দাম,বাড়াতে তেল উৎপাদন কমাচ্ছে ওপেক ও মিত্ররা

অনলাইন ডেস্ক
দাম বাড়াতে জ্বালানি তেলের উৎপাদন কমাতে যাচ্ছে অর্গানাইজেশন অব দ্য পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ (ওপেক) ও এর মিত্ররা। আগের থেকে দিনে এক কোটি ব্যারেল তেল কম উৎপাদন করা হবে আসছে মে ও জুন মাসে।
বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ওপেকভুক্ত দেশ ও রাশিয়াকে নিয়ে গঠিত ওপেক প্লাস। তেলের দাম নিয়ে বৃহস্পতিবার দেশগুলো একটি ভিডিও কনফারেন্সে বৈঠক করে। যদিও রাশিয়া ও সৌদি আরবের মধ্যে চলমান মতবিরোধের জন্য আলোচনাটি জটিল হয়ে পড়ে। তবে ওপেক ও এর মিত্ররা দিনে ১ কোটি ব্যারেল উৎপাদন কমাতে রাজি হয়, যা বিশ্বের মোট সরবরাহের ১০ শতাংশ। আশা করা হচ্ছে, অন্য তেল উৎপাদনকারী দেশগুলো দিনে পাঁচ লাখ ব্যারেল তেলের উৎপাদন কমাবে।
প্রথমে আগামী মে ও জুন মাসে এক কোটি ব্যারেল করে কমানো হবে। ধীরে ধীরে এই পরিমাণ কমিয়ে আনা হবে। অর্থাৎ, জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত উৎপাদন কমানো হবে ৮০ লাখ ব্যারেল। পরে ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত কমানো হবে দৈনিক ৬০ লাখ ব্যারেল।
শুক্রবার এ বিষয়ে সৌদি আরবের নেতৃত্বে জি–২০ দেশগুলোর জ্বালানিমন্ত্রীরা বৈঠক করবেন। রাশিয়ার সম্পদ তহবিলের প্রধান ও মস্কোর শীর্ষ তেল আলোচকদের একজন কিরিল দিমিত্রিভ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা আশা করছি অন্য উৎপাদকেরাও এতে যোগ দেবে। আজ শুক্রবার জি–২০–এর বৈঠকের মধ্য দিয়েই তা হতে পারে।’
অন্যদিকে তেল উৎপাদন কমানোর বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি যুক্তরাষ্ট্র। তারা বলছে, তেলের দাম কমে যাওয়ায় তাদের উৎপাদন এমনিতেই কমে যাচ্ছে। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উৎপাদন না কমালে অবরোধ দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন সৌদি আরবকে।
ওপেক ও ওপেক প্লাসের এই সিদ্ধান্তের কারণে তেলের দাম বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। তেলের উৎপাদন কমাতে সৌদি আরব ও রাশিয়া একটি চুক্তি করতে যাচ্ছে, গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এমন বক্তব্যেই বিশ্ববাজারে ২০ শতাংশ বাড়ে দাম। প্রতি ব্যারেল তেলের দাম দাঁড়ায় ২৬ ডলার। এর আগে অবশ্য প্রতি ব্যারেলের দাম পড়তে পড়তে ২২ দশমিক ৫৮ ডলারে গিয়ে ঠেকে।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাড়ায় বিশ্ববাজারে তেলের চাহিদা কমে গেছে ব্যাপক। মার্চ শেষে ১৮ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে আসে তেলের দাম।
জ্বালানি তেলের বর্তমান বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও করণীয় নির্ধারণে ৫ই মার্চ থেকে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় বৈঠকে বসে ওপেক ও নন-ওপেক দেশগুলো। এতে সিদ্ধান্ত হয়, তেলের দাম বাড়াতে অপরিশোধিত তেলের উৎপাদন দিনে ১৫ লাখ ব্যারেল কমাবে তারা, যা বিশ্বের মোট সরবরাহের প্রায় ৩ দশমিক ৬ শতাংশ।
ওপেক আশা করছিল, রাশিয়া প্রতিদিন পাঁচ লাখ ব্যারেল উৎপাদন কমাতে সম্মত হবে। তবে এতে সম্মতি জানায়নি ওপেকের মিত্র জোট ওপেক প্লাসের নেতৃত্বে থাকা রাশিয়া। এ কারণে নতুন চুক্তি হওয়ার বিষয়টি ভেস্তে যায়।
এর প্রভাবে ব্যাপক দরপতন হয় তেলের দামের। এর মধ্যে আবার তেলের দাম কমায় সৌদি আরামকো। সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত এই কোম্পানি তেলের দাম তাদের মূল গ্রেড থেকে ২০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কমায়। ফলে শুরু হয় সোদি আরব ও রাশিয়ার মধ্যে তেলের ‘মূল্য–যুদ্ধ’।#

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন