|| অন্যদেশ ডেস্ক ||
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়াবহতার মধ্যেই ‘আবার জেগে ওঠো যুক্তরাষ্ট্র’ এই স্লোগান নিয়ে হাজির হলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গেল বৃহস্পতিবার তিনি করোনা অভিঘাতের মধ্যেই দেশের অর্থনীতিকে সচল করতে ও রাখতে তিন স্তরের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন।
এই পরিকল্পনার পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কিছু সুপারিশও করেছেন রাজ্য গভর্নরদের প্রতি। আগামি ১৪দিনের পরিসংখ্যাণে কোভিড-১৯ তে আক্রান্তের সংখ্যা কমের দিকেই যাচ্ছে এমনটা দেখানোর পরই তাঁর দেওয়া আর্থিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে বলেছেন। তবে তা অবশ্যই পর্যায়ক্রমে, এও বলেছেন তিনি।
হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা এই মুহূর্তেই সবকিছু খুলে দিচ্ছি না। এরআগে অবশ্য তিনি দেশের অর্থনৈতিক কার্র্যক্রম এক ধাক্কায় খুলে দেওয়ার কথা বলেছিলেন।
এর আগে এই গেল সোমবার মার্কিন এই অধিপতি বেশ দম্ভের সঙ্গেই বলেছিলেন, ‘খুলে দেওয়া কিংবা বন্ধ করা’ এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্ণ ‘কর্তৃত্ব’ তার রয়েছে। তবে এবারে সেই দম্ভের জায়গা থেকে সরে এসে তিনি বললেন, তাঁর এই পরিকল্পনা রাজ্য গভর্নরদের জন্য কোন আদেশ নয়, তাদের কাছে এটা আমার সুপারিশ। তিনি এও বলেছেন, এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষমতা থাকবে অঙ্গরাজ্যগুলোর গভর্নরদের। কেন্দ্রীয় সরকার তাদের সহায়তা করবে।
ট্রাম্পের পরিকল্পনায় কম আক্রান্ত অঙ্গরাজ্যগুলোতে চলতি মাসেই লকডাউন তুলে নেয়ার ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। অন্যান্য অঙ্গরাজ্যের বিধিনিষেধও ধীরে ধীরে তুলে নেয়া হবে।
নিজের কর্তৃত্বপরায়ন অবস্থান থেকে ট্রাম্পের এমন সরে আসার পেছনেও তার দুরভিসন্ধি দেখছেন বিশ্লেষকরা। আসলে তিনি চাইছেন, শেষ পর্যন্ত যদি সবকিছু ঠিকাঠাক মত না চলে তাহলে গভর্নরদের ঘাড়ে দোষ চাপানো যাবে। আর আসছে নির্বাচনে কিছুটা হলেও রাজনৈতিক ফায়দাও নিতে পারবেন তিনি। আসছে নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে আবারও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছে রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট। যদিও করোনা ভাইরাস সংক্রমণের শুরুর দিকটাতে গুরুত্ব না দেওয়ায় বেশ সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে করোনাভাইরাসের ভয়াবহতার মধ্যেই ট্রাম্পের এমন প্রস্তাবনা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। তবে ট্রাম্পের নতুন এ নির্দেশনায় যুক্তরাষ্ট্রের কোভিড-১৯ বিষয়ক টাস্কফোর্সের সমর্থন আছে বলে হোয়াইট হাউসের ব্রিফিংয়ের আগেই এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছিলেন।
ওবামা প্রশাসনের সময় ইবোলা মোকাবেলায় যিনি অগ্রনী ভূমিকা রেখেছেন সেই রন ক্লেইন বলেছেন, ‘এটা কোন পরিকল্পনা নয়।নিছকই ক্ষমতা দেখানো। কারণ এতে করোনাভাইরাস পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো কিংবা সংক্রমণের মাত্রা কমিয়ে আনার বিষয়ে কোন কিছুই বলা হয়নি।’
ডেমোক্রেটিক হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেছেন, দেশকে খুলে দেওয়ার আগে করোনা পরীক্ষা কার্যক্রমে গতি আনাটাই এখনকার প্রধান কাজ। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে হোয়াইট হাউস যেসব্ তথ্য দিচ্ছে তা শুধু অস্পষ্ট ও স্ববিরোধীই নয়, এসবের মাধ্যমে তারা প্রেসিডেন্টের ব্যর্থতাকেই ঢাকতে চাইছে। দ্রুত পরীক্ষার কিট উৎপাদন ও দেশজুড়ে সেগুলো সরবরাহ করতে বিজ্ঞানিরা যে পরামর্শ দিচ্ছেন তার কোনটাই আমলে নেওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন পেলোসি।
সমালোচনা হবে জেনেই ট্রাম্প বলেন, তাঁর এই পরিকল্পনা অন্তত কয়েকটি রাজ্যে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। কারণ এসব রাজ্যে করোনাপ্রতিরোধে যেসব বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল ৩০শে এপ্রিল তার মেয়াদ শেষ হবে। ফলে এসব রাজ্য আগামি শুক্রবার থেকে সবকিছু খুলে দেওয়ার প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ শুরু করতে পারবে। আর এমন রাজ্যের সংখ্যা প্রায় ২৯টি বলেও জানান ট্রাম্প।#
![](https://i0.wp.com/sangbadsaradin.net/wp-content/uploads/2023/02/BBS.jpg?fit=300%2C225&ssl=1)