করোনা সময়ে বাইরে বেরতে অন্তত এই নিয়মগুলোতো মানুন

|| যাপিত জীবন ডেস্ক ||

মাস্ক, সাবান স্যানিটাইজার আর জনদূরত্ব এই চার অস্ত্রেই করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়ানোর চেষ্টা চলছে বিশ্বজুড়ে। লকডাউনে হয়তো বাধ্য হয়েই থাকতে হচ্ছে ঘরে। মানছেন করোনা এড়ানোর সব স্বাস্থ্যবিধি। ভাবছেন লকডাউন উঠে গেলে মানতে হবে এসব বিধি। না তা কিন্তু মোটেও ঠিক হবে না। কেননা করোনাকে ঘায়েল করবার মত কোন প্রতিষেধক আমরা কিন্তু এখনো আবিষ্কার করতে পারিনি। আর সহসাও যদি আবিস্কার করাও যায় তা আমাদের হাতের নাগালে আসতে তাও প্রায় বছর খানেক। এমনটাই বলছেন সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাই লকডাউনে থাকাসময়ে যে অভ্যাসগুলো করে নিচ্ছেন যাপিত জীবনে তা জারি রাখুন আগামি দিনেও।

লকডাউন উঠলেও ধীরে ধীরে জীবিকার প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বেরতেই হবে। আর সেক্ষেত্রে তো এমন সাবধানতাগুলো আমাদের মেনে চলতেই হবে। কেননা করোনা এড়াতে ইতোমধ্যেই স্বীকৃত স্বাস্থ্যবিধি না মানলে সংক্রমণ ছড়ানোর ভয় বেশি।

বিষেশজ্ঞরা বলছেন, করোনা ঘায়েলের টিকা না আসা পর্যন্ত এই সব সতর্কতা তো মানতে হবেই, এমনকি, টিকা আসার পরেও এটি দীর্ঘ কাল মেনে চলতে হতে পারে। নিজেদের জন্যে তো বটেই, বাড়ির অন্য সদস্যদের সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করতে কিছু কিছু নিয়ম মেনে চলা খুব জরুরি।

বাড়ি থেকে পেট ভরে খেয়ে বের হোন, কতটা সময় বাইরে থাকতে হবে সেইমত কিছু খাবার সঙ্গে রাখুন। নিয়ম করে আপেল, কলা, লেবু, শসা বা আঙুর খেতে হবে। বাইরের খাবার যতটা এড়ানো যায়, ততই ভাল। বাইরে বেরলে বা বাইরে থেকে বাড়ি ফেরার পর কী কী নিয়ম মেনে চলতে হবে:

  • অফিসে যাওয়ার সময় সঙ্গে নিন ফ্লাক্সে গরম জল। বিশেষজ্ঞদের মতে, বারে বারে অল্প করে গরম জল পান করলে করোনা-সহ যে কোনও ড্রপলেট সংক্রমণ কিছুটা হলেও ঠেকানো যায়।
  • বাইরে বেরনোর সময় মুখে কয়েক কুচি আদা রাখুন। আদার অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রোগ ঠেকাতে সাহায্য করবে।
  • এই সময়ে বাইরে বেরতে হলে ঘড়ি ও আংটি পরবেন না। এতে হাত পরিষ্কার করতে অসুবিধা হয়।
  • বাজার-দোকান করার জন্য বাইরে যেতে হলে মোবাইল ফোন বাড়িতে রেখে যান। যাঁদের অফিস করতে হয়, তাঁরা মোবাইল রাখুন ব্যাগের মধ্যে। পথে খুব দরকার না হলে ফোন বের করবেন না। বিষেশজ্ঞরা বলছেন, মোবাইল থেকেও যে সংক্রমণ ছড়ায়, তা অনেকটাই নিশ্চিত।
  • বাইরে চলাফেরায় এবং অফিসে যতটা পারা যায় জনদূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করুন। আপনার টেবিলের সামনে রাখা অন্যদের বসার চেয়ারগুলোর দূরত্ব আরেকটু বাড়িয়ে নিন।
  • শীত গ্রীস্ম বর্ষায় ছাতা খুলে ব্যাবহার করুন। কারন খোলা ছাতায় যে দূরত্ব থাকে তা আপনাকে অন্যের সংস্পর্শ থেকে দূরে রাখবে।
  • পারলে অন্তত ৭০ শতাংশ মদ মেশানো রয়েছে এমন স্যানিটাইজার দিয়ে বারবার আপনার মোবাইল ফোন, পিসির মাউস, ও ট্যাব ভাল করে মুছে রাখুন। মোবাইলের কভার আলাদা ককে সাবান জলে ডুবিয়ে বা সাবান দিয়ে ঘষে কেচে নিন।
  • গাড়িতে একা যাওয়াই ভাল। পেছনের সিটে বসুন। সম্ভব হলে অফিসে অনুরোধ করুন গাড়িতে যেন নিয়ম করে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়।
  • বার বার সাবান দিয়ে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড হাত ধোওয়ার অভ্যাসটা ধরে রাখুন।
  • নিয়মিত বেরতে হলে দু’টি মাস্ক ব্যাগে রাখুন। মুখে বাঁধা মাস্ক কোনও কারণে নষ্ট হলে বা ভিজে গেলে কাজে লাগবে।
  • বাড়ি ফিরে মাস্ক নিয়মিত কাচতে হবে। অফিসে পৌঁছে হাতদুটো ভালভাবে ধুয়ে নিন। সঙ্গে সাবান ও স্যানিটাইজার রাখতে ভুলবেন না।
  • জুতোর সঙ্গে মোজা পরুন। বাড়ি ফিরে জুতো-মোজা খুলে হাতে নিয়ে সোজা বাথরুমে চলে যান। মিনিট বিশেক গরমপানিতে ভিজিয়ে রাখুন। তারপর সাবান বা ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  • চামড়ার জুতো সাবান দিয়ে ধোওয়া সম্ভব নয়। এমন হলে স্যানিটাইজার দিয়ে মুছে নিন। রোদে শুকাতে পারলে ভাল হয়। তা সম্ভব না হলেও বাড়ির ভেতরের বাতাসে শুকিয়ে নিন।
  • বাজারের ব্যাগ তো বটেই, অফিসের ব্যাগও সাবান জল, কীটনাশক মেশানো জল বা পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট মেশানো জলে তুলো ভিজিয়ে তা দিয়ে মুছে নিতে পারেন। বাজারের ব্যাগ অবশ্যই ডিটারজেন্ট বা সাবানে কেচে নেবেন।
  • সার্জিকাল মাস্ক হলে এক দিন ব্যবহারের পর সেই মাস্ক ফেলে দিন। দোওয়া-কাচা যায় এমন মাস্ক পরলে বাড়ি ফিরে মাস্ক ও যাবতীয় পোশাক সাবান দিয়ে কেচে নিতে হবে।
  • বাড়িতে থাকলেও ঘন ঘন হাত ধুয়ে নিন ও স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।

তবে এই সব নিয়ম শুধুমাত্র যে লকডাউন চলাকালীন মেনে চলতে হবে, তা কিন্তু নয়। এই পরিচ্ছন্নতাকে জীবনের অঙ্গ করে নিতে পারলে সাধারণ জ্বর, সর্দি, গলাব্যথা ও জলবাহিত পেটের অসুখের মতো অনেক সংক্রমণই আটকানো যাবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন