|| সারাবেলা প্রতিনিধি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ||
চাকরির দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে বিক্ষুব্ধ অবস্থান নিয়েছে সরকারি ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। এরআগে সোমবার রাতে তারা উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের বাসভবন অবরুদ্ধ করে তালা লাগিয়ে দেয়। এসময়ে প্রায় ত্রিশজন চাকরি প্রত্যাশিও এই কর্মসূচিতে অংশ নেন।
মঙ্গলবার ১২ই জানুয়ারি সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইটি প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে দেয় ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক নেতাকর্মীরা। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক অবরুদ্ধ করে রাখে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এর ফলে বন্ধ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম। প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান সংবাদ সারাবেলাকে জানান, বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধানের জন্যে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনার বসেছি।
![](https://i0.wp.com/sangbadsarabela.com/wp-content/uploads/2021/01/Capture-০১-300x169.jpg?resize=1200%2C676&ssl=1)
এর আগে গত সোমবার রাত ৯টায় উপাচার্য ভবনে তালা লাগিয়ে দেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানসহ দুই উপ-উপাচার্য ও প্রক্টর ভবনটিতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। প্রায় ১২ঘণ্টা পর মঙ্গলবার সকাল ৮টায় উপাচার্য ভবনের তালা খুলে দেয় বিক্ষুব্ধরা। অবরোধের বিষয়ে সোমবার রাতে রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া সংবাদ সারাবেলাকে বলেন, আমরা জানতে পেরেছি সব ধরনের নিয়োগ বাতিল রাখার নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও আজ (সোমবার) এডহকে একজনের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে “ক্ল্যারিফাই” হওয়ার জন্যেই নেতা-কর্মীরা গিয়েছিলেন।’ তবে সেখানে উপস্থিত প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চাকরির দাবিতেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপাচার্যের ভবনে গিয়েছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে। আমরা মনে করি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই চিঠি ১৯৭৩ সালের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্টের পরিপন্থি।’ ‘রাবি উপাচার্য যদি দুর্নীতি করে থাকেন, তাহলে তাকে কেনো অপসারণ করা হচ্ছে না? তাকে অপসারণ না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ করে রাখা হয়েছে, যোগ করেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চাকরি প্রার্থী বলেন, আমাদেরকে ২০১৭ সাল থেকে উপাচার্য আশ্বাস দিয়ে আসছেন। কিন্তু চাকরি দিচ্ছেন না। উপাচার্য ঠিকই তার মেয়ে জামাতার চাকরি দিয়েছেন। আমাদের চাকরির বিষয় সামনে আসলেই তিনি বিভিন্ন অজুহাত দেখান।
উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান এই প্রতিনিধিকে জানান, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে চিঠি দিয়ে একজন প্রতিবন্ধী ছেলেকে চাকরি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। যেহেতু নিয়োগে বন্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ আছে তাই আমি বিষয়টি সচিবকে জানিয়েছি। তিনি নিয়োগ দিতে বলেছেন এবং নিয়োগ দিয়েছি। তিনি এও জানান, আমি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পালন করেছি মাত্র। অন্যদের চাকরি দেওয়া এ মুহুর্তে আমার পক্ষে অসম্ভব। কারণ শিক্ষা মন্ত্রণালয় রাবি ক্যাম্পাসে সব ধরণের নিয়োগের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি রেখেছেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সন্ধ্যার দিকে তারা (ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা)এসেছে। কারণ তারা ভেবেছে আমি আবার নিয়োগ দেওয়া শুরু করেছি। যখন আমি তাদের বোঝাই এটা “বিশেষ কেস”। প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে আসা সুপারিশ অনুযায়ী আমি নিয়োগ দিয়েছি। তখন তারা বলে, “তাহলে আমাদের চাকরির ব্যবস্থাও করেন”।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি তাদেরকে বলি, “তোমাদের জন্যেও আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি”, তখন তারা বুঝতে পেরে চলে যায়।’