|| সারাবেলা প্রতিনিধি, ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) ||
জেলার ভেড়ামারা সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষক সানোয়ার হোসেন। স্থানীয় নওদাপাড়ার দশম শ্রেণীর এক ছাত্রকে তার বাসায় গিয়ে প্রাইভেট পড়াতেন। সেইসূত্রে ছাত্রের মাকে অনৈতিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন শিক্ষক সানোয়ার হোসেন। তাকে রাজী না হওয়ায় ক্ষুব্ধ শিক্ষক সানোয়ার কুপিয়ে জখম করেছে ছাত্রের মা ও বোনকে। বিচার দাবিতে ভেড়ামারা থানায় মামলা করেছেন ছাত্রের বাবা।
মামলার অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভেড়ামারা সরকারি মহিলা কলেজের ইংরেজি বিষয়ের প্রভাষক সানোয়ার হোসেন ভেড়ামারা পৌরশহরের নওদাপাড়া এলাকায় দশম শ্রেণির এক ছাত্রকে তার বাসায় গিয়ে নিয়মিত প্রাইভেট পড়াতেন। একপর্যায়ে তিনি ঐ ছাত্রের মাকে অনৈতিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন।
গত সোমবার বেলা ৩টার দিকে শিক্ষক সানোয়ার ছাত্রের বাসায় যান। এসময়ে বিষয়টি নিয়ে ছাত্রের মায়ের কথা কাটাকাটি হয় শিক্ষক সানোয়ারে। এতে ক্ষুব্ধ সানোয়ার রান্নাঘর থেকে বটি নিয়ে ছাত্রের মাকে মাথায় ও পেটে আঘাত করেন। ছাত্রের অনার্স পড়ুয়া বোনটি মাকে উদ্ধারে এগিয়ে এলে তাঁকেও কুপিয়ে জখম করে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। মা-বোনের ডাক চিৎকারে প্রতিবেশিরা এগিয়ে এসে প্রভাষক সানোয়ারকে ধরে গাছের সাথে বেঁধে রেখে পুলিশকে খবর দেয়।
থানা পুলিশের এস আই প্রকাশ রায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রভাষক সানোয়ারকে আটক করেন। দুই সন্তানের জনক প্রভাষক সানোয়ার হোসেন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার নওদা বহলবাড়িয়া গ্রামের মো. ইদবার আলীর ছেলে। তিনিও ভেড়ামারার নওদাপাড়ায় সস্ত্রীক ভাড়া থাকতেন।
মুমূর্ষু অবস্থায় মাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ছাত্রের বোনকে চিকিৎসা দেয়া হযেছে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। মায়ের শরীরে ৬২টি সেলাই দেয়া হয়েছে জানিয়েছেন তাঁর স্বামী। রাতেই ব্যাংক কর্মকর্তা স্বামী বাদী হয়ে সানোয়ার হোসেনকে আসামি করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। মামলা নং ০১। তারিখ ০৬/০৪/২০২১।
ভেড়ামারা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শাহ্জালাল জানান, ঘটনার সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ গিয়ে প্রভাষক সানোয়ারকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। ভিকটিমদের পক্ষ থেকে সানোয়ার হোসেনকে আসামি করে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং মামলা দায়ের করা হয়েছে। আইনী প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে এলাকাবাসী জানান, শিক্ষক সানোয়ারের সঙ্গে ছাত্রের মায়ের সম্পর্ক ছিল। স্ত্রী প্রতিবাদ করলে তাঁকে অত্যাচার ও মারধর করতেন সানোয়ার । এরআগেও এনিয়ে ঝামেলা হয়েছিল। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে তাঁদের সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা শুনতেন না। ভেড়ামারার স্বনামধন্য একটি কলেজের একজন শিক্ষক হয়ে এহেন জঘন্য কাজের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেছেন এলাকাবাসী।