|| সারাবেলা প্রতিবেদন, ঢাকা ||
সবুজ রঙ ছাড়া আর কোন রঙের সিএনজিচালিত অটোরিকশা ঢাকা মহানগর এলাকায় চলতে পারবে না। এতোদিন রাজধানীতে ভাড়ায় চালিত সবুজ রঙের পাশাপাশি রূপালি রঙের প্রাইভেট লেখা অটোরিকশা চলে আসছিল।
মঙ্গলবার হাইকোর্টে এ সম্পর্কিত একটি রুল খারিজ হয়ে যাওয়ায় ছাই বা রুপালি রংয়ের ‘প্রাইভেট’ লেখা ঢাকা মেট্রো-দ সিরিজের কোন সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করতে পারবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।
বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের বেঞ্চ মঙ্গলবার এসম্পর্কিত একটি রুল খারিজ করে রায় দেন। ২০১৬ সালে প্রাইভেট সিএনজি অটোরিকশা ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ মো. দেলোয়ার হোসেন এই রিট আবেদন করেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে রুলের শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান ও মনিরুজ্জামান আসাদ। অন্যদিকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) হয়ে শুনানি করেন আইনজীবী রাফিউল ইসলাম। সড়ক ও যোগাযোগ সচিবের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মাসুদ হাসান চৌধুরী পরাগ।
বিআটিএ’র আইনজীবী রাফিউল ইসলাম বলেন, “আদালতের নির্দেশে এতদিন বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে যেসব সিএনজি ঢাকা মহানগর এলাকায় চলছিল, রুল খারিজ হওয়ায় সে নির্দেশনাটিও বাতিল হয়ে গেছে। ফলে ‘প্রাইভেট’ লেখা সিএনজি চলাচল করতে পারবে না।”
আবেদনকারীর আইনজীবী মনিরুজ্জামান আসাদ বলেন, “সরকার যে নীতিমালা করেছে, সেটিতে আদালত হস্তক্ষেপ করতে চাইছে না। সরকার চাইলে ঢাকা মহানগর এলাকায় আবারও প্রাইভেট সিএনজি চলাচলের অনুমতি দিতে পারে, এই বলে রুলটি খারিজ করে দিয়েছেন। এই আদেশের ফলে নিবন্ধিত অথচ ‘প্রাইভেট’ লেখা সিএনজিগুলো ঢাকা মহানগর এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চলাচল করতে পারবে না।”
তবে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবার কথা জানিয়েছেন রিট আবেদনকারী দেলোয়ার হোসেন।
প্রসঙ্গত পরিবেশ দূষণের কারণে ঢাকা শহরে ‘টু স্ট্রোক’র বেবিট্যাক্সি নিষিদ্ধ করার পর ২০০১ সালে বাণিজ্যিকভাবে চলাচলের জন্য ‘ফোর স্ট্রোক’ থ্রি হুইলার অটোরিকশা (সিএনজি) চলাচলের অনুমতি দেয় সরকার। তখন ভারতের বাজাজ কোম্পানির ১৩ হাজার অটোরিকশা (সিএনজি) আমদানি করে উত্তরা মটরসসহ আরও বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। সেই ১৩ হাজার অটোরিকশাই (ঢাকা মেট্রো-থ) নিবন্ধন দেয় বিআরটিএ।
তার আগে ৩৫ হাজার বেবিট্যাক্সি চলাচল করত ঢাকা শহরে। ২০০৯ সাল থেকে ২০১২ নাগাদ বিআরটিএ আরও ৩ হাজার ৯৫৭টি ‘ফোর স্ট্রোক’ অটোরিকশা ব্যক্তি মালিকানায় চলাচলের জন্য নিবন্ধন দেয়।
যদিও সিএনজি/পেট্রোলচালিত ফোর স্ট্রোক থ্রি হুইলার্স সার্ভিস নীতিমালা-২০০৭ অনুযায়ী ঢাকা মহানগর এলাকায় ‘ফোর স্ট্রোক’ থ্রি হুইলার (ঢাকা-দ) ব্যক্তি মালিকানায় চলাচলের সুযোগ নেই।ব্যক্তি মালিকানায় নিবন্ধন পাওয়া অটোরিকশার মালিকরা পরে বাণিজ্যিক নিবন্ধন পেতে বিআরটিএর কাছে দাবি জানায়। কিন্তু সরকারের সাড়া না পেয়ে ২০১৬ সালে প্রাইভেট সিএনজি অটোরিকশা ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ হাইকোর্টে এই রিট আবেদন করেন।
তার প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ২৭শে জুলাই রুলসহ আদেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। তাতে ওই অটোরিকশাগুলোকে রাস্তায় চলাচলের অনুমতি দেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি অনুমতি না দেওয়া অবধি ব্যক্তিগত অটোরিকশাগুলোকে ঢাকা মহানগরে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে চলাচলে বাধা না নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।