|| সারাবেলা প্রতিবেদন, ঢাকা ||
করোনা সংক্রমণ এখন রাজধানী ঢাকার ৭৫ এলাকায়। রোববার পর্যন্ত রাজধানীতে ৩১৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এই সংখ্যা সারাদেশের করোনা আক্রান্তের প্রায় অর্ধেক।
করোনা বিস্তারের হটস্পট হচ্ছে রাজধানীর পুরনো ঢাকা। এই এলাকার ১০টি থানার মধ্যে শুধু শ্যামপুর বাদে বাকি ৯টি থানাতেই মিলেছে করোনা আক্রান্ত মানুষের উপস্থিতি। এই ৯টি থানাতে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৬। আর এখন পর্যন্ত মারা গেছেন আটজন।
তবে একটি থানা হিসেবে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা সবথেকে বেশী মিরপুরে। এই থানাতে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৫২ জন। যদিও এখন পর্যন্ত এই থানাতে কারোরই মারা যাবার তথ্য মেলেনি।
সংশ্লিস্ট সূত্র বলছে, রাজধানীতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়তে থাকার মধ্যে ঘনবসতিপূর্ণ পুরনো ঢাকার ১০টি থানাতে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৬৬ জন। আর মারা গেছেন আটজন। শুধু শ্যামপুরে এখনও কারোরই আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। সবচেয়ে বেশি ১১ জন করে রোগী শনাক্ত হয়েছে বংশাল ও চকবাজার থানা এলাকায়। এরপরেই রয়েছে ওয়ারি ও হাজারীবাগ থানা, এই দুই থানাতে ১০ জন করে আক্রান্ত হয়েছে। আর যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে সূত্রাপুরে তিনজন, চকবাজারে দুজন এবং ওয়ারি, লালবাগ ও গেন্ডারিয়ার একজন করে রয়েছেন। পুলিশ বলছে, অতি সংক্রামক এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে পুরান ঢাকার তিনশ’র বেশী ভবন অবরুদ্ধ করা হয়েছে।
এদিকে আইইডিসিআরের তথ্য বলছে, গেল ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশ থেকে সংগৃহিত নমুনা পরীক্ষা করে ১৩৯ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা গেছে। এনিয়ে এখন পর্যন্ত করোনা দেশে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬২১ এ। আর এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৩৪ জন।
আইইডিসিআরের তথ্যে দেখা যায়, ঢাকায় করোনা হটস্পট হচ্ছে মিরপুর। সেখানে ৫২ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মিরপুরের সর্বাধিক আক্রান্তের এলাকা টোলারবাগে ১৯ জন করোনা আক্রান্ত। তারপরেই রয়েছে মিরপুর-১১, সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ জন।
মিরপুরে করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে এমন অন্যান্য এলাকা হচ্ছে— মিরপুর-১২ (৮ জন), মিরপুর-১ (৫ জন), মিরপুর-১০ (৫ জন), মিরপুর-৬ (২ জন), মিরপুর-১৩ (২ জন) এবং কাজীপাড়া (১ জন)। মিরপুর ছাড়াও যেসব এলাকায় করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে: উত্তরা (১৭ জন), ওয়ারী (১৬ জন), ধানমণ্ডি (১৪ জন), লালবাগ (১৩ জন), মোহাম্মদপুর (১২ জন), বাসাবো (১২ জন), যাত্রাবাড়ী (১১ জন ) এবং হাজারীবাগ (৮ জন)।
রাজধানীর বনানী, বংশাল ও মহাখালীতে সাত জন করে কভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) রাজধানীর ৫৪ এলাকা লকডাউন করেছে।
এছাড়া করোনাভাইরাস প্রতিরোধে অনেক এলাকায় বাড়ির মালিক এবং স্থানীয়রা পুলিশ ও প্রশাসনের অপেক্ষা না করে এলাকায় চলাচল সীমিত করেছেন। গৃহকর্মী, অতিথি এবং অচেনা কাউকে বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অনেকেই জানিয়েছেন। মোহাম্মদপুর, মিরপুর, বনশ্রী, নিকেতন, শান্তিনগর, ধানমণ্ডি ও পুরান ঢাকার অনেক এলাকার প্রবেশ ও বেরোনোর মুখে বাঁশের ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে।
ঢাকার পর সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে নারায়ণগঞ্জে। আইইডিসিআরের তথ্যে সেখানে ১০৭ জন করোনা আক্রান্ত।#
