|| বার্তা সারাবেলা/রয়টার্স ||
ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি দ্বীপে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে এখন পর্যন্ত ৪২ জন। আহত হয়েছেন কয়েকশ মানুষ। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়া মৃতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। বিস্তর এলাকাজুড়ে ধ্বংসস্তুপের নিচে আরও অনেকে চাপা পড়ে আছেন। ভূমিকম্পের আফটার শক তথা ধারাবাহিক কম্পন আরো হতে পারে এবং তা সুনামি ডেকে আনতে পারে বলে সতর্ক করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত একটার কিছু সময় পর রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পের উৎস ছিল দেশটির মাজেনি শহরের ৬ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে, ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সাত সেকেন্ডের এই ভূমিকম্প এবং একের পর এক পরাঘাতে ৩শ’ঘরবাড়ি, দু’টি হোটেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ধসে পড়ে একটি হাসপাতাল এবং প্রাদেশিক গভর্নরের কার্যালয়।
এসব জায়গায় ধ্বংসস্তুপের নিচে কিছু মানুষ চাপা পড়ে আছে বলে রয়টার্সকে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কয়েক জায়গায় ভূমিধস হয়েছে, বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে বিভিন্ন এলাকায়, সেতু ক্ষত্রিগ্রস্ত হওয়ায় সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে। ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ মোকাবেলা সংস্থা প্রাথমিকভাবে মাজেনি শহরে চারজনের মৃত্যু এবং ৬৭৩ জনের আহত হওয়ার খবর দেয়। পরে ধীরে ধীরে আশপাশের এলাকা থেকেও হতাহতের খবর আসতে থাকে।
দেশটির জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলা সংস্থা শুক্রবার সন্ধ্যায় এক প্রতিবেদনে বলেছে, ৪২ জন মারা গেছেন। তাদের বেশিরভাগই মামুজু এলাকার। আর বাকিরা পাশের মাজেনি এলাকার মানুষ। আহত হয়েছেন ৮২০ জনেরও বেশি মানুষ।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা এবং সেতু মেরামতের পাশাপাশি জরুরি ভিত্তিতে তাঁবু, খাবার ও চিকিৎসা সরঞ্জাম পাঠানো প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন পশ্চিম সুলাওয়েসির প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র সফরউদ্দিন। রাত দেড়টার দিকে ওই ভূমিকম্পের পর কোনও সুনামি সতর্কতা জারি না হলেও আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকে অপেক্ষাকৃত উঁচু এলাকায় সরে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আসা ছবিতে দেখা যায়, ধসে পড়া ভবনের নিচে চাপা পড়া একটি শিশুকে উদ্ধারের জন্য মানুষ খালি হাতে ধ্বংসস্তূপ সরানোর চেষ্টা করছে। এর কয়েক ঘণ্টা আগে বৃহস্পতিবার ইন্দোনেশিয়ার একই জেলায় ৫ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে বেশ কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ইন্দোনেশিয়ার ‘মিটিরিওলজিক্যাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিকস এজেন্সি’ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় এরকম কয়েক দফা ভূমিকম্প হয়েছে সেখানে। সামনে আরও শক্তিশালী পরাঘাত আসতে পারে, যা সুনামিরও শঙ্কা তৈরি করতে পারে।
২০১৮ সালে সুলাওয়েসির পালু শহরে ৬ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পের পর সুনামি দেখা দেয়। ওই ঘটায় কয়েক হাজার মানুষ মারা যায়। আর ২০০৪ সালে সুমাত্রায় ৯ দশমিক ১ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর যে সুনামি দেখা দিয়েছিল, তাতে ইন্দোনেশিয়ার পাশাপাশি শ্রীলঙ্কা, ভারত, থাইল্যান্ডসহ কয়েকটি দেশের ২ লাখ ৩০ হাজার মানুষ মারা যায়।
