করোনা রুখতেও অনুসরনীয় কেরালার জনবান্ধব রাষ্ট্রব্যবস্থা

ভারতের একটি প্রদেশ কেরালা। দীর্ঘদিন ধরে জনবান্ধব সরকার রাজ্যটির দেখভালের দায়িত্বে। হয়ে উঠেছে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র। জনবান্ধব স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও উন্নয়নের মডেল এখন কেরালা। এই কেরালা কীভাবে করোনাদুর্যোগ মোকাবেলা করছে সেই কথাই উঠে এসেছে প্রাদেশিক স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শায়লাজার উপস্থাপনে…

|| সারাবেলা ডেস্ক ||
ভারতের দক্ষিনের একটি রাজ্য কেরালা। গেল কয়েক দশক ধরে জনসম্পৃক্ত শাসন পদ্ধতির কারণে ভারতসহ গোটা বিশ্বের কাছে অনন্য এক নজির হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। সবশেষ বৈশ্বিক বিপর্যয় করোনাভাইরাস সংক্রমণের রাশ টানতেও কেরালা এখন অনেকের কাছে অনুসরণীয়। কীভাবে এই সাফল্য তারা অর্জন করতে পেরেছে তাই আরবীয় বার্তা সংস্থা গালফ্ নিউজকে জানিয়েছেন রাজ্যেও স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শায়লাজা।
গালফ : বিশ্বজুড়ে করোনাদুর্যোগ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যসুশ্রষায় ‘কেরালা মডেল’ সবার মনোযোগ কাড়তে পেরেছে। আসলে এই মডেলটি কি? এর সঙ্গে কী কেরালার উন্নয়ন মডেলের কোন সম্পৃক্ততা রয়েছে।
শায়লাজা : আমরা খুবই আনন্দিত এই কারণে যে, কেরালার স্বাস্থ্যসুশ্রষার পথপদ্ধতি এবং কোভিড-১৯ দুর্যোগ মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের পদক্ষেপ বিশ্বজুড়েই প্রশংসা পেয়েছে। সত্যি কথা বলতে কি, এটা সম্ভব হয়েছে, কারণ এই রাজ্যে দীর্ঘ বছর ধরে একটি কার্যকর জনস্বাস্থ্য নেটওয়ার্ক চালু রয়েছে। বর্তমান সরকার রাজ্যের জনস্বাস্থ্য খাতকে সুরক্ষিত করতে স্বাস্থ্যখাতসহ অন্যান্য খাতে যেসব ব্যতিক্রমি ও জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে চলেছে, তার কারণেই আমরা প্রাণঘাতি এই ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছি। আসলে কেরালার রয়েছে একটি অনন্য ও বাস্তবসম্মত স্বাস্থ্যসুশ্রষা পদ্ধতি যা শুধু জনসম্পৃক্তই নয় সামগ্রিকও বটে।
রাজ্যের পাবলিক হেলথ সিস্টেমের প্রথম পর্যায়ে রয়েছে প্রাইমারি হেলথ সেন্টার ও ফ্যামিলি হেলথ সেন্টার। স্থানীয় পর্যায়ের এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শুধু সাধারন অসুখ-বিসুখের চিকিৎসাই দেওয়া হয় না। এসব কেন্দ্রে টিকা দেওয়ার মত বিশ্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা, মানুষকে রোগ প্রতিরোধ এমনকি স্বাস্থ্যসম্মত জীবনপদ্ধতি সম্পর্কেও ধারণা দেওয়া হয়। গ্রাম এলাকায় প্রতি ৩০ হাজার মানুষের জন্য এবং শহরে প্রতি ৫০ হাজার মানুষের জন্য একটি করে এমন স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীরা সমাজের প্রত্যেকটি মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন।
দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছে কমিউনিটি হেলথ সেন্টার, তালুক হাসপাতাল, জেলা হাসপাতাল ও বিশেষায়িত চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে এমন জেনারেল হাসপাতাল। আর টারসিয়ারি অর্থাৎ উচ্চ পর্যায়ের মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং আঞ্চলিক ক্যান্সার সেন্টারের মত নির্দিষ্ট রোগের গবেষণা ও চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে এমন হাসপাতাল।
এছাড়াও অবকাঠামো ও সেবাসুবিধার উন্নয়নের মাধ্যমে সরকারি হাসপাতালগুলো আরো বেশী রোগীবান্ধব করতে ‘আরদ্রাম’ নামে একটি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে চলেছে সরকার। বহির্বিভাগের রোগীরা যাতে কমসময়ে চিকিৎসা সুবিধা পায় এবং তাদের প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলো করিয়ে নিতে পারে সেটা নিশ্চিত করতেই ‘আরদ্রাম’ কাজ করছে। শুধু তাই নয়, আরদ্রাম প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে ১৭০টি পাবলিক হেলথ সেন্টারকে ফ্যামিলি হেলথ সেন্টারে রুপান্তরিত করা হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে আরো ৫০৪টি পাবলিক হেলথ সেন্টারকে ফ্যামিলি হেলথ সেন্টারে পরিনত করবার কাজ চলছে। আরদ্রামের আওতায় ইতোমধ্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মত সুবিধাকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কর্মসুচিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
রাজ্যের মোট ব্যয়ের ৫ দশমিক ৬ শতাংশ অর্থ মানুষের স্বাস্থ্যসুশ্রষসা ও পরিবার কল্যাণ খাতে খরচ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই জননন্দিত ‘কেরালা উন্নয়ন মডেল’ শিক্ষা, স্বাস্থ্যসুশ্রষার মত সামাজিক খাতে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। পাশাপাশি সম্পদ পুনর্বন্টন কর্মসূচির মাধ্যমে রাজ্যের সামাজিক উন্নয়ণ সূচক এখন আর্থিক দিক থেকে উন্নত দেশগুলোর তুলনায় অনেক বেশী।
গালফ: অতীতেও অনেক রাজনৈতিক সরকার এই ধরনের কর্মসূচি নিয়েছে। কিন্ত আপনাদের এমন সাফল্যের পেছনে ভূমিসংস্কারের ভূমিকা কী সবথেকে বেশী নয়?
শায়লাজা : অবশ্যই, যেসব কারণে আজকে কেরালা একটি উন্নত কল্যাণ রাষ্ট্র হয়ে উঠেছে তার মধ্যে ভূমি সংস্কার বড় একটি কারণ। ভূমির জনবান্ধব বন্টন করা হয়েছে বলেই আজকের কেরালা একটি জনরাষ্ট্র। সত্যি বলতে কি, ভারতের স্বাধীনতার সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মানুষ যে স্বপ্ন ও আশা লালন করেছিল, তা আর কিছুই নয়, তা হচ্ছে সম্পদের সাম্যধর্মী বন্টন। বলতে পারেন, মুক্তিসংগ্রামীদের সেই আকাঙ্খাজাত রাষ্ট্রই হচ্ছে আজকের কেরালা। যা সম্ভব হয়েছে ই.এম.এস নামবুদিরিপাদের নেতৃত্বে কেরালার প্রথম জননির্বাচিত সরকারের নেওয়া ভূমি সংস্কার, রাষ্ট্রিয় অর্থে পরিচালিত সর্বজনীন শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসুশ্রষা ব্যবস্থার মত সামাজিক উন্নয়ন কর্মসূচির কারণেই।
গালফ : আমরা জানি, সংকট সামাল দিতে কেরালা ইতোমধ্যেই উল্লেখযোগ্য এবং অনুসরনীয় কিছু কাজ করেছে। সাম্পতিক জনবক্তৃতায় আপনি বলেছেন, উহানে করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরুতেই আপনি ও আপনার সরকার এক ধরনের যুদ্ধাবস্থায় চলে যান এবং কেরালাকে রক্ষা করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেন। সে নিয়ে কিছু বলবেন কি?
শায়লাজা : আসলে করোনা মোকাবিলায় প্রথম থেকেই আমরা বেশ কিছু বহুমূখি কৌশল নিয়েছি।
ক) করোনার উপসর্গ রয়েছে কি না তা জানতে রাজ্যের সকল প্রবেশমুখে পরীক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষাশেষে ধরণ অনুযায়ী কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশন, যার যা দরকার সেখানে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। একটা নির্দিষ্ট সময় পরে যাদের সংক্রমণের মাত্রা বেশী তাদেরকে ২৮ দিন এবং অন্যদেরকে ১৪ দিনের সেলফ-কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে।
খ) শুরু থেকেই রাজ্যের সকল জেলা সদরে নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র বসানো হয়েছে। যেখানে রাতদিন সবাই সজাগ রয়েছে। গোটা রাজ্যকে একপ্রকার কঠোর মনিটরিংয়ের আওতায় আনা হয়েছে। ভুল খবর বা গুজব ঠেকাতে রাজ্যের সত্য অবস্থা জানিয়ে প্রতিদিনই মিডিয়া ব্রিফিং করা হচ্ছে। আর এসবই সরাসরি দেখভাল করছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রী ও স্বাস্থ্য সচিব।
গ) জনসচেতনা কর্মসূচির আওতায় জনদূরত্ব, ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা, মাস্ক ব্যবহার, হাত ধোয়াসহ সকল স্বাস্থ্য নির্দেশনা মেনে চলতে মানুষকে পরিস্কার বার্তা দেওয়া হচ্ছে। জনদূরত্ব মেনে চলতে আমরা ‘ব্রেক দ্য চেইন’ বলে একটি স্লোগান প্রচার করছি। এই স্লোগান যেভাবে মানুষ সাড়া দিয়েছে তাতে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় জনইচ্ছারই প্রতিফলন ঘটেছে।
গালফ : জনপর্যায়ে বিস্তৃত কেরালার স্বাস্থ্যসুবিধা ইতোমধ্যেই অন্যদের জন্য অনুকরণীয় হয়ে উঠেছে। কীভাবে এই ধরণের জনবান্ধব স্বাস্থ্যনীতি করা সম্ভব হলো।
শায়লাজা : একসময়ের ত্রাভানকোর, কোচিন ও মালাবার নিয়েই আজকের এই কেরালা’র রয়েছে জনস্বাস্থ্য সুশ্রষার এক সমৃদ্ধ ইতিহাস। যেখানে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের গড়ে তুলে নির্দিষ্ট এলাকার গরীব মানুষদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হতো। কেরালা রাজ্য যখন গঠিত হলো তখনও এই সেবার পরিধি ছিল খুবই সীমিত। কিন্তু ১৯৫৭ সালে প্রথম স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রাথমিক পর্যায়ের এসব স্বাস্থ্য কেন্দ্র বাড়াতে সমন্বিত উদ্যোগ নেয়। একই সঙ্গে হাসপাতালগুলোকে আধুনিক ও উন্নত চিকিৎসা সুবিধায় সমৃদ্ধ করতে থাকে। আসলে সেইসময়ের সরকার শুরু থেকেই এক ধরণের গণমূখি স্বাস্থনীতি গ্রহণ করে। প্রথম সেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় খুব কম সময় পেলেও, যে ভিত তারা নির্মাণ করে যায়, পরের সরকারগুলোর কেউনি তা নাকচ করে দেয়নি। বরং রাজ্যের বাম সরকারের ধারাবাহিকতায় তা আরো শক্ত ও সংহত ভিত্তি পেয়েছে। হয়েছে বিস্তৃত ও আধুনিক।
গালফ : নিপাহ ভাইরাস মোকাবিলায় কেরালার যে সাফল্য রয়েছে সেই অভিজ্ঞতা কি কোভিড-১৯ রুখতেও সহায়তা করবে? তাছাড়া দুই ধরণের এমন স্বাস্থ্যসংকটের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কোন তফাৎ রয়েছে কি?
