বললেন নতুন দুদক চেয়ারম্যান ও নতুন কমিশনার
|| সারাবেলা প্রতিবেদন ||
দেশ থেকে প্রচুর অর্থ পাচার হচ্ছে জানিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের নতুন চেয়ারম্যান ও নতুন কমিশনার বললেন, তাদের অগ্রাধিকারভিত্তিক কাজ হবে পাচার বন্ধ এবং ইতোমধ্যে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার উদ্যোগ নেওয়া। বুধবার কমিশনের নতুন চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ ও কমিশনার মো. জহুরুল হক দুজনেই দায়িত্ব গ্রহণ করেন। কাজে যোগ দিয়েই সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে একসঙ্গে সাংবাদিকদের সামনে আসেন দুজন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কমিশনার জহুরুল হক বলেন, “এটা বাস্তব, বাংলাদেশ থেকে প্রচুর টাকা পাচার হচ্ছে। দেশের জন্য এটা বড় ধরনের সমস্যা। এই কমিশন তৎপর থাকবে ভবিষ্যতে যাতে কোনো টাকা পাচার না হয়।”
![](https://i0.wp.com/sangbadsarabela.com/wp-content/uploads/2021/03/Capture-6.jpg?resize=877%2C500&ssl=1)
পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুযায়ী কাজ করার প্রত্যয়ও জানান নতুন কমিশনার জহুরুল হক।
বলেন, “অর্থ পাচারের ব্যাপারে হাই কোর্ট সিদ্ধান্ত দিচ্ছে, আমাদের কাছে লিস্ট চাচ্ছে। আমরা লিস্টগুলো কোয়ারি করবো, খুঁজব, দেখব। তারপর কোর্টকে জানাবো। কোর্ট যে অ্যাকশন নিতে বলবে, সেই অ্যাকশন নেব।”
এরআগে হাইকোর্ট সুইস ব্যাংকে কার কত টাকা আচে জানতে চেয়ে নির্দেশনা দিয়ে বলেছে, দুদককে ‘ঢোঁড়া’ হলে চলবে না, ‘জাত’ সাপ হতে হবে।
বিদেশে পাচার হওয়ার অর্থ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন বলেন, “সব কিছুর একটা পদ্ধতি থাকে। পদ্ধতি অনুযায়ী, আইন অনুযায়ী যতখানি সুযোগ রয়েছে, সেটা করার চেষ্টা করব।”
সার্বিকভাবে দেশের দুর্নীতিও কমানোর আশাবাদ জানান নতুন চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, “দুর্নীতি দমনের জন্য সুনির্দিষ্ট আইন আছে আমাদের, যা দিয়েই দুর্নীতি দমন কমিশন গঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের যতগুলো আইন আছে প্রতিটি আইনই দুর্নীতি যাতে না হয় সেটা অন্তর্ভুক্ত আছে। আমার প্রত্যাশা থাকবে সবগুলো আইনের মাধ্যমে দুর্নীতি যাতে কম হয় বা নিশ্চিহ্ন করা যায় সেই উদ্দেশ্যে থাকবে।”
দুর্নীতির বিপক্ষে সবাই সর্বাত্মক অবস্থান নেওয়ার পরও বিশ্বের সব দেশেই কম-বেশি দুর্নীতি থেকেই যায় বলেও জানান নতুন চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন। বলেন, “আমাদের লক্ষ্য থাকবে সম্পূর্ণ দুর্নীতিমুক্ত দেশ বা সমাজ গড়ার জন্য সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া। যতখানি আমরা অভীষ্ঠ লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে পারি, সেটাই আমাদেরে উদ্দেশ্যে থাকবে।”
দুদকের অনুসন্ধান ও তদন্তের কাজে দীর্ঘসূত্রতা কমাতে কোনো উদ্যোগ থাকবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমাদের চেষ্টা থাকবে কোনো কোনো অনুসন্ধান বা তদন্তে যে দীর্ঘসূত্রতা আছে, তা যতখানি সম্ভব তা কমিয়ে আনব।”
রাষ্ট্রায়াত্ব ব্যাংক বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির মামলার তদন্ত প্রসঙ্গে মঈনউদ্দীন বলেন, “আমরা দেখব কেন তা শেষ করতে পারেনি। এর বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। আমরা কারণগুলো অনুসন্ধান করে এটা যাতে আর বেশি প্রলম্বিত না হয় এর উদ্যোগ নেব।”
প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি বন্ধে আগের কমিশনের করা বিভিন্ন সুপারিশ বাস্তবায়নে সরকার যেন উদ্যাগ নেয়, সেই বিষয়ে নতুন কমিশনও কাজ করবে বলে জানান তিনি। এছাড়া অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি প্রতিরোধে কমিশন সচেষ্ট থাকবে বলে জানান মঈনউদ্দীন।
কেবল আইন দিয়ে দুর্নীতি বন্ধ করা সম্ভব নয় জানিয়ে নতুন চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতি দমনে সবার সহযোগিতা দরকার। বলেন, “আমরা কেউ চাই না যে সমাজে দুর্নীতি থাকুক। আমাদের কর্মকাণ্ডেও যেন সেটা থাকে। সবাই সবার অবস্থান থেকে দুর্নীতি দমনে আমাদেরকে সহযোগিতা করবেন। বিশেষ করে গণমাধ্যম। আপনারা সমাজের দর্পন।”
জনগন দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাদের এই অবস্থানের কতটা কমিশন মেটাতে পারবে জানতে চাইলে নতুন চেয়ারম্যান বলেন, “জনগণের আকাঙ্ক্ষা যা, জাতির আকাঙ্ক্ষা যা তা পূরণে এই কমিশনের চেষ্টা থাকবে। আমাদের উদ্দেশ্যে জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা। এসব বিষয় নিয়ে আমরা কমিশনে আলোচনা করব। আশা করি সেটাই আমরা করার চেষ্টা করব।”