কাতারে বিক্ষুব্ধ হচ্ছেন অভিবাসী শ্রমজীবীরা

|| বার্তা সারাবেলা ||

করোনাসময়ে বেতনভাতা না পাওয়াসহ নির্যাতন, এমন কি বর্ণবৈষমের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে কাতারের অভিবাসী শ্রমিকরা। পরিস্থিতি সামালে অভিযুক্ত কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে দেশটির সরকার।

করোনাদুর্যোগ আর তেলের দাম পড়ে যাওয়ায় দেশটির অনেক কোম্পানিই বেতনভাতা বন্ধ করে দিয়েছে অভিবাসী শ্রমিকদের। এই অবস্থায় নানাজায়গায় ধরণা দিয়ে প্রতিকার না পেয়ে শেষ পর্যন্ত বিক্ষোভকেই বেছে নিয়েছে তারা।

সম্প্রতি রাজধানী দোহার এমশেইরেব এলাকাতে বিক্ষোভ করে একশ’র বেশী শ্রমিক। এ সময়ে পুলিশের উপস্থিতিতেই তারা দাবির পক্ষে হাতে তালি দিয়ে শব্দ করে এবং স্লোগান দেন।

এদিকে বিক্ষোভের তথ্য স্বীকার করে কাতারের শ্রম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা অভিযুক্ত কোম্পানিগুলোর মালিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। এবং শিগগিরই সবাইকে বেতন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি কোম্পানির বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে শ্রম মন্ত্রণালয়।

উপসাগরীয় অন্য অনেক আরব দেশের মত কাতারও গৃহস্থালি থেকে শুরু করে নির্মাণকাজ ও অন্যান্য হোয়াইট কালার জবের জন্য বিদেশি শ্রমিকদের ওপর নির্ভরশীল।

জাতিসংঘের তথ্য বলছে, উপসাগরীয় সহযোগিতা সংস্থাভূক্ত ছয়টি রাষ্ট্র (গালফ কোঅপারেশন কাউন্সিল) বাহরাইন, কুয়েত, ওমান, কাতার, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমীরাত সেইসঙ্গে জর্ডান ও লেবাবন মিলিয়ে এসব দেশগুলোতে প্রায় সাড়ে তিন কোটি অভিবাসী শ্রমিক কাজ করছে।

বিশেষ করে আসছে ফুটবল বিশ্বকাপকে সামনে রেখে অনেকগুলো মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে কাতারের মোট জনসংখ্যার ৯০ শতাংশই এখন অভিবাসী কর্মজীবী। তথ্য বলছে, অভিবাসী এসব কর্মজীবীরা তাদের নিয়োগকর্তাদের কাছ থেকে প্রায়শই বিভিন্ন ধরণের আর্থিক বৈষম্য, বঞ্চনা, প্রতারণা, এমনকি অনেক সময়ে শারীরিক নির্যাতন, ও বরর্ণবৈষমের শিকার হয়ে থাকেন।

করোনার এই সময়ে অনেক কর্মজীবী সংক্রমিত হলেও তাদের দেখভালের কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না তাদের নিয়োগকর্তারা। অনেকেই পাচ্ছেন না বেতনভাতা।

শুধু কাতারেই নয়, বিক্ষোভ হয়েছে কুয়েতেও। সেখানে করোনায় আটকে পড়া মিশরীরা বাড়ি ফেরার দাবিতে বিক্ষুব্ধ হলে তাদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ।

বাড়ি ফেরার দাবিতে নিজ দেশের দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ করতে গিয়ে সৌদি আরবে গ্রেফতার হয়েছেন এক মিশরী। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব অসন্তোষের বেশীর ভাগই হচ্ছে বেতনভাতার দাবিতে।

সংবাদসূত্র: বার্তা সংস্থা

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন