সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়লেও কারখানা পরিবহন খুলবে পর্যায়ক্রমে

|| সারাবেলা প্রতিবেদন, ঢাকা ||

শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করে ওষুধ ও রপ্তানিমুখী শিল্পের কারখানা চালু রাখার সুযোগ রেখে আগামি ৫ই মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে সারদেশে সাধারণ ছুটির মেয়াদ। তবে পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে শিল্প-কারখানা, কৃষি এবং উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো এবং পরিবহন খুলে দেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রের জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের জারি করা এক আদেশে এসব নির্দেশনা উল্লেখ করে গেল ২৬শে মার্চ থেকে ঘোষিত সাধারণ ছুটির মেয়াদ আগামী ৫ই মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

এরআগে গেল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য নির্দেশিকা কঠোরভাবে মেনে শ্রমিকদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে পারলে রোজার মাসের মধ্যে সীমিত আকারে কিছু গার্মেন্টস ও শিল্প কারখানা চালু করা যেতে পারে। তিনি বলেন, “সামনে রোজা, আমরা সবাইকে একেবারে বন্ধ করে রাখতে পারব না। আমাদের কিছু কিছু জায়গা আস্তে আস্তে উন্মুক্ত করতেই হবে।”

সাধারণ ছুটি চলাকালে কী করা যাবে আর কী করা যাবে না তাও জানানো হয়েছে প্রজ্ঞাপনে

জরুরি পরিসেবা যেমন- বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের (স্থলবন্দর, নদীবন্দর ও সমুদ্রবন্দর) কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা এবং এ সংশ্লিষ্ট সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীরা এ ছুটির বাইরে থাকবেন।

সড়ক ও নৌপথে সকল প্রকার পণ্য পরিবহনের কাজে নিয়োজিত ট্রাক, লরী, কার্গো ভেসেল চলাচল অব্যাহত থাকবে।

কৃষিপণ্য, সার, কীটনাশক, খাদ্য, শিল্প পণ্য, রাষ্ট্রীয় প্রকল্পের মালামাল, কাঁচা বাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এসবের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের ক্ষেত্রে এ ছুটি প্রযোজ্য হবে না।

চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও কর্মী এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বহনকারী যানবাহন ও কর্মী, গণমাধ্যমে (ইলেকট্রনিক ও প্রিন্টি মিডিয়া) নিয়োজিত কর্মীরা এ ছুটির আওতার বাইরে থাকবেন।

ঔষধশিল্প, উপৎপাদন ও রপ্তানিমুখী শিল্পসহ সকল কলকারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করে চালু রাখতে পারবে।

পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তীতে শিল্প-কারখানা, কৃষি এবং উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থার সাথে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলো ও পরিবহন পর্যায়ক্রমে উন্মুক্ত করা হবে।

ছুটির মধ্যে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা যাবে না।

জারুরি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত অফিসগুলো খোলা থাকবে।

জনগণের প্রয়োজন বিবেচনায় বাংলাদেশ ব্যাংক সীমিত আকারে ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু রাখার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।

দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষাপটে সরকার প্রথম দফায় ২৬শে মার্চ থেকে ৪ঠা এপ্রিল পর্যন্ত সব অফিস আদালত বন্ধ ঘোষণা করে। সেই সঙ্গে সারা দেশে সব ধরনের যানবাহন চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এরপর সেই ছুটির মেয়াদ কয়েক দফায় বাড়িয়ে ২৫শে এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়। নতুন করে ২৬শে এপ্রিল থেকে ৫ই পর্যন্ত ছুটির মেয়াদ বাড়ানো হল।

এরআগে অবশ্য গত ১০ই এপ্রিলের আদেশে সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ঘর থেকে বের হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। পাশাপাশি সবাইকে যার যার বাড়িতে থাকার নির্দেশ দেওয়া হলে বিশ্বের আরও অনেক দেশের মত বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষও ঘরবন্দি দশার মধ্যে পড়ে।

দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার ১৭ই মার্চ থেকেই বন্ধ রাখা হয়েছে। ১লা এপ্রিল থেকে নির্ধারিত এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাও স্থগিত হয়ে গেছে করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে। নতুন করে সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়ানোর পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমুহও আগামী ৫ই মে পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন