|| বাসস. ঢাকা ||
করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে যেতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার রাতে এ সম্পর্কে ৩১টি নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী গুজবে কান না দেবার আহ্বানও জানিয়েছেন।
দুর্যোগ এই পরিস্থিতিতে ত্রাণ সহায়তা নিয়ে কোন ধরণের দুর্নীতি সহ্য করা হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি। পরামর্শ দিয়েছেন, ঢালাওভাবে সবাইকে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম পিপিই ব্যবহার না করতে।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বৃহস্পতিবার রাতে রাষ্ট্রিয় বার্তা সংস্থা বাসসকে জানান, “দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী ৩১টি নির্দেশনা দিয়েছেন।”
নির্দেশনাগুলো হলো :
০১. করোনাভাইরাস সম্পর্কিত যাবতীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। বাস্তবায়ন করতে হবে সচেতনতা কার্যক্রম।
০২. করোনাভাইরাসের লক্ষণ দেখা দিয়ে না লুকিয়ে দ্রæত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
০৩. যারা করোনার চিকিৎসা দিচ্ছেন সেইসব চিকিৎসক, নার্স ও চিকিৎসাকর্মীদের জন্যই পিপিই। সাধারণভাবে সবার পিপিই পরবার দরকার নেই। পিপিই ও মাস্কসহ সকল চিকিৎসা সরঞ্জাম ভাইরাসমুক্ত রাখতে সতর্ক হতে হবে। এবং ব্যবহারের পর বিশেষ করে মাস্ক ও পিপিই বিশেষ কোন স্থানে সরিয়ে রাখতে হবে। যাতে করে এসব মানুষের সংস্পর্শে না থাকে।
০৪. কোভিড-১৯ চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত সকল চিকিৎসক, নার্স, ল্যাব টেকনিশিয়ান, পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও এ্যাম্বুলেন্স চালককে বিশেষ অগ্রাধিকার দিতে হবে।
০৫. হোম কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনে যারা রয়েছেন তাদের প্রতি মানবিক আচরণ করুন।
০৬. নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মাস্ক ব্যবহার ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
০৭. নদীবেষ্টিত জেলাগুলোতে নৌ এ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখুন।
০৮. বাড়ির অন্য অসুস্থ সদস্যদের ক্ষেত্রে সঠিক স্বাস্থ’্য পরীক্ষা ও চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যেতে হবে।
০৯. সারাদেশে উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনগুলোতে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম জোরদার ও নিয়মিত করতে হবে। সেইসঙ্গে পারিবারিকভাবেও পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।
১০. দেশ ও দেশের মানুষের এই দুর্যোগ সময়ে আইন শৃংখলা রক্ষায় আরো বেশী মনোযোগি হতে হবে। একইসঙ্গে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, আইন শৃংখলা রক্ষা সংস্থা, প্রশাসন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগসহ প্রজাতন্ত্রের সকল কর্মচারীকে সঠিক সমন্বয় করে কাজ চালিয়ে যেতে হবে।
১১. ত্রাণ কার্যক্রমে কোন প্রকার অনিয়ম ও দুর্নীতি সহ্য করা হবে না।
১২. দিনমুজর, শ্রমিক ও কৃষকরা যাতে অনাহারে না পড়েন সেজন্য তাদের সহায়তা দিয়ে যেতে হবে। তালিকা করতে হবে সকল কর্মজীবী মানুষের।
১৩. সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে।
১৪. দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম যাতে স্থবির না হয়ে পড়ে সেজন্য সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে।
১৫. খাদ্য উৎপাদন কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। উৎপাদন করতে হবে বিভিন্ন ধরণের শস্য। একইসঙ্গে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে যা কিছু দরকার সবটা করতে হবে। কোন জমি পতিত রাখা যাবে না।
১৬. সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক রাখতে হবে।
১৭. জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে যেতে হবে। নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে নিত্যপণ্যের দাম।
১৮. জনসমাগম হয় বাংলা নববর্ষের এমন কোন অনুষ্ঠান করা যাবে না। এসময়ে বাড়িতে থেকেই ডিজিটালি যতটা সম্ভব নববর্ষের অনুষ্ঠান করতে হবে।
১৯. স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সমাজের সকল স্তরের মানুষকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। প্রশাসনকে কাজ করতে হবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে।
২০. ত্রাণ ও স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমে সরকারের পাশাপাশি বিত্তবান মানুষ ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। এসব কাজে অবশ্যই জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় বজায় রাখতে হবে।
২১. জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসন ওয়ার্ডভিত্তিক তালিকা তৈরি করে দু:স্থ মানুষের মাঝে খাবার বিতরন করবে।
২২. কৃষি শ্রমিক, দিনমজুর, রিকশা ও ভ্যানচালক, পরিবহন শ্রমিক, ভিক্ষুক, পথশিশু, বিধাব ও স্বামী পরিত্যক্তা এবং তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে। দুর্যোগের এই সময়ে তারা প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী পাচ্ছে কি না তা নিশ্চিত করতে হবে।
২৩. বয়স্ক মানুষ ও শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা রাখতে হবে।
২৪. দু:স্থ মানুষদের পরিসেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রজাতন্ত্রের সকল কর্মচারী ও স্বেচ্ছাসেবি সংগঠনগুলোকে তাৎক্ষনিক নির্দেশ বা এসওডি অনুসরণ করতে হবে।
২৫. নিত্যপন্যের বাজার ব্যবস্থাপনা, সরবরাহ ও উৎপাদন কার্যক্রম তদারকিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
২৬. খাদ্যশস্যসহ প্রয়োজনীয় নিত্যপন্যের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। তাই প্রয়োজনের বেশী পন্য কিনবেন না।
২৭. কৃষকেরা তাদের স্বাভাবিক কৃষি কার্যক্রম অব্যাহত রাখবেন। এক্ষেত্রে সরকারি সুবিধা অব্যাহত থাকবে।
২৮. সকল শিল্পমালিক, ব্যবসায়ি ও ব্যক্তি পর্যায়ের উদ্যোক্তাগন তাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়ি পরিচ্ছন্ন রাখবেন।
২৯. কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা ও তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই শিল্পমালিকরা তাদের কারখানা চালু রাখবেন।
৩০. জনসচেতনতা বাড়াতে গনমাধ্যমকর্মীরা সঠিক ভুমিকা পালন করবেন। গুজব ও মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর মাধ্যমে মানুষকে যেন কেউ বিভ্রান্ত করতে না পারে সেদিকে কড়া নজর রাখতে হবে। এবং
৩১. গুজব বন্ধ করতে হবে। ইতোমধ্যেই অনেক ধরণের গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এতে কান দেবেন না এবং আতঙ্কিত হবেন না।
প্রচ্ছদ » শীর্ষ সংবাদ » করোনা পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর ৩১ নির্দেশনা
এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ
ইভ্যালিতে যমুনা গ্রুপের বিনিয়োগসিদ্ধান্ত নিরীক্ষার পর
আগস্ট ২৭, ২০২১
কাবুলে আইএসের বোমায় নিহতের সংখ্যা এ পর্যন্ত ৯০ জন
আগস্ট ২৭, ২০২১
এই বিভাগের সর্বশেষ
দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জন
ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৩
ইভ্যালিতে যমুনা গ্রুপের বিনিয়োগসিদ্ধান্ত নিরীক্ষার পর
আগস্ট ২৭, ২০২১