বৈরুত বিস্ফােরণের এক মাস, ধ্বংসস্তুপে জীবনের আশা

বিস্ফোরণের এক মাস কেটে গেছে। লেবাননের বৈরুতে ধ্বংসস্তুপের নীচে জীবনের অবাক আশার সম্ভাবনা তৈরী হয়েছে। ক্ষীণ সে আশাকে ধরে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে উদ্ধারকারীরা। আল জাজিরা। তিন দিন ধরে চলা উদ্ধারকাজে ক্রমেই কমে আসছে হৃৎস্পন্দন।

।। সারাবেলা ডেস্ক ।।

বিস্ফোরণের এক মাস কেটে গেছে। লেবাননের বৈরুতে ধ্বংসস্তুপের নীচে জীবনের অবাক আশার সম্ভাবনা তৈরী হয়েছে। ক্ষীণ সে আশাকে ধরে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে উদ্ধারকারীরা। আল জাজিরা। তিন দিন ধরে চলা উদ্ধারকাজে ক্রমেই কমে আসছে হৃৎস্পন্দন।
বিশেষ যন্ত্রের মাধ্যমে হৃদস্পন্দনের ইঙ্গিত পেতেই বৃহস্পিতবার থেকে নতুন করে ধ্বংসস্তূপের নীচে খোঁজ শুরু হয়েছে। ক্ষীণ আশা থাকলেও ‘মির‍্যাকল’ এর আশায় খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করেছেন উদ্ধারকারীরা। হৃদস্পন্দনের ওই সঙ্কেতের কেন্দ্রস্থলে পৌঁছনোর চেষ্টা করছে লেবানন ও চিলির জরুরি বিভাগের উদ্ধারকারী দল।
ঘটনার সূত্রপাত বুধবার রাতে। চিলির উদ্ধারকারী দলের সদস্যদের সঙ্গে একটি স্নিফার ডগ ছিল। একটি ধুলিসাৎ হয়ে যাওয়া ভবনের নীচে কিছু একটা গন্ধ পেয়ে ওই স্নিফার ডগ কারও বেঁচে থাকার ইঙ্গিত করে। তবে বুধবার রাতে আর কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু বৃহস্পতিবার ভোরের আলো ফুটতেই নিয়ে আসা হয় বিশেষ যন্ত্র। এই যন্ত্র মানুষের হৃদযন্ত্র সচল থাকলে তার উপস্থিতি নির্দেশ করে। প্রতি মিনিটে কত হৃদস্পন্দন, সেটাও বলে দেয় ওই যন্ত্র। তাতেই হৃদস্পন্দনের প্রমাণ মেলে। তার পরেই খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করেন দুই দেশের উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা।

কিন্তু বৃহস্পতিবার সারা দিন ধ্বংসস্তূপ সরিয়েও ওই হৃদস্পন্দনের উৎসস্থলে পৌঁছতে পারেননি উদ্ধারকারীরা। এখনও সেই প্রচেষ্টা জারি রয়েছে। লেবানন ও চিলির উদ্ধারকারী দলের সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা লেবাননের আধিকারিক নিকোলাস সাদি বলেন, ‘‘বাড়িঘরের ভেঙে পড়া দেওয়াল, ইট-কাঠ-সিমেন্টের চাঙড় অনেকটাই সরিয়ে ফেলেছি। তবে এখনও কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারিনি।’’

কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, দ্রুত হৃদস্পন্দন কমে যাওয়ায়। উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, বুধবার হৃদস্পন্দনের যে হার ছিল, শুক্রবার তার চেয়ে অনেকটাই কমে গিয়েছে। সাদি বলেন, ‘‘বড় বড় চাঙড়গুলো সরিয়ে আমরা হৃদস্পন্দন বা শ্বাসপ্রশ্বাসের উপস্থিতির জন্য আবারও স্ক্যান করি। সেই যন্ত্রে হৃদস্পন্দনের হার ধরা পড়েছে প্রতি মিনিটে ৭ বার। বৃহস্পতিবার এই হার ছিল ১৬ থেকে ১৮ বার।’’ সেই কারণেই অতি দ্রত হৃদস্পন্দনের উৎসস্থলে পৌঁছতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা।

গত ৪ অগস্ট ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে লেবাননের বেইরুট বন্দর এলাকা। পর পর দু’টি বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, ১০ কিলোমিটার দূরের বাড়িঘরে পর্যন্ত ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। কম্পন অনুভূত হয় বেইরুটের ২৪০ কিলোমিটার পশ্চিমে সাইপ্রাস দ্বীপেও। ঘটনায় ১১৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। আহত হয়েছিলেন আরও কয়েকশো মানুষ। ঘটনায় এখনও নিখোঁজ ৭ জন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন