বাড়ির ছাদে ছাগলের খামারে স্বাবলম্বী রোজিনা

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, গাইবান্ধা ||

বাড়ির ছাদে ছাদকৃষি বা বায়োফ্লোক্স নয় এবার গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রোজিনা বেগম (৩০) বাড়ির ছাদে ছাগলের খামার করেছে। ছাদ ছাগলের খামারী রোজিনা বেগমের বাড়ি গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার দুর্গাপুর এলাকায়। তিনি একটি ছাগল দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে ৩৯টি ছাগল রয়েছে তার খামারে। ছাগল পালন করার পরও সব কাজ চলে ছাদেই।

ছাগলের পাশাপাশি একই বাড়িতে হাঁস-মুরগি,কবুতর ও গরু পালন করছেন তিনি। সাত শতকের বসতভিটায় রোজিনার একতলা পাকা বাড়ি। খামারে কর্মসংস্থান হয়েছে দুই নারী শ্রমিকের। রোজিনার স্বামী সাইফুল ইসলাম মালয়েশিয়া প্রবাসী। ১২ বছর ধরে তিনি সেখানে থাকেন। একমাত্র মেয়ে শিখা খাতুন দশম শ্রেণিতে পড়ে।

২০১৬ সালে মেয়ের উপবৃত্তির টাকায় একটি ছাগল ক্রয় করেন। প্রথমবারই ছাগলটি তিনটি বাচ্চা দেয়। এভাবে পাঁচ বছরে তাঁর খামারে ছাগলের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪৭। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ছাগল  বিক্রি করেছেন। এবারের ঈদেও রোজিনা অনলাইনে ৮টি ছাগল ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। বর্তমানে তাঁর খামারে ৩৯টি ছাগল রয়েছে।

রোজিনা  বেগম বলেন , ছাগল পালনে লাভ হওয়ায় তিনি একই বাড়ীতে হাঁস-মুরগি, কবুতর ও গরু পালন শুরু  করেন। বর্তমানে তাঁর বাড়িতে ১৫০টি কবুতর, ২টি গরু, ৫৫টি হাঁস-মুরগি রয়েছে। এসব থেকেও আয় হচ্ছে তাঁর। ছাগল পালনে সাফল্যের জন্য রোজিনা বেগম সেরা ছাগল খামারি হিসেবে পুরস্কারও পেয়েছেন। চলতি বছরের জুনে জেলা প্রাণিস¤পদ বিভাগ থেকে তাঁকে নগদ টাকা ও একটি সনদপত্র দেওয়া হয়। রোজিনা বেগম বলেন, বাড়ির ছাদে কাপড় শুকানো ছাড়া কোনো কাজ হতো না।

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের পরামর্শে  ছাদে তিনি ছাগল পালন করছেন। দিনে খোলা ছাদে ছাগল ঘুরে বেড়ায়। রাতে ছাদের এক পাশে টিনের চালার নিচে রাখা হয় ছাগল। ছাগল খাওয়ানো ও পরিচর্যা চলে ছাদেই। ভবিষ্যতে খামারে ছাগলের সংখ্যা ১শতটিতে উন্নীত করার পরিকল্পনা আছে তাঁর।

 

গাইবান্ধা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মাছুদার রহমান সরকার বলেন, ওই খামারিকে ছাগল পালনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বিনা মূল্যে তাঁর খামারে চিকিৎসাসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। রোজিনার মতো ছাদে ছাগল পালনের জন্য শহরের খামারিদেরও উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

সংবাদ সারাদিন