শায়লাজা : এটা ঠিক যে, নিপাহ ভাইরাস মোকাবিলা করবার মধ্য দিয়ে আমরা যথেষ্ট প্রশিক্ষিত হতে পেরেছি। কিন্তু নিপাহ আর কোভিড-১৯ এ দুটোর প্রাদুর্ভাবের মধ্যে মৌলিক তফাৎ রয়েছে। নিপাহ’র থেকে করোনার সংক্রমণমাত্রা অনেক বেশী। সংক্রমণের মাত্রা ও বিস্তৃতির ক্ষমতা কম থাকলেও করোনার থেকে নিপাহ ছিল অনেক বেশী ভয়ঙ্কর। তবে নিপাহ’র সংক্রমণ দুটি জেলায় সীমিত ছিল। তাই আমাদেরকে খুব বেশী বেগ পেতে হয়নি। দুটি জেলা অবরুদ্ধ করেই সেটা আমরা সামাল দিতে পেরেছিলাম। তাছাড়া নিপাহ’র ক্ষেত্রে বাইরের কোন রাষ্ট্র থেকে সংক্রমিত হওয়ার কারণ ছিল না। কিন্তু করোনার সংক্রমণ এক প্রকার মহামারি। এবং অনেক ক্ষেত্রে এই ভাইরাস অন্যদেশ থেকে আসা মানুষের মাধ্যমেও ছড়াচ্ছে।
তবে এটা ঠিক যে, নিপাহ সামাল দিতে গিয়ে আমাদের যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, সেটা কাজে লাগানোয় আমরা করোনায় মৃতের হার এখন পর্যন্ত এক শতাংশের নিচে রাখতে পেরেছি। যা কি না ভারতের অন্য রাজ্য এমনকি বিশ্বের অনেক রাষ্ট্রের তুলনায় একটি রেকর্ড বলা যায়।
গালফ : বিশ্বজুড়েই অনেকে করোনা সংক্রমণের উর্ধ্বমূখি রাশ টেনে ধরার কথা বলছেন। এক্ষেত্রে আপনারা কি ভাবছেন। মহামারি সামাল দেওয়াতো একটা দূরূহ ব্যাপার। সেক্ষেত্রে এমন কৌশল কতটা কাজে দেবে বলে মনে করেন?
শায়লাজা : মহামারি সামাল দেওয়া অবশ্যই একটি চ্যালেঞ্জ। তার ওপর যেখানে নেই কোন ওষুধ বা টিকার মত প্রতিষেধকা। উপরন্ত সবার মধ্যে রয়েছে সংক্রমণের শঙ্কা। দ্রুত ছড়াচ্ছে এই ভাইরাস। তবে সবথেকে বড় হুমকি হচ্ছে, স্বাস্থ্যব্যবস্থা যদি সংক্রমণ সামাল দেওয়ার মত যথেষ্ট না হয়, তাহলে তো সবকিছুই চলে যাবে নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তাই এমন ঝুঁকি বা হুমকি যাই বলি না কেন, সেটা মোকাবিলায় দরকার সঠিক পরিকল্পনা। যেটার মাধ্যমে সংক্রমণের রাশটাকে টেনে ধরা যায়।
গালফ : সত্যি বলতে কি, চূড়ান্ত খারাপ পরিস্থিতিতো এখনো আসেনি। চলছে দ্বিতীয় পর্যায়। এরই মধ্যে যথেষ্ট ভয় পাইয়ে দেওয়ার মত খবরও আসছে সংবাদমাধ্যমে। সে ক্ষেত্রে আপনারা কি ভাবছেন?
শায়লাজা : আমরা কিন্তু এখনো প্রথম পর্যায়ের ধাক্কা সামলে উঠতে পারিনি। তাই দ্বিতীয় পর্যায় নিয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, তাতে করে আমাদেরকে এই চ্যালেঞ্জ সামাল দেওয়ার মত যথেষ্ট রসদ ও ব্যবস্থা রাখতেই হবে।
গালফ : এবারে আপনার নিজের সম্পর্কে কিছু বলুন। ছিলেন বিজ্ঞানের শিক্ষক। এখন মন্ত্রী।
শায়লাজা : আমি জন্মেছি ১৯৫৬ সালের ২০শে নভেম্বর কান্নুর জেলায়। পড়েছি কর্ণাটকার পাজহাসি রাজা এন এস এস কলেজ, মাত্তান্নুর ও ভিসভেসভারাইয়া কলেজে। ইন্টারমিডিয়েট লেভেলে পড়েছি বায়লোজি নিয়ে। পরে কেমিস্ট্রি, ফিজিক্স ও ম্যাথামেটিক্স নিয়ে গ্রাজুয়েশন করেছি। শিক্ষকতা করেছি শিবরামপুর হাই স্কুলে। ২০০৪ সালে শিক্ষকতা ছেড়ে হয়ে যাই পুরোদস্তুর রাজনৈতিক কর্মী। এখন কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া’র (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। #

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন