|| সারাবেলা প্রতিনিধি, বরিশাল ||
কুয়াকাটা পৌর এলাকার কচ্ছপখালী খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ বন্ধের দাবিতে সোচ্চার হয়েছে স্থানীয় কয়েকশ কৃষক। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় কচ্ছপখালী খালের বাঁধে দাঁড়িয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন তারা। কচ্ছপখালী খাল পুনরুদ্ধার কমিটির উদ্যোগে এই মানববন্ধন থেকে খাল বাঁচাও, কৃষক বাঁচাও স্লোগান নিয়ে কৃষকরা জানান, সাবেক ইউপি সদস্য চাঁন মিয়া হাওলাদার ১৯৮০ সালে প্রবাহমান কচ্ছপখালী খালটিতে তিনটি বাধ দিয়ে মাছ চাষ করে আসছে। বাধাগ্রস্থ হচ্ছে পানির প্রবাহ। এতে করে নিস্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে তলিয়ে গেছে প্রায় দুই হাজার একর ফসলি জমির বীজতলা ও সবজি ক্ষেত। ভয়াবহ ক্ষতিতে পড়েছে কৃষকরা।
খাল বাঁচাও, কৃষক বাঁচাও, স্বার্থনেষী মহল নিপাত যাক, বাঁচুক কৃষক বাঁচুক খাল- এমন স্লোগান লেখা ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া কৃষকরা বলেন, শহরের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র এই খালের তিনটি স্থানে বাঁধ দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মাছ চাষ করে আসছে সাবেক ইউপি সদস্য চাঁন মিয়া হাওলাদার। বাঁধের কারণে পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জলাবদ্ধতায় পড়েছে কচ্ছপখালী, মুসুল্লীয়াবাদ, আজিমপুর, দোভাষী পাড়া ও নবীনপুর গ্রাম। তলিয়ে গেছে প্রায় দুই হাজার একর ফসলি জমির বীজতলা ও সবজি ক্ষেত। ব্যাহত হচ্ছে আমন মৌসুমের চাষাবাদ। খালে ভুমিহীন বন্দোবস্ত বাতিলসহ খালের পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা সচলের দাবী জানায় ভুক্তভোগী কৃষকরা।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া নবীনপুরের দুলাল ফকির জানান, গত কয়েক বছর ধরে খালটি পুনরুদ্ধারের আবেদন নিবেদন জানিয়ে আসলেও স্থানীয় ভুমি প্রশাসন এতে গা করছেন না। তার অভিযোগ, প্রায় ২০ বছর ধরে খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করে আসছেন চাঁন মিয়া হাওলাদার। প্রভাবশালী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে পারছে না প্রশাসন।
কচ্ছপখালী খাল পুনরুদ্ধার কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ শাহজাহান মৃধা বলেন, অন্যের নামে ভুমিহীন বন্দোবস্ত থাকলেও সাবেক ইউপি সদস্য চাঁন মিয়া হাওলাদার ১৯৮০ সালে প্রবাহমান কচ্ছপখালী খালটিতে তিনটি বাধ দিয়ে মাছ চাষ করে আসছে। ১৩ কি. মি. ওই খালটির ৩ কি. মি. দখল করে মাছ চাষ করায় জলাব্ধতায় পড়েছে কয়েক শ’ কৃষক পরিবার। এ দূর্ভোগ নিরসনে জেলা প্রশাসনের কাছে দাবী জানান তারা।
নিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে সাবেক ইউপি সদস্য চাঁন মিয়া হাওলাদার বলেন, “আমার রেকর্ডিও সম্পত্তির মধ্যে খাল, আমি ওই খালে মাছ চাষের জন্য বাঁধ দিয়েছি।
কুয়াকাটা পৌর মেয়র আব্দুল বারেক মোল্লা জানান, খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করা হচ্ছে, এমন কথা তাকে মৌখিক ভাবে দুই তিনজন লোক জানিয়েছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে খালটি উদ্ধারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জগৎবন্ধু মন্ডল বলেন, খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছে এমন অভিযোগ রয়েছে। খোঁজ খবর নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।