ট্রাম্পশাসনে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ছাড়ছে বহু মার্কিনী

নাগরিকত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেয়া অনেকেই ট্রাম্পের বর্তমান কর্তৃত্ববাদি প্রশাসনকে দায়ী করলেও অনেকে আবার ট্রােম্পের করনীতিকেই বড় কারণ হিসেবে দেখছেন।

||বার্তা সারাবেলা ||

ট্রাম্পের শাসন আর করোনায় বেহাল দশায় যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ছাড়ছে প্রচুর মানুষ। আগেও এই প্রবণতা থাকলেও এবারে তা রেকর্ড ছুঁয়েছে। রোববার প্রকাশিত নতুন এক সমীক্ষায় এই তথ্য জানানো হয়েছে।

নিউইয়র্ক-ভিত্তিক বিশেষায়িত ট্যাক্স ফার্ম ব্যামব্রিজ অ্যাকাউন্ট্যান্টস বলছে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসেই নাগরিকত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন ৫ হাজার ৮০০ আমেরিকান। অথচ পুরো ২০১৯ সালে এই সংখ্যা ছিল মাত্র ২ হাজার ৭২ জন।

যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসী, অভিনেতা ও অন্যান্য সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের হয়ে ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেয়ার কাজগুলো করে থাকে ব্যমব্রিজ আ্যাকাউন্ট্যান্টস। ফার্মটি জানায়, সরকারি তথ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা গেছে যে কোন কোন আমেরিকান ইতোমধ্যেই তাদের নাগরিকত্ব ছেড়ে দিয়েছেন। যারা নাগরিকত্ব ছাড়েন এমন লোকদের তথ্য যুক্তরাষ্ট্র সরকার প্রতি তিন মাস পরপর প্রকাশ করে থাকে।

ব্যামব্রিজ অ্যাকাউন্ট্যান্টসের একজন অংশীদার অ্যালিস্টার ব্যামব্রিজ বলেন, ‘এরা হলেন সেই সব মানুষ যারা এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ছেড়েছেন এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, সবকিছু নিয়ে তাদের অনেক হয়েছে। আমরা দেখছি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে যা ঘটছে, মহামারীকে যেভাবে সামাল দেয়া হচ্ছে এবং এ মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক নীতি নিয়ে অনেক মানুষ বিরক্ত।’

ব্যামব্রিজ বলছে, নাগরিকত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেয়া অনেকেই ট্রাম্পের বর্তমান কর্তৃত্ববাদি প্রশাসনকে দায়ী করলেও অনেকে আবার ট্রােম্পের করনীতিকেই বড় কারণ হিসেবে দেখছেন।

বিদেশে থাকছেন এমন মার্কিন নাগরিকদের প্রতি বছর ট্যাক্স রিটার্ন জমা দিতে হয়, ব্যাংক অ্যাকাউন্টস, বিনিয়োগ ও পেনশনের হিসাব দাখিল করতে হয়। এসব নাগরিকরা প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ১২০০ ডলারের চেক এবং প্রতি সন্তানের জন্য ৫০০ ডলারের চেক পাওয়ার অধিকার লাভ করলেও করের বার্ষিক প্রতিবেদনটি তাদের কাছে বাড়াবাড়িই মনে হয়।

যেসব আমেরিকান নাগরিকত্ব ছাড়তে চান তারা যদি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান না করেন তবে বর্তমানে যে দেশে রয়েছেন সেখানকার আমেরিকান দূতাবাসে হাজির হয়ে আবেদনের সঙ্গে ২ হাজার ৩৫০ ডলার জমা দিতে হয়।

ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ছাড়ার সংখ্যা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন অ্যালিস্টার। তিনি বলেন, ‘নভেম্বরের নির্বাচনে কী ঘটবে তা দেখার অপেক্ষায় আছেন অনেকে। ট্রাম্প ফের প্রেসিডেন্ট হলে আমাদের বিশ্বাস, আমেরিকানদের নাগরিকত্ব ছাড়ার ঢেউ জাগবে।’

সংবাদসূত্র: সিএনএন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন