বুয়েটের পরীক্ষায় বাতিল খুলনা-মোংলা রেলপথের ভারতীয় স্লিপার

খুলনা-মোংলা রেলপথের দ্বিতীয় প্যাকেজের জন্য ভারতের জলপাইগুঁড়ি থেকে আনা স্লিপার ব্যবহার করা যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে বাংলাদশে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েট কর্তৃপক্ষ। এদিকে ৬৫ কিলোমিটারের এই রেল লাইন প্রকল্প তিন বছরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন চলছে ১০ বছর।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, খুলনা ||

খুলনা-মোংলা রেলপথের দ্বিতীয় প্যাকেজের জন্য ভারতের জলপাইগুঁড়ি থেকে আনা স্লিপার ব্যবহার করা যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে বাংলাদশে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েট কর্তৃপক্ষ। এদিকে ৬৫ কিলোমিটারের এই রেল লাইন প্রকল্প তিন বছরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন চলছে ১০ বছর। তারপরও প্রকল্পের ২৫ শতাংশ কাজ এখনো বাকি। রেলপথ নির্মাণে প্রথম ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। এখন ব্যয় বেড়ে দাড়িয়েছে ৩ হাজার ৮০১ কোটি টাকা। ২০১০ সালে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়।

নিম্নমানের এসব স্লিপার আনা হয়েছে ভারতের জলপাইগুড়ি থেকে।

প্রকল্প পরার্মশক প্রতিষ্ঠান আইএমইডি বলছে, যেসব মালামাল পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হয়নি সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ৪০ হাজার খুলনা-মোংলা রেল লাইনের দ্বিতীয় প্যাকেজের জন্য জলপাইগুঁড়ি থেকে আনা স্লিপার ব্যবহার অযোগ্য বলে প্রতিবেদন দিয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশলী ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)। মানহীন পণ্য ব্যবহার করা হবে না বলে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সাফ জানিয়ে দিয়েছে। ফলে এ রেল লাইনের কাজ শেষ হতে আরও একটু বিলম্ব হতে পারে। ভারতের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান লারসেন এন্ড টু ব্রো-এলটি লিমিটেড এসব স্লিপারস সরবরাহ করছে।

পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আইএমইডি’র সূত্র বলেছে, যেসব মালামাল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি তার মধ্যে রয়েছে- ৪০ হাজার বিজি প্রিপেইড মনো ব্লক কনক্রিট (পিএসসি) স্লিপারস ফর ফিক্সিং ইউআইসি, ছয় সেট পিএসপি স্লিপারস ফর ওয়ান ইন টুয়েল্ভ টারমাউনটস উইথ ইউআইসি ৬০ কেজি রেলস, সিএমএস ক্রসিং এন্ড কার্ভ সুইচ, ৩৫ সেট বিজি ওয়ান ইন টুয়েল্ভ টারমাউনটস উইথ ইউআইসি ৬০ কেজি রেলস অন পিএসসি স্লিপারস উইথ সিএমএস ক্রসিং, ২৩ সেট বিজি ওয়ান ইন ৮ দশমিক ৫ টারমাউনটস উইথ ইউআইসি ৬০ কেজি রেলস অন পিএসসি স্লিপারস উইথ সিএমএস ক্রসিং।

পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আইএমইডি’র তথ্য মতে, সময় বাড়িয়েও চলতি বছরের ডিসেম্বরে প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মানহীন মালামাল সরবরাহ ও ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতার কারণে তা শেষ হতে দেরি হচ্ছে।

ছবি: সংবাদ সারাবেলা

প্রকল্প পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ভারতের জলপাইগুঁড়ি থেকে আনা মানহীন স্লিপার বুয়েট বাতিল করেছে। যাচাই-বাছাই করেই বিভিন্ন সরঞ্জাম রেল লাইনে সংযোগ করা হবে। তিনি বলেন, আইএমইডি’র পরিবেক্ষণ সমীক্ষা শেষে তথ্য দেয়া হয়েছে, ভারত থেকে আনা স্লিপার এই রেল লাইনে ব্যবহারের উপযোগী নয়।

আইএমইডি’র সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী জানান, জনগণের টাকার সর্বোচ্চ ব্যবহার ও দক্ষতার মাধ্যমে মানসম্পন্ন প্রকল্প সম্পন্ন করা হবে। তিনি বলেন, কাজের গুণগত মান ঠিক রেখে গতি বাড়িয়ে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করার ব্যবস্থা নেয়া ও চুক্তিপত্রের শর্তানুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঠিকাদারের আইপিসি পরিশোধ ও পরামর্শকদের বিলও সময়মত পরিশোধ করতে বলেছে আইএমইডি।

রেল মন্ত্রণালয় সব বিষয়ে সার্বিক মনিটরিং করছে জানিয়ে তিনি এও বলেন, অনভিজ্ঞ সাব কন্ট্রাক্টরের কারণে প্রকল্প শেষ করতে দেরি হচ্ছে।

সংবাদ সারাদিন