|| সারাবেলা প্রতিনিধি, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) ||
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার ৮ নম্বর চাতরী ইউনিয়নের রুদ্দুরা গ্রামে ঋণের বোঝা বইতে না পেরে বিষপানে নিজেকে মৃত্যুর কাছে সঁপে দিয়েছেন কৃষক অরুণ বড়ুয়া। রোববার ১১ই এপ্রিল বিকালে উপজেলার চাতরী ইউনিয়নের রুদ্দুরা গ্রামের বড়ুয়া পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত অরুণ স্থানীয় মৃত বাবু লাল বড়ুয়ার ছেলে।
জানা যায়, অরুণ বড়ুয়া রোববার বিকাল ৪টার দিকে কৃষি জমিতে বিষ দেয়ার কথা বলে জমিতে গিয়ে বিষপান করে বাড়িতে আসেন। পরে পরিবারের লোকজনের তাকে বমি করতে দেখে সন্দেহ করেন। দ্রুত প্রথমে তাকে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরবর্তীতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সোমবার ১২ই এপ্রিল দুপুরে নিহত অরুণের লাশ নিজ বাড়িতে আনা হলে সেখানেই তার সৎকার করে তার পরিবার।
এলাকাবাসী ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, নিহত অরুণ বড়ুয়ার ৩ সন্তান। তিনি পেশায় একজন সিএনজি চালক। পরিবার পরিজন নিয়ে অভাব-অনটনের সংসার। তাই পরিবারের সচ্ছলতা ফিরাতে ২ কানি জমি বর্গা চাষ করছিলেন। চাষাবাদে বারবার ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ায় ধার-দেনায় জড়িয়ে পড়েন তিনি।পাশ্ববর্তী গিয়াস নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে ২৬ হাজার টাকা প্রতি মাসে ৭ হাজার আটশত টাকা লাভের উপর সুদী নেন অরুপ। এই টাকা সুদ-আসলে মিলে ১লাখ টাকার উপরে চলে যায়। এখন গিয়াস চক্রবৃদ্ধি হারে প্রতি হাজারে ৫০০ টাকা করে দাবী করেন।
এদিকে অরুণ গিয়াস ছাড়াও এনজিও সংস্থা ব্র্যাক, প্রত্যাশী, উদ্দীপনসহ আরো বেশ কয়েকটি এনজিও থেকে প্রায় ৬ লাখ টাকা লোন নিয়েছেন। এই টাকা দিতে না পারার কারণে প্রায় প্রতিদিন এনজিওর লোকজন তার বাড়িতে গিয়ে টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে।
এক সপ্তাহ আগে তার বাবা বাবু লাল বড়ুয়া মারা যান। সবমিলিয়ে বিরাট এক মানসিক চাপ সৃষ্টি হয় তার। আর এ চাপ সইতে না পেরে অরুণ বিষপানে আত্মহত্যা করেন বলে জানান স্বজনরা।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসএম দিদারুল ইসলাম সিকদার জানান, চাতরী ইউনিয়নের রুদুরা গ্রামে অরুণ বড়ুয়া নামে এক ব্যক্তি মানসিক চাপ সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে। তবে ঋণের ব্যাপারে কোন তথ্য আমার জানা নাই।