|| সারাবেলা প্রতিবেদন, ঢাকা ||
সাংবাদিক কলামিস্ট, প্রাবন্ধিক, লেখক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ মারা গেছেন। মঙ্গলবার বিকেলে হঠাৎই শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তার। স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে ও অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।
১৯৬৪ সালে এম আনিসুজ্জামান সম্পাদিত সাপ্তাহিক নবযুগ পত্রিকায় তার কর্মজীবন শুরু হয়। পরে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি সমর্থিত সাপ্তাহিক ‘জনতা’য় কাজ করেন কিছুদিন। ১৯৭১ সালে যোগ দেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা বাসস এ। ২০০৮ সালের ২রা মার্চ তিনি বাসস এর সম্পাদকীয় বিভাগের চাকরি ছেড়ে দেন।
পত্রিকায় ‘সহজিয়া কড়চা’ এবং ‘বাঘা তেঁতুল’ শিরোনামে কলাম লিখে পরিচিত পান সৈয়দ আবুল মকসুদ। সাংবাদিক হিসেবে পেশাজীবন শুরু করলেও নিজ প্রজ্ঞা ও রাজনৈতিক বোধ থেকে সমাজ, সংস্কৃতি ও রাজনীতির সমসাময়িক ঘটনাবলী নিয়ে নিয়মিত লেখালেখি করতেন সৈয়দ আবুল মকসুদ।
আবুল মকসুদের সাহিত্যচর্চার শুরু ষাটের দশকে, কবিতা, গল্প ও প্রবন্ধ দিয়ে।১৯৮১ সালে তার কবিতার বই ‘বিকেলবেলা’ প্রকাশিত হয়। ১৯৮৭ সালে প্রকাশিত হয় তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘দারা শিকোহ ও অন্যান্য কবিতা’। মানবাধিকার, পরিবেশ, সমাজ ও প্রেম নিয়েও তিনি লিখেছেন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বুদ্ধদেব বসু, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর মত প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদদের জীবনী ও কর্ম নিয়ে গবেষণা করেছেন আবুল মকসুদ।
আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে নিয়ে তিনি লিখেছেন ‘মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাষানীর জীবন, কর্মকাণ্ড, রাজনীতি ও দর্শন (১৯৮৬) ও ভাসানী কাহিনী’। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহকে নিয়ে লিখেছেন ‘সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর জীবন ও সাহিত্য’ , ‘স্মৃতিতে ওয়ালীউল্লাহ’।
আবুল মকসুদের লেখা বইয়ের সংখ্যা চল্লিশের বেশি। সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৯৫ সালে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান।
১৯৪৬ সালের ২৩শে অক্টোবর মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলার এলাচিপুর গ্রামে জন্ম নেন সৈয়দ আবুল মকসুদ।