|| সারাবেলা প্রতিনিধি, নেত্রকোনা ||
করোনাসময়ে কর্মহীন শ্রমিকদের আর্থিক প্রণোদনা দেয়া এবং বাঁশখালিতে শ্রমিক হত্যার প্রতিবাদ ও খুনিদের খুঁজে বের করে দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে নেত্রকোনায়। বুধবার ৫ই মার্চ দুপুর বারোটার দিকে পৌর শহরের ঢাকা রাজুরবাজার, শহীদমিনার এলাকায় সাধারণ শ্রমিক-ছাত্র-জনতা ঐক্যের ব্যানারে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠান করে সাধারণ শ্রমিক সাধারন শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশ থেকে নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশে করোনার প্রকোপ বাড়ায় দ্বিতীয়বারের মতো লকডাউনে গেছে সরকার। যেহেতু দক্ষিণ এশিয়ায় করোনার প্রকোপ বেড়েছে এবং তার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। করোনা মহামারী থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য লকডাউনের পাশাপাশি সাধারন শ্রমিক, মেহনতি মানুষদের সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা দেয়াও সরকারের কর্তব্য।
নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রমিক-কৃষক এবং মেহনতী মানুষের অর্থের দ্বারাই সরকার এবং রাষ্ট্র পরিচালিত হয়। সুতরাং মানুষের জীবনে বেঁচে থাকাটা যেমন প্রয়োজন ঠিক তেমনি তাদের জীবিকার প্রয়োজন। সুতরাং সকল শ্রমিক এবং কৃষক মেহনতী মানুষকে আর্থিক প্রণোদনা দিতে হবে।
বক্তারা আরো বলেন, নেত্রকোনায় দশ হাজারেরও বেশী শ্রমিক থাকলেও রাষ্ট্রের আর্থিক প্রণোদনা পেয়েছেন হাতেগোনা কিছু সংখ্যক শ্রমিক। বাকীদের ব্যাপারে এখনও কোন ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়নি দাবি করে নেতৃবৃন্দ বলেন, যে সকল শ্রমিক এখনও আর্থিক প্রণোদনা পাননি দ্রুত তাদের তালিকা করে আর্থিক প্রণোদনা নিশ্চিত করতে হবে। শুধু নেত্রকোনায় নয় সারা বাংলাদেশেই যেসব শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন তাদেরকে আর্থিক প্রণোদনা আওতায় আনতে হবে এবং সেটা এককালীন হলে চলবেনা প্রতিমাসেই সে ব্যবস্থা করতে হবে।
বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বাঁশখালিতে শ্রমিক হত্যার ঘটনারও তীব্র নিন্দা জানানো হয়।
বাংলাদেশ একটি ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে জানিয়ে বক্তারা বলেন, বর্তমান সরকার বিরোধী দলের আন্দোলন দমন করার জন্য অস্ত্র ব্যবহার করছে। যেসব শ্রমিক এই বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছে তাদের বুকে গুলি চালানো হচ্ছে। এই সরকার সন্ত্রাসী সরকার হিসেবে বিবেচিত হয়েছে সারাদেশের মানুষের কাছে।
বাঁশখালীতে শ্রমিক হত্যা একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা এবং বাংলাদেশে যে পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে তার উদাহরণ উল্লেখ করে বিক্ষোভকারীরা বলেন, যে বা যারাই এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত তাদেরকে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আইনের আওতায় আনতে হবে। যদি এই হত্যাকান্ডের ন্যায় বিচার না হয় তাহলে সকল ছাত্র শ্রমিক সহ সর্বস্তরের জনগনকে নিয়ে ন্যায়বিচার আদায় করে নেয়া হবে।
শ্রমিকনেতা মিটুন শর্মা অভির সভাপতিত্বে তাঁজিম রহমান রাকিবের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, নেত্রকোনা জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি পার্থ প্রতিম সরকার। আরো বক্তব্য রাখেন ছাত্র ইউনিয়ন ও বিভিন্ন শ্রমিকসহ শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এ সময় জেলা শহরের শ্রমিক, সাধারণ শিক্ষার্থী ও নানা শ্রেণিপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশটি ছাত্র-শ্রমিক-জনতা ঐক্য ব্যানারে অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শুরুর আগে প্রতিবাদী সংগীত পরিবেশন করেন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী।