|| বার্তা সারাবেলা ||
করোনাসময়ে হাজারো দুর্নীতির মাঝে সম্প্রতি এমনি আরেক দুর্নীতির জন্ম দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এই দুর্ণীতি করতে গিয়ে মার্কিন জনগণের করের ৭ দশমিক ৩ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়েছে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে। করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার জন্য কেনা হয়েছিল টেস্টটিউব। সরবরাহ করা হয়েছে প্লাস্টিকের এমন সব টিউব যাতে সোডাপানি বোতলজাত করা হয়। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, এগুলো কোনভাবেই পরীক্ষার কাজে ব্যবহার করা সম্ভব নয়।
সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানটির নাম ফিল্লাকিট এলএলসি। এই প্রথম ট্রাম্প প্রশাসনের কেন্দ্রীয় ঠিকাদার হিসেবে তালিকাভূক্ত হয়েছে।
তথ্যানুসন্ধানে দেখা গেছে, শুধু ফিল্লাকিটই নয়, করোনামহামারির শুরু থেকেই এ ধরণের ৩শ’র বেশী অনভিজ্ঞ ‘ফার্স্ট-টাইম কনট্রাক্টর’ প্রতিষ্ঠানকে স্বাস্থ্যসুরক্ষা সরঞ্জাম ও ওষুধ সরবরাহের কাজ পাইয়ে দেওয়া হয়েছে ট্রাম্প প্রশাসনের নির্দেশে। যার আর্থিক পরিমান দুই বিলিয়ন ডলারের বেশী এবং করোনা মোকাবেলায় কেন্দ্রীয় বাজেট বরাদ্দের ১৩ শতাংশ ।
![](https://i0.wp.com/www.sangbadsarabela.com/wp-content/uploads/2020/06/US-Purchase-01.jpg?w=1200&ssl=1)
রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তারা বলছেন, এই বোতলগুলো এমনভাবে তৈরি যাতে সোডাপানি চাপ ও তাপে বোতলজাত করা যায়। তবে এগুলো টেস্ট স্যাম্পল হিসেবে ল্যাবরেটরি বিশ্লেষনের জন্য উপযোগি না। তারা বলছেন, বোতলগুলো যদি সঠিক আকারেরও হতো, তারপরও এগুলো এমনভাবে প্যাকেট করার সময়ে কোন প্রকার স্বাস্থ্যবিধি মানেননি ফিল্লাকিট কর্মচারীরা।ফলে এগুলো আগে থেকেই জীবানু সংক্রমিত হয়ে আছে।
ফিল্লাকিটের সাবেক কর্মী তেরেসা গ্রিন বলছেন, “জীবানুমুক্ততো দূরে থাক এগুলোকে সাধারণভাবেও পরিস্কার করা হয়নি।” ফিল্লাকিটের এমন অব্যবস্থাপনায় হতাশ হয়ে দুই সপ্তাহ আগে কাজ ছেড়ে দিয়েছেন বিজ্ঞানের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক তেরেসা।
নিবন্ধিত হওয়ার মাত্র ছয়দিনের মাথায় গেল ৭ই মে ফিল্লাকিটের সঙ্গে চুক্তি করে ফেডারেল ইমারজেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি এফইএমএ। শুধু তাই নয়, একজন টেলিমার্কেটার হিসেবে ফিল্লাকিটের মালিক পল ওয়েক্সলার গেল দুই দশক ধরে ব্যবসায়িক প্রতারণার করে আসছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
প্রথম চুক্তিতেই প্রতিষ্ঠানটি ৩০ লাখ টিউব সরবরাহের সুযোগ পায়। যেগুলো এফইএমএ’র মাধ্যমে দেশের ৫০টি রাজ্যে পাঠানো হয়। চুক্তিতে এও বলা হয়, কোম্পানি যদি চুক্তির সব শর্ত পূরণ করে তাহলে আরো ৪০ লাখ টিউব সরবরাহের সুযোগ পাবে। যার আর্থিক মূল্য ১০ দশমিক ১৬ মিলিয়ন ডলার।
![](https://i0.wp.com/www.sangbadsarabela.com/wp-content/uploads/2020/06/Test-Tube-1.jpg?w=1200&ssl=1)
![](https://i0.wp.com/www.sangbadsarabela.com/wp-content/uploads/2020/06/Test-Tube-1.jpg?w=1200&ssl=1)
![](https://i0.wp.com/www.sangbadsarabela.com/wp-content/uploads/2020/06/Test-Tube-1.jpg?w=1200&ssl=1)
এসব টিউব সাধারণত সোডাপানি বোতলজাত করার কাজে ব্যবহার করা হয় বলে স্বীকার করেছেন ফিল্লাকিটের মালিক পল ওয়েক্সলারও। তবে তিনি এর থেকে বেশী কিছু বলতে রাজী হননি।
এদিকে নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, টেক্সাস ও নিউ মেক্সিকোর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা ফিল্লাকিটের টিউব ব্যবহার করতে পারছেন না। অন্য আরে তিনটি রাজ্যের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা এগুলো পেয়েছেন বটে, কিন্তু সেগুলো পরীক্ষাগারে সরবরাহ করেননি। অবশ্য এসব টিউব অন্য কোন কাজে ব্যবহার করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে এফইএমএ।
এ প্রসঙ্গে নিউ জার্সি স্বাস্থ্য বিভাগের মুখপাত্র জেনেল ফ্লেমিং বলেন, “আমরা এগুলো অন্যকোন কাজে ব্যবহার করা যায় কিনা তার চেষ্টা করছি।”
তথ্যসূত্র : প্রোপাবলিকা, নিউইয়র্কভিত্তিক সংবাদ সংস্থা