|| সারাবেলা ডেস্ক ||
বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতি ভাইরাস রুখতে এখন পর্যন্ত জনদূরত্ব বা সামাজিক দূরত্বকেই অন্যতম প্রতিষেধক বলে মনে করা হচ্ছে। কেননা এই ভাইরাসটি যারপর নাই ছোঁয়াচে। মানুষে মানুষের সংস্পর্শেই এটি বেশী সংক্রমিত করছে। তাই জনদূরত্ব ছাড়া আর কোন কার্যকর উপায় দেখছে না মানুষ ও রাষ্ট্রগুলো। কিন্তু সবথেকে মুসকিল হচ্ছে মানুষের প্রয়োজন আর এই জনদূরত্বের দুটোকে একসঙ্গে যাওয়নো যে খুবই দূরুহ একটি কাজ। লকডাউন আর বলপ্রয়োগ কোনটাতেই এই জনদূরত্ব মানানো যাচ্ছে না মানুষকে। জন দূরত্ব মানতে ও মানাতে হিমশিম অবস্থা ব্যক্তি পর্যায় থেকে রাষ্ট্র পর্যন্ত।
করোনাভাইরাস প্রতিষেধক তৈরিতে যেমন রাতদিন চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানিরা। ঠিক তেমন মানুষ ও মানুষের সার্বিক কল্যাণ নিয়ে ভাবেন এবং ভাবছনে এমন রাষ্ট্র ও মানুষও বসে নেই এই ভাইরাস থেকে রেহাইয়ের কার্যকর উপায় খুঁজে বের করতে।
মানুষ ও মানুষের সার্বিক কল্যানের লক্ষ্যে সরকার পরিচালনা করছেন এমনি একটি রাজ্য ভারতের কেরালা। ভারত রাষ্ট্রের অংশ হয়েও করোনার শুরু থেকেই নিজের মডেলে মোকাবেলা করে আসছে এই ভাইরাসের সংক্রমণকে। ইতোমধ্যেই সাফল্যও দেখিয়েছে আক্রান্ত ও মৃতের হারের রাশ টেনে ধরবার দিক থেকে। সম্প্রতি জনদূরত্ব বজায় রাখতেও এই রাজ্যের একটি গ্রাম পঞ্চায়েত তার গ্রামের মানুষকে বলেছে ছাতা খুলে পথ চলতে।
সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে জনদূরত্ব রাখা অন্যতম কার্যকর একটি উপায়। এই নীতি মাথায় রেখেই কেরালার আলপ্পুঝা জেলার একটি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ম চালু করেছে, বাইরে বেরোলে ছাতা সঙ্গে রাখতে হবে। তা সে রোদ বা বৃষ্টি যাই থাকুক না কেন।
পঞ্চায়েত নেতারা বলছেন, বাইরে বেরিয়ে ছাতা খুলে রাখলে দু’জনের মধ্যে যে দূরত্ব তৈরি হবে তাতেই এড়ানো যাবে একে অপরের সঙ্গে গা ঘেঁষাঘেঁষি। রাজ্য সরকারও জানিয়েছে, ছাতানীতি কাজে দিলে গোটা রাজ্যেই চালু করা হবে ছাতার ব্যবহার।
আলপ্পুঝার তনীরমুক্কম গ্রাম পঞ্চায়েত শুধু ছাতানীতি চালুই করেননি। সাধারণ মানুষকে কম দামে ছাতা দেওয়ার ব্যবস্থাও নিয়েছে তারা। আলপ্পুঝা কেন্দ্র ( জেলার সদর শহর) থেকেই নির্বাচিত সংসদ সদস্য কেরালার অর্থমন্ত্রী টমাস আইজ্যাক জানাচ্ছেন, ছাতার জন্য আপাতত সরকারি ভর্তুকির ব্যবস্থা থাকবে। রাজ্যে ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (মাকর্সবাদী) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আইজ্যাক বলেন, ‘‘এটা বেশ ভাল ভাবনা! নিয়মটা হল, এক জনের ছাতার সঙ্গে অন্য জনের ছাতার সংস্পর্শ চলবে না। একে অপরকে স্পর্শ না করে দু’টো ছাতা পাশাপাশি খুলে রাখলে দু’জনের মধ্যে এক মিটার ব্যবধান রাখা সম্ভব। এতে দূরত্ব-নীতি বজায় রাখা যাবে।’’