|| সারাবেলা ডেস্ক ||
ফ্রান্সে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের শুরু সেই ডিসেম্বরে। দেশটির একটি হাসপাতালে নিউমোনিয়া নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন এমন রোগীদের পুরনো নমুনা পরীক্ষায় এমন প্রমাণ মিলেছে। গেল ২৭শে ডিসেম্বরের দিকে নিউমোনিয়ার চিকিৎসা নিয়েছেন এমন এক রোগীর নমুনাতে কোভিড-১৯ এর ভাইরাস পাওয়া গেছে। ফরাসি সরকার দেশটিতে প্রথম যেদিন করোনা রোগীর উপস্থিতি ঘোষণা করেন এটি তারও প্রায় একমাস আগের ঘটনা।
প্যারিসের উত্তরাঞ্চলীয় উপশহর এলাকার আভিসিনে ও জ্যঁ ভেখদিয়েখ্ হাসপাতালের রিকভারি বিভাগের প্রধান ওয়াইভে কোহেন এমন তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের বিজ্ঞানিরা ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে ফ্লু ও নিউমোনিয়ার মত উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছিল এমন ২৪ জন রোগীর নমুনা পরীক্ষা করেছে। এদের কারোরই ফ্লু হয়নি বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।’
এই চিকিৎসা কর্মকর্তা গেল রোববার বিএফএম টিভিকে জানান, এই ২৪ জনের কারোরই ফ্লু না হলেও একজনের কোভিড ১৯ হয়েছিল বলে পরীক্ষায় প্রমাণ মিলেছে। এখন যেভাবে করোনাভাইরাস নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে ঠিক সেভাবেই ঐ ২৪ জনের নমুনাও পিসিআর পদ্ধতিতে পরীক্ষা করা হয়েছে বলেও জানান কোহেন।তিনি এও জানান, পরীক্ষাতে কোন ভুল হচ্ছে কি না তা নিশ্চিত হতে তারা নমুনাগুলো বেশ কয়েকবার পরীক্ষা করেছেন।
উল্ল্যেখ, গেল গেল ২৪শে জানুয়ারী ফ্রান্সে প্রথম তিনজন করোনা শনাক্ত হয়। এদের দুইজন প্যারিসের আর অন্য একজন দেশটির দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় শহর বোখদ্যোতে থাকতেন। যদিও দেশটির সরকারি হিসাব বলছে, পয়লা মার্চ থেকে এ পর্যন্ত ফ্রান্সে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ মারা গেছেন।
কোহেন বলছেন, ঐ মানুষটিই ফ্রান্সের প্রথম করোনা রোগী কিনা তা এখনই বলা যাচ্ছে না। কেননা ঐ মানুষটির মাধ্যমেই ভাইরাস ছড়িয়েছে কিনা তাও বলা মুশকিল। মানুষটি সুস্থ হয়েছিল জানিয়ে কোহেন বলেন, তিনি ১৫দিন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।একইসময়ে তার দুই ছেলেও একই ধরনের উপসর্গে আক্রান্ত হয়। তবে তার স্ত্রী পুরোই সুস্থ ছিলেন। তিনি একটি সুপারমার্কেটে কাজ করেন।
আক্রান্ত লোকটি নিজেও বলেছেন, “তিনি নিজেও আশ্চর্য এই ভেবে যে, কী করে আক্রান্ত হলেন। তারা শহরের বাইরে কোথাও যাননি। শুধু থাকার মধ্যে বউয়ের সঙ্গেইতো থেকেছেন।”
কোহেন জানান, লোকটির স্ত্রী অবশ্য সুশি এলকাতে কাজ করতেন। যেখানে চীনা বংশোদ্ভূতদের বাস। তবে ঐসব চীনারা দেশে গিয়েছিল কি না কিংবা স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ কোন ধরনের খোঁজখবর করেছেন কিনা তা জানা যায়নি। আমরা এটাও জানতে পারিনি, আক্রান্ত লোকটির স্ত্রী উপসর্গহীন রোগী ছিলেন কিনা।”
“দেশের অন্য কোন অঞ্চলে এমন রোগী না থাকলে আমাদের পরীক্ষা করা লোকটিই সম্ভবত ফ্রান্সের করোনা শনাক্ত প্রথম কেউ। বলেন কোহেন।#
সংবাদসূত্র: রয়টার্স