|| সারাবেলা প্রতিনিধি, লন্ডন ||
যুক্তরাজ্যে পণ্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে টেলিভিশনে কথা বলতে গিয়ে ‘অসাধু’ বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদেরকে হিন্দুত্ববাদীদের রক্তের উত্তরাধিকার বলে অভিহিত করেছেন লন্ডনে চ্যানেল এস এর প্রতিষ্ঠাতা মাহি জলিল। গেল ৩রা মে চ্যানেল এস এ তে ‘‘COVID-19’’ শীর্ষক সরাসরি লন্ডনে ‘অসাধু’ বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের অনৈতিক পণ্যমূল্য বাড়ানো নিয়ে কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক হিসেবে তিনি বলেন, বিলেতে ‘অসাধু’ বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের শরীরে হিন্দুত্ববাদের রক্ত বইছে। এমন কমজাত রক্তের ধারাই বিলেতে কতিপয় বাঙালি ব্যবসায়ীদের এমন অনৈতিক অসাধু কর্মকান্ডে উদ্বুদ্ধ করেছে।
বিদেশে বাঙালিদের নিয়ে তাঁর এমন কুরুচিপূর্ন ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে ব্রিটেনের বাঙালি কমিউনিটি এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তবুও মাহি জলিল তার বক্তব্য থেকে সরে আসেননি। গত ৮ই মে তিনি আবারো একই অনুষ্ঠানে লাইভে এসে দম্ভভরে বলেন, যা বলেছি ঠিক বলেছি। ডু হোয়াট এবার ইউ ক্যান ডু।’
তার এই অবস্থানের পরে প্রতিবাদের ঝড় আরো জোরদার হয়। সেই প্রতিবাদে শামিল হন লন্ডন বারা অফ টাওয়ার হ্যামলেটের নির্বাহী মেয়র জন বিগস, বেথনাল গ্রিন বো আসনের এমপি রোশনারা আলী এবং পপলার লাইম হাউজের এমপি আপসানা বেগম। তাঁরা তাঁদের নিজস্ব ভেরিফাইড ফেইসবুক পেজ থেকে এমন ধর্মীয় রেসিজমের বিরুদ্ধে তাদের শক্ত অবস্থান ঘোষণা করেন।
অবস্থা বেগতিক দেখে একই দিন রাতে এক ভিডিও বার্তায় মাহি জলিল দায়সারা গোছের ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তিনি বলেন আসলে আমি যা বলতে চেয়েছি তার অপব্যাখা হয়েছে। তবুও যদি আপনারা মনে কষ্ট পেয়ে থাকেন তবে নিজেদের সন্তান হিসাবে ক্ষমা করে দেবেন।
তাঁর এই দায়সারা গোছের ক্ষমা প্রার্থনাকে অগ্রহণযোগ্য জানিয়ে চ্যানেল এস থেকে মাহি জলিলকে সরিয়ে দেওয়া এবং টিভি পর্দায় তাকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি করেছেন ‘আ্যলায়েন্স আ্যগেইনস্ট রেইসিজম আ্যন্ড রেলিজিয়াস হেইট্রেড’।
সংগঠনটির আহবায়ক পুস্পিতা গুপ্ত বলেন, গত ১২ই মে মাহি জলিলের অপসারণ দাবি সম্বলিত একটি অভিযোগপত্র চ্যানেল এস কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়েছে। যাতে আগামী ২০শে মে বিকেল ৪ টার মধ্যে চ্যানেল এস থেকে মাহি জলিলেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা না হলে, তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।