হাঁটা-চলা কেন মনকে প্রসন্ন করে?

|| গোবিন্দ শীল ||

বেশ কিছু আধুনিক প্রযুক্তি যেগুলোর পক্ষে অনেক গান গাওয়া হয়েছিল এই বলে যে, এগুলো আমাদেরকে সুখী করবে, সেগুলো ভযংকর কসমিক লেভেলে ব্যর্থ হয়েছে—এই করোনাকালীন সময়ে তা আমরা টের পাচ্ছি। মোবাইল টিপে, গ্যাজেট করে, বাড়িতে স্ত্রী-সন্তানকে সময় দিয়েও আমরা সুখী হতে পারছি না। কত অভিযোগ ছিল আমরা পরস্পরকে সময় দিতে পারলে আরো ভাল হত। বাস্তবে, এখন বেশিরভাগ পরিবারে নানা অশান্তি, অস্বস্তি নেমে এসেছে।

আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যকে দূর্যোগ বলে এখন মেনে নেয়া হচ্ছে। মন ভাল করার জন্য সবচেয়ে জরুরী বিষয় হলো কায়িক পরিশ্রম আর সামনা-সামনি বসে আড্ডা দেয়া। এর কোন বিকল্প নেই । গেজেট বিক্রয় করার জন্য নানা ফন্দি-ফিকির করে কোম্পানিগুলো । এখন তাদের ঠুনকো যুক্তি আমরা বুঝতে পারছি। মোবাইলে বসে কাজ করলে, সামাজিক মাধ্যমে চোখ রাখলে অনেক সময় কর্টিসল হরমোন বেড়ে যায় শরীরে, কারণ আমরা তখন Impulsive, compulsive আচরণ করি। দীর্ঘদিন এই পরিস্থিতি থাকলে মানসিক স্বাস্থ্য ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হতে পারে।

এখন সময় হয়েছে ঘর থেকে বের হবার। ২০ মিনিট হাঁটা-চলা করলেই মন ভাল হয়ে যেতে পারে। হাঁটার সময় শরীর তার জৈব পদ্ধতিকে সচল করে । এসময় সেরেটোনিন, এন্ডরফিন ও অক্সিটসিন নামের হ্যাপি হরমন তৈরী হয়। এগুলো আমাদের মানসিক চাপকে প্রশমন করে।

আড্ডা দেয়ার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে। তবে আড্ডা দিতে হবে ইতিবাচক মানসিকতা-সম্পন্ন মানুষের সাথে। এসময় বিতর্ক, কুতর্ক না করে হাস্য-রসাত্বক, কৌতুক, অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল, প্রকৃতির সাথে মেলবন্ধন তৈরী করতে হবে। আর আকাঙ্খার মাত্রা কমিয়ে আনতে হবে। আমার, আপনার চেয়েও আরো অনেক কষ্টে অনেকে জীবন ধারণ করছেন, সেদিকে নজর দিতে হবে।

আমাদের চারদিকের পরিবেশ, কনিডশনিং, বিশ্বাস-ব্যবস্থা, সাংষ্কৃতিক সীমাবদ্ধতা আমাদের মনকে শাসন করছে। ঐ শাসন থেকে মনকে মুক্ত করার জন্য পাল্টা ব্যবস্থা নিতে হবে। আপনার মন আপনারই থাকুক, সেখানে যেন ঐসব নেতিবাচক কন্ডিশনিং অনুপ্রবেশ না করে, সেই উদ্যোগ নিতে হবে, “এখনই” । থাকতে হবে present moment এ…,অতীতে বা ভবিষ্যতে নয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন