|| বার্তা সারাবেলা ||
করোনা সংক্রমণটা সহজেই মানুষ থেকে মানুষেই ছড়ায় এবং তা দ্রুতই ছড়ায়। অন্য কোনও দূষিত জিনিসপত্র বা প্রাণী থেকে কিন্তু ততটা সহজে, ও দ্রুত ছড়াতে পারে না এই ভাইরাস।
কথা বলা বা হাঁচি, কাশির সময় আমাদের নাক, মুখ থেকে যে ড্রপলেট বেরিয়ে আসে, সেটাই মূলত মানুষ থেকে মানুষে এই ভাইরাসকে ছড়িয়ে পড়তে সাহায্য করে। ফলে, কারও ক্ষেত্রে যদি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক উপসর্গটুকুও না থাকে বা তিনি যদি আদৌ আক্রান্ত না হন, তা হলেও তাঁর নাক, মুখ থেকে বেরিয়ে আসা ড্রপলেট থেকে অন্য মানুষে ছড়িয়ে পড়তে পারে এই ভয়ঙ্কর ভাইরাস।
কম করে হলেও ৬ ফুট দূরত্বেই এই ভাইরাস ছড়াতে পারে। ওই দূরত্বেই এক জন থেকে অন্য জনে ড্রপলেটের মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনাই বেশি। কারণ, মানুষের নাক, মুখ থেকে বেরিয়ে আসা ড্রপলেট নূন্যতম ৬ ফুট দূরত্বের মধ্যেই আরেকজনকে সংক্রমিত করে।

এছাড়া বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষানিরীক্ষা থেকে দেখা গিয়েছে, যে সব এলাকায় মানুষের উপস্থিতি বেশি, করোনাভাইরাসের কাছে সেসব এলাকাই বেশী পছন্দের। তাই এটি সবথেকে বেশী ছড়ায় হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে। কারাগারে। ক্রুজ শিপে। বাজারে বিশেষ করে মাছ-মাংসের বাজারে। এমনকি যেখানে মাছ-মাংস প্রক্রিয়াজাত বা প্যাকেটজাত করা হয়।
প্রাণঘাতি এবং এখন পর্যন্ত অনেকটাই অজানা, অচেনা এই ভাইরাসটি সম্পর্কে নতুন এসব তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাস্ট্রের ‘সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)। নিজেদের ওয়েবসাইটে ‘হাউ কোভিড-১৯ স্প্রেডস’ শিরোনামে তথ্যনিবেশে নতুন এসব তথ্য যোগ করেছে সিডিসি। এতে বলা হয়েছে, ‘‘করোনাভাইরাসটি খুব সহজেই এবং দ্রুত মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায়। এবং সংক্রমণ জোরালো করতে ভাইরাসটি টিঁকেও থাকতে পারে অনেকটা সময়।’’



করোনাভাইরাস সম্পর্কে আমাদের আরও একটা ধারণাকে বদলাতে বলেছে সিডিসি। সিডিসি বলছে, এই ভাইরাসটি কোন উৎস থেকে এসেছে এবং মানুষের শরীরে ঢুকেছে, সেটা বড় কথা নয়। তা যদি কোনও দূষিত জিনিসপত্র থেকে আমাদের শরীরে সংক্রমিত হয়, তাতে বিপদ যতটা, অন্য কোনও প্রাণী থেকে এলেও বিপদ ততটাই। এতে কোন হেরফের হওয়ার সুযোগ নেই।
নতুন মূল্যায়ন জানাতে গিয়ে সিডিসি-র ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে ‘দ্য ভাইরাস ডাজ নট স্প্রেড ইজিলি ইন আদার ওয়েজ’ (ভাইরাসটি অন্য কোনও ভাবে সহজে ছড়ায় না)।
সিডিসি জানিয়েছে, কোনও দূষিত জিনিসপত্র ছুঁলেই আমরা করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হবো, তা কিন্তু নয়। আবার অন্য কোনও সংক্রমিত প্রাণীর সংষ্পর্শে এলেও যে আমাদের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা দুম করে বেড়ে যাবে, সেটাও নয়।
এ প্রসঙ্গে সিডিসি-র মুখপাত্র ক্রিস্টেন নর্ডলান্ড বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, তাদের নিজস্ব পর্যালোচনা ও বিভিন্ন স্তরের পরীক্ষা-নিরীক্ষার ভিত্তিতেই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন তারা। এরই প্রেক্ষিতে সংশোধণ করা হয়েছে ওয়েবসাইটের তথ্য। তিনি বলছেন, ‘‘সংক্রমণের গতিপথ বা ভাষা বদলায়নি। মানুষের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা থেকেই এই ভাইরাস বেশি ছড়াচ্ছে।’’