চীনের উইঘুর নিপীড়নকে গণহত্যা বললো যুক্তরাষ্ট্র

“আমি বিশ্বাস করি সেখানে গণহত্যা চলছে । আমরা উইঘুরদেরকে ধ্বংস করে দেওয়ার ধারাবাহিক চেষ্টা দেখতে পাচ্ছি।”

|| বার্তা সারাবেলা ||

চীনের শিনজিয়াং অঞ্চলে উইঘুরসহ অন্যান্য মুসলিম জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর চীন সরকার যে ধরণের নিপীড়ন চালাচ্ছে তাকে গণহত্যা এবং মানবতাবিরুদ্ধ অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার দেশটির পররাষ্ট্রবিভাগ এই ঘোষণা দিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এক বিবৃতিতে বলেছেন, “আমি বিশ্বাস করি সেখানে গণহত্যা চলছে । আমরা উইঘুরদেরকে ধ্বংস করে দেওয়ার ধারাবাহিক চেষ্টা দেখতে পাচ্ছি।”

ছবি: সংগৃহিত

পম্পেও অভিযোগ করে বলেন, চীনা কর্মকর্তারা তাদের দেশের অরক্ষিত জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে নির্মূল করার তৎপরতা চালাচ্ছেন এবং তাদের ওপর জোর জবরদস্তি করা হচ্ছে।

গেলো কয়েক মাসে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক আইনপ্রণেতা এবং আন্দোলনকর্মীদের অনেকেই চীনের উইঘুর নিপীড়নকে গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করবার জন্য বিশ্বসম্প্রদায়ের ওপর চাপ দিয়ে এসেছে।

ছবি: সংগৃহিত

বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার এমন চাপকে আমলে নিয়েছে কিনা তা নিদ্রিষ্টভাবে বলা না গেলেও এতে করে যে দুই দেশের সম্পর্ক আরো তেতো হলো তাতে কোন সন্দেহ রইল না। তারা এও বলছেন, চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এই প্রকাশ্য অভিযোগ দুই দেশের সম্পর্ককে আরও অবনতির দিকে ঠেলে দেওয়ার পট তৈরি করল। ট্রাম্প প্রশাসনের শেষ সময়ে চীনের বিরুদ্ধে এটিই সর্বশেষ পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রবিভাগ থেকে কোনও দেশের নৃশংস কর্মকাণ্ডের এমন অভিধা দেওয়ার ঘটনা নজিরবিহীন। এ পদক্ষেপের ফলে যুক্তরাষ্ট্র এখন নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের আওতায়ও চীনের বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারবে।

ছবি: সংগৃহিত

গত বছর বাইডেনও তার এক মুখপাত্রের মাধ্যম দিয়ে বলেছিলেন, বেইজিংয়ের নীতি ‘গণহত্যার’ সামিল। এখন যুক্তরাষ্ট্রের দেখাদেখি বিশ্বের অন্যান্য দেশ এবং আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানও সংখ্যালঘু মুসলিম নিপীড়নের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে চীনের সমালোচনা করা এবং চীনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও, পররাষ্ট্রদপ্তরের আইনজীবী ও অন্যান্য কর্মকর্তারা চীনের উইঘুর নিপীড়নকে ‘গণহত্যা’ হিসাবে গণ্য করার বিষয়টি নিয়ে কয়েকমাস ধরে বিতর্ক করেছেন। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের শেষ সময়ে এসেই বিষয়টি গতি পায়।

তথ্যসূত্র: দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস

সংবাদ সারাদিন