|| সারাবেলা/রয়টার্স, বিবিসি ||
রাজার ক্ষমতা কমানো একইসঙ্গে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে থাইল্যান্ড। চলমান এই বিক্ষোভ ঠেকাতে জরুরি অবস্থা জারি করেছে দেশটির সরকার। নিষিদ্ধ করা হয়েছে সব ধরণের সমাবেশ ও স্পর্শকাতর সংবাদ প্রকাশ। তবে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বৃহষ্পতিবার বিকাল থেকে ব্যাংককের কেন্দ্রস্থল ও শহরতলীর একাধিক পয়েন্টে সমবেত হয়েছে বিক্ষোভকারীরা।
ব্যাংকক পোস্ট জানিয়েছে, সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা বৃহষ্পতিবার বিকাল থেকে ব্যাংককের বাণিজ্যিক এলাকায় রাচাপ্রাসং ইন্টারসেকশনে অবস্থান নেয়। তারা সেখানে মোতায়েন দাঙ্গা পুলিশ সদস্যদের পিছু হটতে বাধ্য করে। কয়েকশো বিক্ষোভকারী সেন্ট্রাল ওয়ার্ল্ড শপিং সেন্টারের বাইরে অবস্থান নেয়। এসময় তারা এবং ‘একনায়কত্বের পতন হোক’, ‘দূর হও, আমাদের বন্ধুদের মুক্তি দাও’ ইত্যাদি ¯েøাগান দিতে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যে আরও অনেকে বিক্ষোভে যোগ দিলে একপর্যায়ে পুরো সড়কটি বিক্ষোভস্থলে রূপ নেয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার ভোর ৪টায় জরুরি অবস্থা জারি করে থাই সরকার। এ ছাড়া অলোপনীয় রাজতন্ত্রের সমালোচনা করায় গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভেও দমনপীড়ন বেড়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, জরুরি অবস্থা কার্যকর হওয়ার পরপরই দাঙ্গা পুলিশ প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান-ওচার কার্যালয়ের বাইরে অবস্থান নিয়ে থাকা বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়। বিক্ষোভকারীরা অস্থায়ী ব্যারিকেড তৈরি করে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেও পারেনি।
বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়ার পর রাস্তায় কয়েকশ পুলিশ দেখা গেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে অন্তত ২০ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তারের কথা বলা হয়েছে, যাদের মধ্যে কয়েকজন নেতাও রয়েছেন। এরা হলেন, মানবাধিকার আইনজীবী অ্যানন নামপা, ছাত্রনেতা পারিত চিওয়ারাক, যিনি ‘পেঙ্গুইন’ নামে পরিচিত এবং পানুসায়া সিথিজিরাওয়াতানাকুল।
জারি করা জরুরি ডিক্রিতে পাঁচ বা তার বেশি মানুষের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া ‘ভীতিকর’ এবং ‘জাতীয় নিরাপত্তায় হুমকি’ তৈরি করতে পারে এমন সংবাদ প্রকাশও নিষিদ্ধ করা হয়েছে এতে। জরুরি অবস্থা জারির ফলে যেকোনো সুনির্দিষ্ট এলাকায় মানুষের প্রবেশ আটকাতে পারবে কর্তৃপক্ষ। থাইল্যান্ডের সরকার বলছে, রাজকীয় মোটর শোভাযাত্রায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, অস্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক ক্ষতি এবং করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে এই জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর জারি করা জরুরি ডিক্রি থাই পুলিশের পক্ষ থেকে টেলিভিশনে প্রচারিত হয়।
বিদেশভ্রমণ শেষে থাইল্যান্ডের রাজা মাহা ভাজিরালংকর্ণের দেশের মাটিতে পদার্পণের পর ফের বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে ব্যাংকক। বুধবার হাজারো গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভকারী রাজার গাড়িবহরের সামনে বিক্ষোভ করে। আন্দোলন-বিক্ষোভের প্রতীক হয়ে ওঠা ‘তিন আঙ্গুল স্যালুট’ প্রদর্শন করে তারা। বুধবার ১০ হাজারের বেশি বিক্ষোভকারী রাজধানীতে জড়ো হয়। তারা প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ও রাজার ক্ষমতা কমানোর করার দাবি জানায়।