|| বার্তা সারাবেলা/বিবিসি ||
নতুন করে করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ায় অস্ট্রেলিয়ার সিডনির মানুষকে ঘরে থাকার অনুরোধ করেছে শহরটির প্রশাসন। অথচ গেলো পনেরোদিন ধরে দেশটিতে স্থানীয়ভাবে নতুন সংক্রমণ প্রায় ছিলই না।
বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, দেশটির নিউ সাউথ ওয়েলস অঙ্গরাজ্যের রাজধানী সিডনির নর্দান বিচেস অঞ্চলে গত বুধবার থেকে ২৮ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। কোত্থেকে থেকে তারা সংক্রমিত হয়েছেন তা খুঁজে বের করতে কর্মকর্তারা জোর তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছেন।
রাজ্যের সব মানুষকে প্রকাশ্যে বা জনসমাবেশে আসার সময়ে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করার অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়ও রাজ্য জুড়ে ‘উচ্চ সতর্কতা’ জারি করা হয়েছে। ফলে নিউ সাউথ ওয়েলসের মানুষদের এখন দেশের ভেতর অন্য রাজ্য ভ্রমণে বাধার মুখে পড়তে হবে।
করোনভাইরাস সংক্রমণের নতুন এই ‘ক্লাস্টার’ পুরো অস্ট্রেলিয়ার জন্যই উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তা নাহলে দেশটি বেশ সফলভাবেই সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ সামলেছে বলা যায়। কারণ, বুধবারের আগে গত দুই সপ্তাহে দেশটিতে স্থানীয়ভাবে মাত্র একজনের কোভিড-১৯ এ সংক্রমিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
সিডনির নর্দান বিচেস অঞ্চলের প্রায় আড়াই লাখ মানুষকে আসছে সোমবার পর্যন্ত ঘরবন্দি থাকতে এবং যদি তাদের শরীরে কোভিড-১৯ এর সামান্যতম উপসর্গও দেখা দেয় তবে দ্রুত পরীক্ষা করতে বলা হয়েছে।
রাজ্যের বাকি মানুষদের সংক্রমন এলাকা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও গণপরিবহণ, সুপারমার্কেট বা গির্জায় মাস্ক পরতে বলা হয়েছে। সংক্রমণের গতি বেশ কমে যাওয়ায় গত কয়েকমাস সিডনির বাসিন্দাদের মাস্ক পরতে খুব একটা দেখা যায়নি।
নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রধান গ্লাডিস বেরেজিব্লিয়ান সিডনির ৫০ লাখ বাসিন্দাকে কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে ‘বাড়তি সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ’ এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও চলাফেরায় শারীরিক দূরত্ব রাখার অনুরোধ করেছেন। শুক্রবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘যদি আমরা আগামী দুই বা তিন দিন এটাকে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেই তবে আমরা সবাই বড়দিন অনেক ভালোভাবে উদযাপন করতে পারবো। কিন্তু যদি আমরা সেটা না করি, তাহলে ভবিষ্যতে আবারও কড়াকড়ি আরোপ করতে হবে।”
কোথা থেকে ভাইরাস ছড়িয়েছে:
নর্দান বিচেস অঞ্চলে করোনাভাইরাসের যে ‘স্ট্রেইন’ ছড়িয়েছে তার সঙ্গে সম্প্রতি ভ্রমণ শেষে দেশের ফেরার পর কোয়ারেন্টিনে থাকা পর্যটকদের দেহে যে ভাইরাস পাওয়া গেছে তার সঙ্গে মিল রয়েছে বলে জানান কর্মকর্তারা। তবে কিভাবে সেটি নর্দান বিচেস অঞ্চলের বাসিন্দাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে তা এখনো তারা নিশ্চিত হতে পারেননি।
তারা বলেন, ভ্রমণ থেকে ফেরা এক দম্পতি কোভিড টেস্টের ফল হাতে পাওয়ার আগ পর্যন্ত নিজেদের বাড়িতে আলাদা করে রাখতে পারেননি। গত ১১ই ডিসেম্বর একটি জনপ্রিয় লন বোলিং ক্লাবে যান এবং সেখান থেকে নর্দান বিচেস উপকণ্ঠের একটি পাবে যান। তারাই এবারের ‘সুপার স্প্রেডার’র ভূমিকায়। তবে ওই দম্পতি বিদেশ ভ্রমণে না গিয়েও কিভাবে সংক্রমিত হলেন সেটা এখনো অজানা।