করোনাসংক্রমণ বাড়ায় ফের বন্ধ সিউলের স্কুল

দক্ষিণ কোরিয়ার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আড়াই কোটি মানুষের শহর সিউলের শিক্ষার্থীরা এখন থেকে অনলাইনে ক্লাস করবে; তবে ডিসেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে যাওয়া হাই স্কুলের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীরা এ নির্দেশনার বাইরে থাকবে।

|| সারাবেলা ডেস্ক ||

করোনাভাইরাস সংক্রমণমাত্রা বাড়ায় ফের বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলের সব স্কুল ও কিন্ডারগার্টেন। গত দুই সপ্তাহে বৃহত্তর সিউলের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২০০ কর্মী ও শিক্ষার্থীর দেহে প্রাণঘাতী ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়ার পর কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

স্কুল ও কিন্ডারগার্টেন বন্ধ হলেও দূরশিক্ষণ কার্যক্রম ১১ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে, বলেছে দক্ষিণ কোরিয়ার শিক্ষা মন্ত্রণালয়। দেশটিতে শিগগিরই ফের সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি দেখা যেতে পারে বলে স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্তৃপক্ষ সতর্কও করেছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আড়াই কোটি মানুষের শহর সিউলের শিক্ষার্থীরা এখন থেকে অনলাইনে ক্লাস করবে; তবে ডিসেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে যাওয়া হাই স্কুলের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীরা এ নির্দেশনার বাইরে থাকবে।

শিক্ষার্থী সংখ্যা ৬০ এর কম এমন স্কুল ও বিশেষায়িত শিক্ষার স্কুলগুলোকে মন্ত্রণালয়ের এ নির্দেশনা মানবে কি মানবে না সে বিষয়ে তাদেরকেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কোরিয়া টাইমস।

শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমতে থাকায় চলতি বছরের ২০শে মে থেকে ১লা জুনের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার বেশিরভাগ স্কুলই খুলে দেওয়া হয়েছিল। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের টালি অনুযায়ী, বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ায় ১৭ হাজার ৯৪৫ জনের শরীরে নতুন করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে; প্রাণঘাতী এ ভাইরাস এরই মধ্যে দেশটির ৩১০ জনের প্রাণও কেড়ে নিয়েছে।

ভাইরাসের সংক্রমণ দীর্ঘদিন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারায় কিছুদিন আগেও দক্ষিণ কোরিয়াকে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় অন্যতম সফল দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হতো; কিন্তু সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে দেশটির বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে বৃহত্তর সিউল অঞ্চলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে দেখা যাচ্ছে।

মঙ্গলবার কর্তৃপক্ষ দেশটিতে আরও ২৮০ জনের দেহে প্রাণঘাতী ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়ার কথা জানিয়েছে; এ নিয়ে টানা ১২তম দিন দক্ষিণ কোরিয়ায় তিন অংকের সংখ্যার শনাক্ত রোগী মিলল।

নতুন গুচ্ছ সংক্রমণের অধিকাংশের সঙ্গেই বেশ কয়েকটি ডানপন্থি প্রোটেস্টান গির্জার সংযোগ পাওয়া গেছে; গির্জাগুলোর সদস্যরা সপ্তাহখানেক আগে সিউলে একটি বিশাল শোভযাত্রাও করেছিলেন।

পরিস্থিতি মোকাবেলায় সিউলের কর্তৃপক্ষ প্রথমবারের মতো জনসমাগম হয় এমন বদ্ধ ও খোলামেলা জায়গায় সবাইকে মাস্ক পরার নির্দেশনা দিয়েছে। গির্জা, নৈশ ক্লাব ও কারাওকে বার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

সংক্রমণ আরও বাড়লে কঠোর সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার নির্দেশনা দেওয়া হবে বলে সতর্ক করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার। তেমনটা হলে মহামারী শুরুর পর দেশটিতে এবারই প্রথম অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন