|| বার্তা সারাবেলা (বিবিসি/রয়টার্স) ||
লেবাননের রাজধানী বৈরুতে বিশাল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে এতে বহু মানুষ হতাহত হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। বড়ধরণের ক্ষয়ক্ষতিরও আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অল্প সময়ের ব্যবধানে দুটো বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকারসংশ্লিষ্টরা দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রী হামাদ হাসান বলেছেন, প্রচুর মানুষ হতাহত এবং বড়ধরণের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা।
বৈরুতের বন্দর এলাকা থেকে পাওয়া ভিডিওতে প্রথম বিস্ফোরণ স্থল থেকে ধোঁয়ার কুন্ডলি উঠতে দেখা গেছে। টুইটারে অনেকে মোবাইল ফোন তোলা প্রচণ্ড বিস্ফোরণের ভিডিও শেয়ার করছেন। টুইটারে পোস্ট করা ভিডিওর সাথে বলা হয়েছে তারা বিস্ফোরণ স্থল থেকে ১০ কিমি দূরে থাকেন এবং বিস্ফোরণে তাদের ভবনের কাঁচ ভেঙে গেছে।

বিস্ফোরণটি এত শক্তিশালী ছিল যে বাসিন্দারা ভেবেছিল ভূমিকম্প হয়েছে। মানুষজন চিৎকার, ছুটোছুটি করেছে। আশেপাশের বাড়িঘরের জানালার কাচ ভেঙে,ভবন ধসে অনেকে আহত হয়েছে। অনলাইনে পোস্ট হওয়া ভিডিওতে বড় ধোঁয়ার কুন্ডলী এবং ধসে পড়া বাড়িঘরসহ ধ্বংস হয়ে যাওয়া গাড়ি দেখা গেছে। নিরাপত্তা ও চিকিৎসা কর্মকর্তারা অন্তত ১০ টি মৃতদেহ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে।
প্রথম বিস্ফোরণের পর কুণ্ডলি পাকিয়ে ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়। এরপর আরেকটি আরও বড় বিস্ফোরণের ধোঁয়ায় আশপাশের বেশ কিছু ভবন ঢেকে যাওয়ার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। দ্বিতীয় এই বিস্ফোরণটি সাবেক নিহত প্রধানমন্ত্রী রফিক হারিরি’র বৈরুত শহরের বাসভবনে হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।



এই বিস্ফোরণ ঘটেছে এমন একটা স্পর্শকাতর সময়ে যখন কিনা চলতি সপ্তাহেই দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাফিক হারিরি হত্যা মামলার রায় ঘোষণার কথা রয়েছে। ২০০৫ সালে হারিরিকে হত্যা করা হয়। গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে মি. হারিরির হত্যায় চারজন সন্দেহভাজনের মামলার রায় জাতিসংঘের একটি ট্রাইব্যুনালের দেবার কথা শুক্রবার।
এদিকে একজন প্রত্যক্ষদর্শী সংবাদ সংস্থা বিবিসিকে বলেছেন, বিস্ফোরণ এত শক্তিশালী ছিল যে তার মনে হয়েছিল তিনি মারা যাবেন। কাছের হাসপাতালগুলোতে হতাহতদের ভিড় উপচে পড়ছে বলে জানাচ্ছেন অনেকেই। লেবাননের রেডক্রস বলছে, শত শত আহত মানুষকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমে লোকজনকে ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।



রাজধানীর প্রায় সবগুলো দমকল ইউনিট কাজে নামলেও আগুন নেভাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। বিস্ফোরণের প্রকৃত কারণ এখনও জানা না গেলেও স্থানীয় কিছু রিপোর্টে বলা হচ্ছে, এটি একটি দুর্ঘটনাও হতে পারে। আবার আতসবাজির গুদাম থেকে এই বিস্ফোরণ হয়ে থাকতে পারে। লেবাননের জাতীয় বার্তা সংস্থা বন্দর এলাকায় তাদের ভাষায় একটি বিস্ফোরকের ডিপোতে আগুন লাগার খবর দিয়েছিল।
লেবাননে সরকারের করোনাভাইরাস সামাল দেওয়া, অর্থনীতিতে ধস নিয়ে জনগণের ক্ষোভ, অসন্তোষ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী রফিক আল হারিরি হত্যা মামলার রায় হওয়ার আগে দিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে বিস্ফোরণের এ ঘটনা ঘটল। এছাড়া ইসরায়েলের সঙ্গে লেবাননের সীমান্ত নিয়েও উত্তেজনা বিরাজ করছে। তবে এ বিস্ফোরণের ঘটনার সঙ্গে নিজেদের কোন ধরণের যোগসূত্র অস্বীকার করেছে ইসরায়েল সরকার।