প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ ||
গোপালগঞ্জে আসামী ধরতে না পেরে আসামীর ছেলে ও ছেলেবৌকে বেধড়ক পিটিয়েছে পুলিশ। এসময়ে মায়ের কোলে থাকা তিনমাসের শিশুসন্তান ছিটকে পড়ে যায়। পুলিশের এমন বর্বরোচিত আচরণে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট দুই পুলিশ সদস্যকে আধাঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। শনিবার সকালে সদর উপজেলার চরমানিকদাহ গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, সকাল ৯টার দিকে সাদাপোশাকে এসআই অজিত ও এএসআই সাইদুল নামে দুই পুলিশ সদস্য চরমানিদকাহ কাজীর বাজার এলাকার কাইয়ুম মোল্লাকে ধরতে যায়। পুলিশের উপস্থিতি জানতে পেরে কাইয়ুম কৌশলে সটকে পড়েন। এতে এএসআই সাইদুল ক্ষুব্ধ হয়ে কাইয়ুমের ছেলে ইনছান মোল্লাকে (২৫) বাঁশ দিয়ে বেধড়ক পেটান। এসময় ইনছানের স্ত্রী আসমা ঠেকাতে গেলে তাকেও লাথি মেরে ফেলে দিয়ে মারপিট করেন এবং এসময়ে মায়ের কোলে থাকা শিশুসন্তানটি ছিটকে পড়ে।
এ দৃশ্য কয়েকজন মোবাইল ফোনে ধারণ করলে এএসআই সাইদুল তাদেরকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখিয়ে মোবাইল ফোন কেড়ে নেন এবং ধারণ করা সব দৃশ্য মুছে ফেলেন। এসময় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে ওই দুই পুলিশ সদস্যকে প্রায় আধঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। একপর্যায়ে তারা মোটরসাইকেল ফেলে রেখে কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে বাঁচেন। পরে থানা থেকে অন্য পুলিশ গিয়ে আহত ইনসান ও তার স্ত্রী আসমাকে গোপালগঞ্জ আড়াইশ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে এনে ভর্তি করেন বলে জানান কাইয়ুমের স্ত্রী নুপুর বেগম।
হাসপাতালে ভর্তি আহত আসমা অভিযোগ করে বলেন, সাদা পোশাকে দুইজন লোক বাড়িতে এসে পুলিশ পরিচয় দেয়। তারা আমার শ্বশুরুকে ধরতে এসেছে বলে জানায়। শ্বশুরকে ধরতে না পেরে তারা আমার স্বামীকে বাঁশ দিয়ে বেধড়ক মারপিট করে। আমি কিছু বুঝতে না পেরে ওই পুলিশের পা জড়িয়ে ধরি। তখন তিনি আমাকে লাথি মেরে ফেলে দিয়ে আমার কোলে থাকা ৩ মাসের ছেলেকেও ছুঁড়ে ফেলেন এবং আমাকেও মারপিট ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। আমি ওই পুলিশ সদস্যের বিচার চাই।
এ ব্যাপারে এএসআই সাইদুল ইসলাম মোবাইল ফোনে এই প্রতিবেদককে জানান, কাইয়ুম মোল্লা চুরি-মামলার আসামী। সোর্সের মাধ্যমে খবর পেয়ে তাকে ধরতে দ্রুত পোশাক ছাড়াই সেখানে গিয়েছিলাম। এখন আমি অসুস্থ আছি, কথা বলতে পারবো না।
এদিকে এলাকাসূত্রে প্রাপ্ত ভিডিও ক্লিপে পুলিশ সদস্যদেরকে সাদা পোশাকে দেখা গেলেও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন বলেন, চুরিসহ কয়েকটি মামলার আসামী কাইয়ুমকে ধরতে পুলিশ পোশাক পরেই গিয়েছিল। আসামী ধরার সময় তার বাড়ির লোকজন বাধা দেয় এবং এএসআই সাইদুলের হাত কামড়ে দিয়ে আসামী পালিয়ে যায়। কিন্তু এজন্য ওই বাড়ির কাউকে মারপিট করা হয়েছে বা কেউ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে, এমনটা আমার জানা নেই।