|| বার্তা সারাবেলা/দ্য ডন ||
পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের (পিআইএ) একটি উড়োজাহাজ ৯৯ জন আরোহী নিয়ে মাটিতে আছড়ে পড়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৯৭ জনে। দুইজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত শনাক্ত করা গেছে ১৯ জনকে।
পিআইএর মুখপাত্র আবদুল সাত্তারের বরাত দিয়ে দেশটির ইংরেজি সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, লাহোর থেকে ছেড়ে আসা এয়ারবাস এ-৩২০ উড়োজাহাজটি করাচির জিন্নাহ ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে নামার সময় কাছের একটি আবাসিক এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। বিমানে ৯১ জন যাত্রী এবং ৮ জন ক্রু ছিলেন।
পাকিস্তান আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর থেকে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনার পরপরই সেনাবাহিনীর উদ্ধারকর্মীরা সেখানে পৌঁছে কাজ শুরু করেছে। আধাসামরিক সেনারাও ত্রাণ এবং উদ্ধারকাজের জন্য সেখানে গেছে।
তাৎক্ষণিকভাবে দেশটির প্রাদেশিক স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছে। আরো মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। একজন যাত্রী বেঁচে গেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা ভিডিও ও ছবিতে দেখা গেছে, ওই আবাসিক এলাকার ওপর দিয়ে কালো ধোঁয়া উড়ছে। ঘটনাস্থলে ছুটে যাচ্ছে অ্যাম্বুলেন্স। সেখানে কয়েকটি বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ফ্লাইট-এ৩২০ অবতরণ করার সময় মডেল কলোনি আবাসিক এলাকার কাছে বিধ্বস্ত হয়। ছবিতে ওই কলোনিতে ধ্বংসস্তুপ দেখতে পাওয়া গেছে। বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, উড়োজাহাজটি অবতরণের ঠিক আগে দিয়ে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে চাকা খুলতে পারছিল না।
পিআইএ’র প্রধান নির্বাহী এয়ার ভাইস মার্শাল এরশাদ মালিক জানান, পাইলট ট্রাফ্রিক কন্ট্রোল রুমে যান্ত্রিক ওই ত্রুটির কথা জানিয়েছিলেন। এরপর এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে উড়োজাহাজটির সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তবে উড়োজাহাজে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণ কি এবং কেন সেটি বিধ্বস্ত হল তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পাকিস্তানে বাণিজ্যিক ফ্লাইট শুরু হওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই এ দুর্ঘটনা ঘটল।
ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বিকট শব্দ শুনে তিনি বাড়ির বাইরে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। কমপক্ষে চারটি বাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে। প্রচুর আগুন এবং ধোঁয়া উড়েছে। প্রতিবেশীদের বাড়িঘরেই আগুন জ্বলতে দেখেছেন তিনি। অবস্থা ছিল খুবই ভয়ঙ্কর।
এর আগেও পাকিস্তানে এমন অনেক বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে। ২০১০ সালে ইসলামাবাদে প্রাইভেট এয়ারলাইন এয়ারব্লু দুর্ঘটনায় বিমানের ১৫২ যাত্রীর সবাই নিহত হয়।
পাকিস্তানের ইতিহাসে সেটি ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা। এরপর ২০১২ সালে রাওয়ালপিণ্ডিতে খারাপ আবহাওয়ার মধ্যে বোয়িং ৭৩৭-২০০ দুর্ঘটনায় উড়োজাহাজটির ১২১ জন যাত্রী ও ৬ ক্রুর সবাই নিহত হয়।
২০১৬ সালে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ ইসলামাবাদে যাওয়ার পথে তাতে আগুন ধরে বিস্ফোরণ ঘটে নিহত হয় ৪৭ জন।