|| বিশ্ব সারাবেলা ||
এবারের ঈদে কোরবানি করতে পারছেন না ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের মুসলমানরা। ভারত সরকার ঈদে পশু জবাই নিষিদ্ধ করে বিষয়টি কঠোরভাবে দেখভাল করবার নির্দেশ দিয়েছে কাশ্মীর কর্তৃপক্ষকে। হিন্দু জাতীয়তাবাদী মোদি সরকারের এমন সিদ্ধান্ত মুসলিম অধ্যূষিত জম্মু কাশ্মীরে চলমান ক্ষোভবিক্ষোভের মাত্রাকে আরো বাড়িয়ে দেবে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গেলো বৃহস্পতিবার কাশ্মীর কর্তৃপক্ষকে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে জম্মু কাশ্মীরের বিশেষ স্বায়ত্বশাসন বাতিল করে মোদি সরকার। সেই থেকে হিমালয়সংশ্লিষ্ট এই অঞ্চলে কেন্দ্রীয় সরকারের সরাসরি শাসন চলছে। নেই কোন রাজনৈতিক স্বাধীনতা। নেই ধর্মীয় ও সামাজিক সুযোগ।
দেশটির অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার ল’ এর উল্লেখ করে পশু জবাইকে অবৈধ অভিহিত করেছে মোদি সরকারের অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার বোর্ড অব ইন্ডিয়া। এই আইন অমান্যকারীদে বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।
হিন্দুদের কাছে গরু এমনিতেই পবিত্র এবং এই বোধ থেকেই কাশ্মীরসহ ভারতের অনেক রাজ্যেই গরু হত্যা নিষিদ্ধ। কিন্তু এবারই প্রথম গরু ছাড়াও অন্য যে কোন পশু জবাইও নিষিদ্ধ করা হলো।
এদিকে মুসলমানদের এমন ধর্মীয় উৎসবে যেখানে পশু কোরবানি করা অপরিহার্য একটি অনুসঙ্গ সেখানে সরকারের জনবিরুদ্ধ এমন নির্দেশে তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছে কাশ্মীরের মুসলিম ধর্মীয় সংগঠনগুলোর জোট মুত্তাহিদা-ই-উলেমা। ২১শে জুলাই থেকে ২৩শে জুলাই মুসলমানরা উদযাপন করবে ঈদ-উল-আযহা।
মুত্তাহিদা-ই-উলেমা জোটের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নবী ইব্রাহিম (আ.) এর সম্মানে পশু কোরবানি করা এই ঈদের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
সরকারের এমন সিদ্ধান্ত মুসলমানদের কাছে কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় জানিয়ে মুত্তাহিদা নেতারা বলেছেন, তা না হলে মুসলিম জনগোষ্ঠি সরকারের এই নির্দেশ অমান্য করেই ঈদ উদযাপনে পশু কোরবানি করতে বাধ্য হবে মুসলিম জনগোষ্ঠি।
বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যামেও সমালোচনার কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। নাম প্রকাশ না করবার শর্তে রাজধানী শ্রীনগরের এক দোকানদার জানিয়েছেন, এই নির্দেশ কাশ্মীরে চলমান মুসলমানবিরুদ্ধ মোদিনীতির আরও একটি অন্যায় সংযোজন। আর কাশ্মীরের মানুষও সরকারের এমন মুসলমানবিরুদ্ধ নীতিতে যারপর নাই ক্ষুব্ধ।
সংবাদসূত্র: আল আরাবি.কো.ইউকে