বিক্ষোভ দমনে ট্রাম্প এখন ‍“প্রেসিডেন্ট অব ল এন্ড অর্ডার”

|| বার্তা সারাবেলা(এপি/বিবিসি) ||

মার্কিন অধিপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প এখন বিক্ষুব্ধ যুক্তরাষ্ট্রের “প্রেসিডেন্ট অব দ্য ল এন্ড অর্ডার”। নিজেকে এমন অভিধায় ভূষিত করে ট্রাম্প বললেন, শহর ও রাজ্যগুলোর প্রধানরা যদি বিক্ষোভ ও “তাদের নাগরিকদের রক্ষা” করতে ব্যর্থ হন, তাহলে দেশজুড়ে সেনা মোতায়েন করেই তার নাগরিকদের দ্রুত সমাধান এনে দেবেন তিনি।

সোমবার যখন জাতির উদ্দেশ্যে এমন কথাগুলো বলছিলেন ট্রাম্প ঠিক তখন পেনসিলভানিয়া অ্যাভিনিউর সামনে চক্কর দিচ্ছিল সেনাযান আর লাফায়েট পার্কের চলছিল বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে মিলিটারি পুলিশ ও আইন শৃংখলা রক্ষীদের সংঘর্ষ। একই সঙ্গে হোয়াইট হাউসের চারপাশে লাগানো টিভি পর্দায় ভেসে উঠছিল ট্রাম্পের ভাষন।

এরইমধ্যেই বিক্ষোভ দেখতে আসেন অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার। তিনি চলে যাওয়ার পরপরই শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোঁড়ে পুলিশ।বার্তা সংস্থাগুলো বলছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পাশের একটি গির্জায় যাবেন বলে বিক্ষুব্ধ মানুষগুলোকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দিতেই কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোঁড়া হয়। আর এতে আরো ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে বিক্ষুব্ধ মানুষ।

কালো আমেরিকান জর্জ ফ্লয়েড খুনের প্রতিবাদে গেল প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চলে আসা এই বিক্ষোভ এখন ছড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় দেড়শ’ শহরে। এতে এ পর্যন্ত মারা গেছে কমপক্ষে পাঁচজন। বিক্ষুব্ধ আর পুলিশসহ আহত হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। গ্রেফতার হয়েছেন হাজারের ওপরে। বিক্ষোভ দমনে গুলি, বিক্ষুব্ধ মানুষের ভাংচুর আর আগুনে ক্ষতি হয়েছে লক্ষ ডলার। এরইমধ্যে তছনছ হচ্ছে বড় বড় শপিং মল আর কর্পোরেটদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। যে যার মত পারছে দোকানগুলো থেকে নিয়ে যাচ্ছে তাদের পছন্দমত পণ্য।

এদিকে বিক্ষোভ দমনে অন্য পাঁচটি রাজ্য থেকে ন্যাশনাল গার্ডের আটশ’র মত সদস্য পাঠানো হয়েছে ওয়াশিংটনে। এতথ্য জানিয়ে জ্যেষ্ঠ এক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, এসব সেনা ইতোমধ্যেই মাঠে নেমেছে বিক্ষোভ দমনে।

অথচ যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধ সময়ের পোসে কোমিটেটাস অ্যাক্ট অনুযায়ী গ্রেফতার, সম্পদ জব্দ কিংবা কারো বিরুদ্ধে তল্লাশি অভিযানের মত কাজে ফেডারেল সেনা ব্যবহার করা যায় না। এসব কাজে রাজ্যের নিজস্ব বাহিনীকেই ব্যবহার করতে হয়। তবে পরিস্থিতি এরচেয়ে খারাপ হলে প্রেসিডেন্ট ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মোতায়েনের জন্য ইনসারেকশন অ্যাক্ট বলবৎ করতে পারেন।
এমন পরিস্থিতিতে আসছে নির্বাচনে দেশটির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেন মঙ্গলবার ট্রাম্পের সমালোচনা করে বলেছেন, তার সমঝে কথা বলা উচিৎ।

যুক্তরাস্ট্রের সংবিধানে বিরুদ্ধ মতের মানুষ ও বিক্ষুব্ধ মানুষের সমবেত হয়ে প্রতিবাদ করবার অধিকার যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে ডেমোক্রেট এই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বলেন, “কোন প্রেসিডেন্ট কোনভাবেই আমাদের সোচ্চারণকে বন্ধ করে দিতে পারেন না।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন