||অনলাইন ডেস্ক||
সারাভারত এখন প্রাণঘাতি ভাইরাস করোনায় বিপর্যস্ত। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন আটজন মানুষ মারা যাচ্ছে এই দেশটিতে। বৈশ্বিক প্রেক্ষিতে দেশটিতে মারা যাওয়ার হার এখন আট শতাংশেরও উপরে। একমাত্র পাঞ্জাবেই মৃত্যুর হার সারা ভারতের গড় হারের তিনগুণ। দেশটির স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটে দেয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পেয়েছে ইন্ডিয়া টুডে’র ড্যাটা ইনটেলিজেন্স ইউনিট-ডিআইইউ।
ভারতে প্রথম করোনায় মারা যাওয়ার খবরটি আসে কর্ণাটকা রাজ্যে গেল ১১ই মার্চ। আর ১১ই এপ্রিল সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছে সাড়ে সাত হাজার এবং মারা গেছে প্রায় আড়াইশ মানুষ। এতে দেখা যাচ্ছে, দেশটিতে প্রথম মৃত্যুর পর থেকে আজ অবধি দিনে আট জন করে মানুষ এই ভাইরাস সংক্রমণে মারা যাচ্ছে।
দেশটিতে ১১ই এপ্রিল সকাল পর্যন্ত পাওয়া তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী সংক্রমণের সংখ্যার দিক থেকে করোনায় মারা যাওয়ার হার তিন দশমিক একুশ শতাংশ। পাঞ্জাবেই এই হার আট দশমিক ত্রেত্রিশ, মধ্যপ্রদেশে সাত দশমিক উণষাট, নয়াদিল্লীতে এক দশমিক চুয়াল্লিশ শতাংশ। উপাত্ত বলছে, যেসব রাজ্যে পরীক্ষার হার বেশী সেখানে মৃত্যুর হার কম। আবার এটি ভাইস-ভার্সাও হচ্ছে। যেমন পাঞ্জাবে ৩ হাজার ৪৬১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এই রাজ্যে মৃত্যুর হার আট দশমিক তেত্রিশ শতাংশ। অন্যদিকে মধ্যপ্রদেশে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৭ হাজার উনপঞ্চাশটি। মারা গেছে মাত্র ৩৩ জন। তাও আবার ৪৩২ জন আক্রান্ত মানুষের মধ্যে।
অন্যদিকে দিল্লীতে পরীক্ষা করা হয়েছে ১১ হাজার ৬১টি নমুনা। ১০ই এপ্রিল পর্যন্ত সেখানে মৃত্যুও হার মাত্র ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
আক্রান্তের দিক থেকে এখন পর্যন্ত সবথেকে এগিয়ে রয়েছে মহারাষ্ট্র। এই রাজ্যে মৃত্যুর হার ৭ শতাংশ। শনিবার সকাল অবধি এই রাজ্যে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩০ হাজারের বেশী। ভাইরাস পাওয়া গেছে ১৫শ’ ৭৪ জনের শরীরে। আক্রান্তের হারে দ্বিতীয় অবস্থানে তামিলনাড়–। সেখানে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৮ হাজার ৪১০ জনের। শনাক্ত হয়েছে ৯১১ জন। মারা গেছে মাত্র ৮ জন।
দেশটির সবচে জনবহুল রাজ্য উত্তরপ্রদেশ। এখানে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৯ হাজার ৩৩২ জনের। ১১ই এপ্রিল পর্যন্ত পাওয়া উপাত্ত অনুযায়ী ৪৩১ জন শনাক্ত হলেও মৃত্যুর হার মাত্র এক শতাংশ। কেরালায় এখন পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৩ হাজার জনের। মৃত্যুর হার সবচে কম দশমিক ৫০ শতাংশ।
সুস্থ হওয়ার দিক থেকে অন্য রাজ্যগুলোর তুলনায় সবচে এগিয়ে রয়েছে ছত্তিশগড়। এরপরেই কেরালা ও হিমাচল প্রদেশ। ছত্তিশগড়ে এখন পর্যন্ত যতজন করোনা আক্রান্ত হয়েছে তার মধ্যে অর্ধেকেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। কেরালায় সুস্থ হওয়ার হার মোট আক্রান্তের তিন ভাগের একভাগ। আর হিমাচলে পাঁচ ভাগের এক ভাগ।
মহারাষ্ট্র আর গুজরাটে সুস্থ হওয়ার হার খুবই কম। এই দুই রাজ্যে এই হার যথাক্রমে ১২ ও ১০ শতাংশ। তবে মধ্যপ্রদেশ, বিহার, আসাম, ঝারখান্ড ও ত্রিপুরায় একজনও সুস্থ হওয়ার খবর মেলেনি।
গেল দুইদিনে সারা ভারতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৬ হাজার ৭৬১ জন। বাড়ার দিক থেকে এটি ২৮ শতাংশ। গত কয়েকদিনে সবথেকে বেশী আক্রান্ত হয়েছে মহারাষ্ট্র, দিল্লী ও তামিলনাড়–তে। সারা ভারতে গেল কয়েকদিনে যতসংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়েছে তার অর্ধেকেরও বেশী এইসব রাজ্যে। প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। গেল ৩০ দিনে এই দেশটিতে করোনায় মারা গেছে ২৩৯ জন মানুষ।#
