|| সারাবেলা প্রতিবেদন ||
সীমান্তহত্যাকে দুঃখজনক জানিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর বলেছেন, ‘নো ক্রাইম নো ডেথ। বৃহস্পতিবার ঢাকা সফরে এসে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
জয়শঙ্কর বলেন, ‘আমাদের যৌথ উদ্দেশ্য সীমান্তে কোনো অপরাধ, মৃত্যু না হওয়া। আমি নিশ্চিত যে, আমরা যদি এটি সঠিকভাবে অর্জন করতে পারি তবে কোনো মৃত্যু হবে না। আমরা একসাথে এই সমস্যাটিকে কার্যকরভাবে সমাধান করতে পারি।’
জয়শঙ্কর বলেন, দুই দেশ সমস্যাটি সম্পর্কে জানে এবং সমস্যাটি অপরাধের কারণে হয়। বৈঠকে দু’দেশই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছে।

পানিবণ্টন ইস্যুতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতের অবস্থান সম্পর্কে সকলেই জানেন এবং সেই অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। এই মাসে বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে দুই দেশ সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার উপায় নিয়ে আলোচনা করছে।
সকাল সাড়ে ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় শুরু হওয়া বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর নিজ নিজ দেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন।
একদিনের এই সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও বৈঠক করবেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এছাড়া বিকাল ৫টায় ভারত ভবনে (পুরনো হাই কমিশন ভবন) একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ঢাকা ত্যাগ করবেন তিনি।
প্রসঙ্গত গত বছরের ১৭ই ডিসেম্বর দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর ভার্চ্যুয়াল বৈঠকের পর জয়শঙ্কর ঢাকা সফর করছেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে নরেন্দ্র মোদির ২৬-২৭শে মার্চ ঢাকায় সফর করার কথা রয়েছে।
এর আগে সকালে জয়শঙ্কর ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ ফ্লাইটে দিল্লি থেকে ঢাকায় পৌঁছান। ঢাকায় বিএএফ বঙ্গবন্ধু ঘাঁটিতে তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফর চূড়ান্ত করতে ঢাকায় এসেছেন প্রতিবেশী দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।



এর আগে বুধবার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের বিভিন্ন দিক নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গ কথা বলেন । তিনি বলেন, “সামনে আমাদের মুজিববর্ষের চলমান কর্মসূচির অংশ হিসাবে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১৭ই মার্চ থেকে ২৬শে মার্চ বেশ কিছু অনুষ্ঠান সাজানো হচ্ছে। সেটা সামনে রেখে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর একটি সফর হওয়ার কথা রয়েছে। সব সফরকে ঘিরে আমাদের প্রত্যাশা থাকে, অন্ততপক্ষে জটিল বিষয়গুলোকে আলোচনা করে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপার থাকে, এগুলো নিয়ে আলাপ করার জন্য ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করবেন।”
মোদীর সফর ঘিরে যোগাযোগ বা ‘কানেক্টিভিটির’ ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়টি জোর পেয়েছে মন্তব্য করে শাহরিয়ার আলম বলেন, “যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে। নতুন একটি ট্রেন সার্ভিস চালু হওয়ার কথা রয়েছে। সেটি আশা করি, আমরা চালু করতে পারব খুব শিগগিরই। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে চূড়ান্ত ঘোষণা দেবে।”
পাশাপাশি আঞ্চলিক সহযোগিতার উল্লেখযোগ্য ঘটনা নিয়েও আলোচনা হবে জানিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, “কোভিড-১৯ কেবল একটি স্বাস্থ্যগত জরুরি অবস্থা নয়, এটি অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থাও তৈরি করেছে। বিশেষ করে বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রগুলো একটি বড় অর্থনৈতিক সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এটার একটি বড় প্রভাব কিন্তু আমাদের মত সরবরাহকারী দেশগুলির উপর পড়তে পারে।