|| অনলাইন প্রতিনিধি, বরিশাল ||
ত্রাণের দাবিতে বিক্ষুব্ধ মানুষ স্থানীয় প্রশাসনের আশ্বাসে বাড়ি ফিরে যাওয়ার পাঁচদিনেও মেলেনি খাদ্যসহায়তা। তাই আবারো রাস্তায় নেমেছেন ক্ষুব্ধ অনাহারি মানুষগুলো। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ১ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম কাউনিয়ার কাজ না থাকা শতাধিক বিক্ষুব্ধ মানুষ ত্রানের দাবীতে শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত অবরোধ করে রাখে বরিশাল-লাকুটিয়া সড়ক।
তবে পাঁচদিন আগে দেওয়া ত্রাণের আশ্বাস প্রসঙ্গে এয়ারপোর্ট থানার অতিরিক্ত উপ-পুলিশ (উত্তর) কমিশনার আবুল কালাম বলেন, আমরা ত্রান দেবার কেউ না। যাতে আইন শৃঙ্খলা অবনতি না ঘটে সে কারনেই বিক্ষুব্ধ মানুষকে সান্তনা দিয়ে বলেছি, আপনারা পর্যায়ক্রমে ত্রাণ পাবেন। প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন কেউ ত্রাণ থেকে বঞ্চিত হবে না। আমরা এ ছাড়াতো কিছু বলতে পারি না। তার পরেও আমাদের পক্ষ থেকে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়েছি। আমাদের আশ্বাসে ওরা অবরোধ তুলে নেয়নি।
সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে অবশ্য ঘটনাস্থলে যান অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) আবুল কালাম আজাদ, কাউনিয়া থানা সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) আবদুল হালিম, এয়ারপোর্ট থানার ওসি জাহিদ বীন আলম সহ একদল পুলিশ সদস্য।
এদিকে করোনাদুর্গত এসব মানুষ জানান, করোনাভাইরাসের কারনে গেল ২৫শে মার্চ থেকে কাজ নেই তাদের। ছেলেপুলে নিয়ে অনেকটা অনাহারে দিন কাটছে তাদের। ত্রান দেবেন বলে জনপ্রতিনিধি ও ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কাছে জমা দেয়ার কথা বলে প্রায় এক মাস আগে তাদের ভোটার আইডি কার্ড ও মোবাইল নম্বর নিয়ে যায় স্থানীয় আওয়ামী লীগে নেতারা। কিন্তু আজো মেলেনি সেই সহায়তা।
বিক্ষুব্ধ ও দুর্গত এসব মানুষের অভিযোগ, ১ নম্বর ওয়ার্ডের অনেকেই ত্রানসহায়তা পেয়েছেন। কিন্তু পশ্চিম কাউনিয়া বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব ও মহানগর বিএনপির সভাপতি মজিবর রহমান সরোয়ারের এলাকা হওয়ায় তাদেরকে সরকারি ত্রানসহায়তা দেওয়া হচ্ছে না। স্থানীয় কাউন্সিলর আমির হোসেনের কাছে গেলে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, “আমি তোমাদের ভোটে হই নাই, তাই আমার পক্ষে কিছু করা সম্ভব না।”
নিজের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে কাউন্সিলর আমির হোসেন বিশ্বাস বলেন, “আমি ভোট না পেলে হলাম কি করে। এসব কথা কোন কাউন্সিলর বলে? আমার বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষরা এদের দিয়ে এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে। এলাকায় সাড়ে ১১ হাজার ভোটার ছাড়াও এখানে শিল্প এলাকাসহ বিভিন্ন কল-কারখানার বাইরের শ্রমিকও রয়েছে। আমাদের মেয়র ত্রান দিচ্ছে পর্যায়ক্রমে সবাই পাবে।”
তবে ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ সম্পর্কে ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সুমন বলেন, সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ করোনায় কাজ না থাকা ৪০ হাজার মানুষের জন্য ত্রান সহায়তা কার্যক্রম চালাচ্ছেন। এরইমধ্যে ২০ হাজারের বেশী মানুষকে ত্রান দেওয়া হয়েছে। ১ নম্বর ওয়ার্ডের বেশীর ভাগ বাড়িতে ত্রান পৌছলেও পশিম কাউনিয়া এলাকার মানুষ এখনও ত্রান পাননি বলে জানান সুমন। তিনি বলেন, এটা একটি চলমান কার্যক্রম। শিগগিরই তারাও ত্রান পাবে বলে তিনি জানান।
সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কাজী মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ৩০শে মার্চ থেকে গেল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সাড়ে ৩৭ হাজার পরিবারকে প্রতি রাতে ত্রান পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। ত্রান পায় নাই এমন কথা কেউ বলতে পারবে না। অনেকে দুইবারও পেয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।