|| অন্যদেশ ডেস্ক ||
যে কোন সংকটেই খাড়ার ঘা টা আসে কর্মী শ্রমিকদের ওপর। আর সে সংকটটা আর্থিক হলেতো কথাই নেই। করোনাভাইরাসে বিশ্ব আজ অবরুদ্ধ। মানুষের চলাফেরা থেকে কলকারখানা আর অফিস-আদালত সবটাই অচল। কোন কিছু চলছে না। এসব চলছে না’এর খবর করছে যে সংবাদমাধ্যম তাতেও আঘাত করেছে করোনার আর্থিক অভিঘাত। মালিকরা বলছেন, বিজ্ঞাপননির্ভর এই খাতটির এখন বন্ধ হওয়ার উপক্রম।
বিজ্ঞাপন কমে যাওয়ার কথা বলে ইতোমধ্যেই ভারতের সংবাদপত্র শিল্প মালিকরা ছাঁটাই করতে শুরু করেছেন। কমিয়ে দিচ্ছেন বেতন। দেশটির বড় সংবাদপত্র ছাপিয়ে প্রতিষ্ঠান দ্য টাইমস গ্রুপ ও এবিপি গ্রুপ ইতোমধ্যেই তাদের নগদ অর্থ সংকটের কথা জানিয়েছে।
এবিপি গ্রুপের প্রধান নির্বাহি ডি ডি পুরকায়স্থ বলেন, ‘বিজ্ঞাপন থেকে আমাদের আয় প্রায় শুন্যের কোঠায় এসে ঠেকেছে। অথচ আগে আমাদের মোট রাজস্বের ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ আসত এই বিজ্ঞাপন থেকেই। এই গ্রুপ থেকে ভারতের শীর্ষ প্রচারসংখ্যার ইংরেজি দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ ও বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা প্রকাশিত হয়।
অন্যদিকে টাইমসের এক কর্মকর্তা জানান, বিজ্ঞাপন কম আসায় বিশ্বের সর্বাধিক প্রচারসংখ্যার ইংরেজি দৈনিক দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার পৃষ্ঠাসংখ্যা সাপ্লিমেন্টসহ ১৬তে নামিয়ে নিয়ে এসেছে। যা আগে ৪০ পৃষ্ঠার বেশী ছাপা হতো।
টাইমস এ সপ্তাহেই তার রবিবাসরীয় সাময়িকী লে অফ ঘোষণা করেছে। এতে কাজ করতেন এমন দু’জন সাংবাদিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এতথ্য জানিয়ে বলেছেন, অন্যরা আতঙ্কে রয়েছেন কখন জানি তাদেরকেও চাকরি হারাতে হয়।
নাম না জানানোর শর্তে টাইমস গ্রুপের একজন ব্যবসায় সাংবাদিক বলেন, ‘টেনশনতো একটা আছেই। প্রার্থনা ছাড়া আর কিই বা করার আছে। কে জানে কি হবে, তবে বেতন যে কমছে সে ব্যাপারে সবাই নিশ্চিত।
তবে এসব নিয়ে কোন কথা বলতে চাইছেন না টাইমস গ্রুপ।
এরই মধ্যে করোনা মোকাবিলায় ভারতে লকডাউন বেড়েছে ৩রা মে পর্যন্ত। দেশটিতে এখন অবধি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ১২ হাজার এবং মারা গেছেন ৪শ’র বেশী মানুষ। সরকার জানিয়েছে, ২০শে এপ্রিলের পর কিছু শিল্পপ্রতিষ্ঠান খোলার অনুমতি দেওয়া হতে পারে।
এদিকে আরেক শীর্ষ স্থানীয় প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান দ্য হিন্দুস্তান টাইমস কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, তারা ৫ থেকে ১৫ শতাংশ বেতন কমানোর দিকেই এগুচ্ছে।
পিচ ম্যাডিসনের বিজ্ঞাপন সম্পর্কিত রিপোর্ট বলছে, গেল বছরে ভারতীয় কোম্পানিগুলো প্রায় ৯শ কোটি ডলার বিজ্ঞাপন খাতে খরচ করেছে। যার মধ্যে প্রিন্ট মিডিয়ায় দেওয়া হয়েছে ২শ’ ৬০ কোটি ডলার।
এই পরিস্থিতিতে আসছে ছয় থেকে সাত মাসে দুইশ’ কোটি ডলার ক্ষতির আশঙ্কা করছে দেশের এক হাজারটি প্রকাশান প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্বকারী সংস্থা ভারতীয় সংবাদপত্র সোসাইটি।ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সংস্থাটি সরকারি বিজ্ঞাপনের মূল্যহার ৫০ শতাংশ বাড়াবার দাবি করেছে।
প্রায় একশ’ বছরের পুরনো সংবাদপত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এরইমধ্যে অনেক কর্মীর বেতন ৩০ ভাগ কমিয়ে দিয়েছে। আরো কমানো হতে পারে বলে সতর্কও করেছে প্রতিষ্ঠানটির কর্তারা। সদ্য জারি করা এক নোটিশে বলা হয়েছে, ‘পরিস্থিতি যদি এমনই চলতে থাকে তাহলে সংকট সামাল দিতে বেতন আরো কমাতে হতে পারে।
ভারতের সর্বাধিক প্রচারসংখ্যার হিন্দি পত্রিকা দৈনিক ভাস্কর গ্রুপ ইতোমধ্যেই তাদের এক হাজার কর্মচারীর বেতন নানা পর্যায়ে সমন্বয় করেছে। প্রতিষ্ঠানটির মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান রবি গুপ্ত বলেছেন, ‘পরিস্থিতি সামাল দিতে এছাড়া আর কোন উপায় তাদের কাছে নেই।’#
![](https://i0.wp.com/sangbadsaradin.net/wp-content/uploads/2021/08/kabul-airport-attack-270821-01.jpg?fit=300%2C188&ssl=1)